ট্রাম্পের আয়করের তথ্য পেতে মরিয়া নিউইয়র্ক

ডোনাল্ড ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর সম্পর্কিত তথ্য এখনো অজানা। নানা সময়ে বিষয়টি নিয়ে কথা উঠলেও প্রেসিডেন্ট এখনো এ তথ্য প্রকাশ করেননি। এমন ঘটনা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদধারীর জন্য বিরল। তবে এবার বেশ আটঘাট বেঁধেই নেমেছেন নিউইয়র্কের ডেমোক্র্যাট নেতারা। প্রেসিডেন্টের কর-সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশের জোর দাবি তুলেছেন তাঁরা।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কেন তাঁর করের তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করছেন না তা স্পষ্ট নয়। কর সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ না করে আমেরিকায় আগে কেউ রাজনীতিতে আসতে পেরেছেন কি না, তা নিশ্চিত নয়। তবে এ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন রেখে কেউ আমেরিকার সর্বোচ্চ পদে বসে গেছেন, তা রীতিমতো বিরল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর করের তথ্য প্রকাশ করতে একেবারে নারাজ। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে যে, কী এমন গোপন বিষয় রয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট তাঁর কর-সংক্রান্ত তথ্য বিশ্ববাসীকে জানাতে চান না? গত নির্বাচনের আগ থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প নানা অজুহাতে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। তারপরও আমেরিকার জনগণ তাঁকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছে। সর্বোচ্চ পদে বসার পরও তাঁর অবস্থানের বদল হয়নি।

এবার এ প্রশ্নে নড়েচড়ে বসেছে নিউইয়র্ক। নিউইয়র্কের ডেমোক্রেটিক দলের নেতারা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর-সংক্রান্ত তথ্য অবিলম্বে প্রকাশের দাবি তুলেছেন। এ জন্য প্রয়োজনে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁরা আইনি লড়াইয়ে নামতেও প্রস্তুত। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বসবাস ও তাঁর মূল সাম্রাজ্যের কেন্দ্রস্থল নিউইয়র্ক। স্বাভাবিকভাবে প্রতি বছর তিনি নিউইয়র্কেই কর দাখিল করেন। কিন্তু আইনের জটিলতা থাকায় সেই করের তথ্য ডেমোক্র্যাটরা পাচ্ছেন না। কিন্তু বিষয়টি এভাবে ছেড়ে দিতে নারাজ নিউইয়র্কের ডেমোক্রেটিক দলের নেতারা। ফলে তাঁরা নতুন আইন তৈরি করে হলেও প্রেসিডেন্টকে কর সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশে বাধ্য করতে চাইছেন। আগামী সপ্তাহেই নিউইয়র্কে এমন একটি আইন প্রস্তাব করা হচ্ছে, যেখানে কর ও আর্থিক বিভাগের কমিশনারকে করের তথ্য প্রকাশের পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই বিলে বলা হয়েছে, নিউইয়র্কের ডিপার্টমেন্ট অব ট্যাক্সেশান অ্যান্ড ফাইন্যান্সের কমিশনার ইচ্ছে করলে সবার করের তথ্য প্রকাশ করতে পারবেন। তবে এ জন্য তিনজন কংগ্রেস সদস্যকে যথাযথভাবে তথ্য চেয়ে অনুরোধ করতে হবে।
নিউইয়র্কের রাজনৈতিক অঙ্গনে ডেমোক্র্যাটদের ক্ষমতাই বেশি। সে জন্য এ বিল পাস করতে ডেমোক্র্যাটদের ঘাম ঝরাতে হবে না। নিউইয়র্কের সিনেটর ব্র্যাড হলম্যান নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, ‘এই বিলের মাধ্যমে আমরা জবাবদিহির একটি পথ তৈরির চেষ্টা করছি, যা ফেডারেল পর্যায়ে হোয়াইট হাউস কংগ্রেসের কাজে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে।’
এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী রিচার্ড নিল বলেন, এই চেষ্টা আইনের অপব্যবহার ছাড়া কিছু নয়।
এই বিল সম্পর্কে নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো অবশ্য এখনো নীরব। প্রস্তাবিত আইনটির বিষয়ে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান দলের প্রধান এড কক্স বলেন, ‘এই বিলের উদ্দেশ্য শুধু একজন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁকে কর-সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশে বাধ্য করাই এর উদ্দেশ্য।’
সামনে আবার নির্বাচন আসছে। নিউইয়র্কের ডেমোক্রেটিক দলের নেতারা হয়তো আশা করছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর-সংক্রান্ত তথ্যে এমন কোনো গোপনীয় বিষয় রয়েছে, যা দিয়ে তাকে সহজেই সামনের নির্বাচনে পরাজিত করা যাবে। সামনের নির্বাচনের ফল কেমন হবে বা নিউইয়র্কের ডেমোক্রেটিক দল এ বিষয়ে সফল হবেন কিনা, তা সময়ই বলে দেবে।