নতুন ইমিগ্রেশন আইনে আশার আলো

প্রায় দুই দশকের টানা চেষ্টায় মার্কিন কংগ্রেসে ইমিগ্রেশন নিয়ে “ড্রিম অ্যান্ড প্রমিজ অ্যাক্ট” নামে একটি আইনের প্রস্তাব পাস হয়েছে। এ প্রস্তাবে অল্প বয়সে আমেরিকায় আসা অভিবাসীদের সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। ডেফার্ড অ্যাকশন চাইল্ডহুড অ্যারাইভাল বা ডাকা প্রোগ্রামের আওতায় কয়েক লাখ অভিবাসীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। টেম্পোরারি প্রোটেকশন প্রোগ্রামের আওতায় যে দেশগুলোর অভিবাসীদের আমেরিকায় অভিবাসনের সুবিধা দেওয়া হয়েছিল তাদেরও এ আইনে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। একপর্যায়ে সিটিজেনশিপ প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে।
আমেরিকার ইমিগ্রেশন নিয়ে নানা টানাপোড়েনের মধ্যেও ২০১৮ সালে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সব চেয়ে বেশি লোকজনকে সিটিজেনশিপ দেওয়া হয়েছে বলে ইমিগ্রেশন বিভাগ জানিয়েছে। ২০১৮ সালে মোট সাত লাখ ৫৬ হাজার ৮০০ বিদেশিকে আমেরিকার সিটিজেনশিপ দেওয়া হয়েছে। যদিও অভিযোগ করা হচ্ছিল, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইমিগ্রেশন নীতির কারণে নাগরিকত্বের আবেদনে দীর্ঘসূত্রতা করা হচ্ছে। ইমিগ্রেশন বিভাগ জানিয়েছে, অতিরিক্ত কাজ করে বিভাগটি উপচে পড়া সিটিজেনশিপের আবেদন সামাল দিয়েছে এবং আবেদনকারীদের ৯০ শতাংশই মঞ্জুর হয়েছে। মার্কিন ইমিগ্রেশন নিয়ে কখন কি হয়—এমন সংশয় থেকেই গত বছর নাগরিকত্বের আবেদন বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। 

৫ জুন ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসে ‘ড্রিম অ্যান্ড প্রমিজ অ্যাক্ট-২০১৯ ‘ আইন প্রস্তাবে আইন প্রণেতাদের ঐক্যের আলামত দেখা গেছে। ডেমোক্র্যাট দলের সব সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। রিপাবলিকান দলের সাতজন প্রতিনিধিও এর পক্ষে ভোট দেওয়ায় আইন প্রস্তাবটি ২৩৭-১৮৭ ভোটে পাস হয়েছে। ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে উদারনৈতিক মহলকে এ আইন নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে। প্রথমবারের মতো রিপাবলিকান দল থেকেও আইন প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট পড়াকে বড় ধরনের সমঝোতার লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আইন প্রস্তাবটি এখন রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সিনেটে যাবে। সিনেটে আইন প্রস্তাবটির ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে অবশ্য নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না। হোয়াইট হাউস থেকে আইন প্রস্তাবটির ওপর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভেটো দেওয়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
হাউস মেজরিটি লিডার স্ট্যানলি হোয়ের সাবেক রিপাবলিকান নেতা ও প্রয়াত প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের বক্তব্য দিয়ে নিজের বক্তব্য শুরু করেন। রিগ্যান বলেছিলেন, আজকের দিনটি বিশ্বের কাছে আমেরিকার উজ্জ্বলতা কী তা দেখিয়ে দিয়েছে। আমেরিকা এমন একটি দেশ যেখানে শরণার্থীরা আশ্রয় পায়, নিরাপদে থাকে, যেখানে তাঁদের জন্য সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়। আমেরিকা ইমিগ্রেশনের কারণেই একটি উৎকৃষ্ট দেশ, বলেছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট রিগ্যান। মেজরিটি লিডার স্ট্যানলি হোয়ের সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা আইন প্রস্তাবটি সিনেটে পাঠাব। প্রস্তাবটি আইনে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্ষান্ত দেব না।’