বাংলাদেশিদের 'সন্ত্রাসী' বলে শ্বেতাঙ্গ যুবকের হুমকি

কানসাস অঙ্গরাজ্যের উচিটা শহরের এক দোকানে ঢুকে রীতিমতো লঙ্কাকাণ্ড ঘটিয়েছেন এক শ্বেতাঙ্গ-বর্ণবাদী যুবক। ২৭ মে দোকানটিতে কর্মরত বাংলাদেশি তরুণদের সন্ত্রাসী বলে আখ্যা দিয়ে ভাঙচুর করতে থাকে ওই যুবক। বিষয়টি স্থানীয় পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় অনিরাপত্তায় ভুগছেন উচিটা শহরের বাংলাদেশি অভিবাসীরা।

উচিটা শহরের উডলন এলাকায় ২৭ মে সকাল ৭টায় আমেরিকান ইগল গ্যাস স্টেশনে এক শ্বেতাঙ্গ যুবক ঢুকে কর্মচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেন। একই সঙ্গে তিনি দোকানের মালামাল ছুড়ে ফেলতে থাকেন। দোকানটিতে কর্মরত বাংলাদেশি যুবকদের সন্ত্রাসী ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে বলে চিৎকার করতে থাকেন ওই যুবক। এ সময় স্টেশনে কর্মরত একজন পুলিশ ডাকার কথা বললে ওই যুবক আরও ক্ষেপে যায়।

ওই দোকানের কর্মী স্বাদ রহমান জানান, ২৭ মে সকাল ৭টায় মাথায় টুপি পরা এক শ্বেতাঙ্গ যুবক দোকানে ‍ঢুকে ক্যাশ কাউন্টারের সামনে এসে জানতে চান, ‘তোমরা কোন দেশি?’ বাংলাদেশি বলার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ক্ষেপে উঠে চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘বাঙালি ও পাকিস্তানিরা সন্ত্রাসী ও আইএসের সদস্য।’ একই যুবক গেল সপ্তাহে একই দোকানে চারবার এসে হুমকি দিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। এ ঘটনায় উচিটা শহরের বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে আমেরিকান ইগল স্টেশনের স্বত্বাধিকারী প্রকৌশলী রুপেন দেব প্রথম আলো উত্তর আমেরিকাকে বলেন, ‘এ যুবক গেল সপ্তাহে চারবার আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে হুমকি দিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে পুলিশকে জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি। পুলিশ এসে শুধু একটি মামলা নম্বর দিয়ে চলে গেছে। বারবার হুমকিতে আমার কর্মচারীরা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।’

২৭ মের এ ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় টিভি চ্যানেল টুয়েলভ এর অডিও-ভিডিও সংগ্রহ করে সরাসরি সম্প্রচার করে। পরে কর্মচারী ও দোকান মালিকের সাক্ষাৎকারও ধারণ করেন চ্যানেলটি।

এদিকে বাংলাদেশ কমিউনিটি নেতা মাহপেরা করিম জানান, কানসাসের উচিটা শহরে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা স্থানীয় কমিউনিটিগুলোর সঙ্গে সদ্ভাব রেখে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছে। পাশাপাশি আমেরিকার অর্থনীতিতে অবদান রেখে যাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের অবহেলা রয়েছে। ২০১৭ সালে ২৬ নভেম্বর বাংলাদেশি এক মেধাবী ছাত্র পিৎজা ডেলিভারি দিতে গিয়ে সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত হয়। এ ব্যাপারে এখনো পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি। বিষয়টি উদ্বেগজনক। সামাজিক নিরাপত্তা চেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে তাঁরা বৈঠক করবেন।