মার্কিন রাজনীতি এখন কেবল কাদা-ছোড়াছুড়ি

ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি
ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি

মার্কিন রাজনীতির একটি অলিখিত নিয়ম ছিল, দেশের বাইরে গিয়ে কেউ নিজ দেশের কারও বিরুদ্ধে নিন্দা করবেন না। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সে নিয়ম আগেই ভঙ্গ করেছেন। জাপান ভ্রমণে গিয়ে আবারও সেই কাজ করলেন। টোকিওতে এক সরকারি সফরে গিয়ে তিনি বলেছেন, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একজন কম বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ, তাঁর আইকিউকম, কোরীয় নেতা কিম জং-উনের এই বক্তব্য তিনি সমর্থন করেন।

ট্রাম্প বলেছেন, ‘জো বাইডেনকে নিয়ে কিম জং যা বলেছেন, তা ইতিহাসের ভিত্তিতেই বলেছেন। তাঁর কথার সঙ্গে আমি একমত।’

ট্রাম্প কীভাবে নিজ দেশের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্টকে নিয়ে বিদেশের একজন একনায়ককে সমর্থন করছেন—এমন এক প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি কারও প্রতি পক্ষপাত করছি না, কিন্তু এ কথা আমি বলব, জো বাইডেন সম্পূর্ণ ব্যর্থ ছিলেন। প্রেসিডেন্ট ওবামার প্রশাসনের অংশ হিসেবে তাঁরা অনেক বিষয়েই সম্পূর্ণ ব্যর্থ হন।’

গতকাল সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় অন্য প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, তিনি বাইডেনের ‘ফ্যান’ বা ভক্ত নন।

এর আগের দিন, অর্থাৎ রোববার এক টুইটে ট্রাম্প জানান, বাইডেনের আইকিউকম, কিম জং-উনের এই কথা শুনে তিনি হেসে ফেলেছেন।

বিদেশের মাটিতে নিজ দেশের রাজনীতিকের প্রতি বিদ্রূপাত্মক মন্তব্যের জন্য অনেকেই ট্রাম্পের সমালোচনা করেছেন। ডেমোক্রেটিক পার্টির কংগ্রেস সদস্য ও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সেথ মৌলটন সিএনএনকে বলেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য প্রমাণ করে, তিনি মোটেই দেশপ্রেমিক নন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ক্রিমিনাল বা অপরাধী এমন লোক প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন, যেমন রিচার্ড নিক্সন। কিন্তু তিনি দেশপ্রেমিক নন, এ কথা কেউ বলবে না।

রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য কিনজিঙ্গার বলেছেন, ট্রাম্প বিদেশের মাটিতে জো বাইডেন সম্বন্ধে যে মন্তব্য করেছেন, তা ঠিক নয়।

গতকাল ছিল মেমোরিয়াল ডে। এই দিন দেশের জন্য যাঁরা আত্মত্যাগ করেছেন, তাঁদের স্মরণ করা হয়। এক টুইটে কিনজিঙ্গার বিস্ময় প্রকাশ করেন, এমন এক দিনে একজন একনায়কের পক্ষ নিয়ে বাইডেনের বিরুদ্ধে কটু কথা বলার পথ বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প।

সাম্প্রতিক সময়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে কথা–চালাচালি ক্রমে প্রকাশ্য কাদা–ছোড়াছুড়িতে পরিণত হয়েছে। গত সপ্তাহে ডেমোক্রেটিক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ট্রাম্পের মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, তাঁকে সামলানোর জন্য পরিবারের ভেতর থেকে কারও উচিত এগিয়ে আসা। উত্তরে ট্রাম্প পেলোসির বুদ্ধিমত্তা নিয়ে প্রশ্ন করেন। নিজেকে একজন অত্যন্ত ধীরমস্তিষ্ক ‘জিনিয়াস’ অভিহিত করে ট্রাম্প বলেন, মেক্সিকো ও কানাডার সঙ্গে যে বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে, তা বোঝার ক্ষমতা পেলোসির নেই।

উত্তরে পেলোসি এক টুইটে মন্তব্য করেন, ‘“ধীরমস্তিষ্ক এই জিনিয়াস” যখন একজন প্রেসিডেন্টের মতো ব্যবহার করা শুরু করবেন, তখন তাঁর সঙ্গে অবকাঠামোসহ অন্যান্য বিষয়ে কথা বলার জন্য আমি প্রস্তুত।’