সুবীর কাস্মীর পেরেরার তিনটি কবিতা

জয় হোক মানবতার

অজানা, অচেনা শহর-বন্দর, গ্রাম-গঞ্জে
আমি ও আমরা ছুটে চলেছি
উদাসীন পথে।

প্রান্ত থেকে প্রান্তে
আলো-আঁধারের খেলায় মেতেছি
কখনো হেরেছি, কখনোবা জিতেছি!
কখনোবা আছড়ে পড়েছি দূর সীমানায়।

বাস্তবতার পদতলে দেখেছি-
মানবতার বুকে ক্ষতচিহ্ন,
মহানন্দের যজ্ঞমিলন, আশার দ্বীপশিখা
বেঁচে থাকার বঞ্চনা, কু-শিক্ষার আড়ালে
ভণ্ডামির চরম সীমানা!
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি, হতাশার লাল বোতল,
আর দেখছি-
আলোর মশাল নিয়ে আলোকিত মানুষ;
আলোকিত জীবনের প্রত্যাশায়,
আলোর মিছিলে।

ভাবছি?
কি নেব, কি দেব?
আমাদের সামনে বিশাল প্রান্তর-
এসো চলি, এসো বলি-
‘আলোকিত জীবনে, জয় হোক মানবতার।’

শিকড়

শিকড়ের টানটা বড়ই অদ্ভুত
যতক্ষণ মূলের সাথে সখ্য
ততক্ষণ ভালোবাসার ডালাপালা
বেড়ে চলে সীমাহীন অচিন গাঁয়।
ভালোবাসার বুক চিরে
জল, স্থল কিংবা ভূতলের অতল
গহ্বরে হারায়ে, খুঁজে ফেরে
মূলের মাতৃস্নেহরস।

গুঁই পোকা, উঁইপোকা ও বন্য শুয়োরের
লালসার বস্তু হয়ে বেঁচে থাকার মানে কি?
অর্থ? বিদ্যা? দাসত্ব?
না-কি অতৃপ্ত কামনার আগুনে জ্বলে-পুড়ে
নিজেকে বিবেকের জলে নির্বাসন দেয়া?
জীবনের খোঁজে জীবন
মানুষের খোঁজে মানুষ;
আর,
শিকড়ের টানে শিকড়।
এক নিমেষের ভালোবাসার হিসেব নিকেশের
যোগ ফল।

চাইলেই পাওয়া যাবে
এমন আশার বীজ বপন করে
অঙ্গুরের প্রত্যয় শুঁকে চলি
আপন ঠিকানা;
এখানেই শিকড়ের নিবিড় আস্তানা!

কলমের জন্য কলম

অগণিত কলম সৈনিক নির্ঘুম রাত জেগে জেগে
কলমের ফলায় চাষ করে যাচ্ছে
আমার-আপনার আবাদি জমি।

কখনো দুঃখ, কখনো কষ্ট, কখনোবা
প্রিয়তমার মাধুরী মেশানো ডাক
উপেক্ষিত হয়েছে তাঁর শাণিত কলমে।

দেখ,
আমরা কি স্বার্থপর!
কাবুলীওলাদের মতো আমরা কেবল
রস আস্বাদন করে, ছুড়ে দিয়েছি অবহেলার যাবপাত্রে।
তারপরও দাবি নেই, ক্ষোভ নেই, নেই অভিমান,
ত্যাগের ব্রতে দীক্ষিত এই শব্দ কারিগরদের।

ভগবানের কাছে কি চাইব?
দীর্ঘায়ু কামনা, অর্থ-বিত্ত? যশ-খ্যাতি?
না!
তাঁর চরণে, যজ্ঞ নিবেদন
শতায়ু হোক কলমের তীব্র গতি;
স্তিমিত না হোক আমাদের পথ চলা।