'অ্যাসাঞ্জ দূতাবাসকে চরবৃত্তিতে ব্যবহার করছিলেন'

গ্রেপ্তারের পর উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ছবি: রয়টার্স
গ্রেপ্তারের পর উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ছবি: রয়টার্স

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসকে গুপ্তচরবৃত্তির কাজে ব্যবহার করছিলেন বলে অভিযোগ দেশটির। গতকাল রোববার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির এই অভিযোগ এনেছেন ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনো। তাঁর দাবি, লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসকে গুপ্তচরবৃত্তির কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা।

ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্টের ভাষ্য, অ্যাসাঞ্জকে দেওয়া আশ্রয় প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্তে অন্য কোনো দেশের প্রভাব নেই।

আশ্রয়ের শর্ত ভঙ্গ ও নথিপত্রে ত্রুটি থাকার যুক্তি দেখিয়ে গত বুধবার অ্যাসাঞ্জের আশ্রয় প্রত্যাহার করে নেয় ইকুয়েডর। পরদিন বৃহস্পতিবার লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসের মধ্যে ঢুকে অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাজ্য পুলিশ।

অ্যাসাঞ্জ প্রসঙ্গে লেনিন মোরেনো গার্ডিয়ানের কাছে দাবি করেন, অন্য রাষ্ট্রের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য তাঁর দেশের আগের সরকার লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসের ভেতরে সুযোগ করে দিয়েছিল।

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে ইকুয়েডর সরকার যেসব অভিযোগ তুলেছে, তা আগেই নাকচ করেছেন অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী। তিনি এসব অভিযোগকে ‘জঘন্য’ বলে অভিহিত করেছেন।

২০১৭ সালে ইকুয়েডরে ক্ষমতায় আসেন মোরেনো। তাঁর ভাষ্য, স্থিতিশীলতা নষ্টের যেকোনো চেষ্টা তিরস্কারযোগ্য কাজ। কারণ, ইকুয়েডর একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। প্রতিটি দেশের রাজনীতির প্রতি ইকুয়েডর শ্রদ্ধাশীল।

ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা আমাদের ঘরকে (দূতাবাস) গুপ্তচরবৃত্তির একটি কেন্দ্র হতে দিতে পারি না।’

২০১০ সালে লাখ লাখ গোপন মার্কিন নথি ফাঁস করে হইচই ফেলে দেয় উইকিলিকস। এরপর ওই বছরই অস্ট্রেলীয় নাগরিক অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে সুইডেনে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। এতে তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত যুক্তরাষ্ট্র সুযোগ পেয়ে যায়। গ্রেপ্তার এড়াতে ওই বছরের ডিসেম্বরে তিনি যুক্তরাজ্য পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অ্যাসাঞ্জকে সুইডেনের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন যুক্তরাজ্যের একজন বিচারক। কিন্তু অ্যাসাঞ্জের আশঙ্কা ছিল, সুইডেন তাঁকে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের হাতেই তুলে দেবে এবং সেখানে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। এই আশঙ্কা থেকে ২০১২ সালে জামিনে থাকা অবস্থায় লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নেন তিনি। এরপর থেকে গত প্রায় সাত বছর তিনি সেখানেই ছিলেন।

মার্কিন কর্তৃপক্ষের হাতে অ্যাসাঞ্জকে তুলে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ নিয়ে আগামী ২ মে যুক্তরাজ্যের আদালতে শুনানি হবে।