সৌদিতে ট্রাম্পের ৮০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি আটকা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের কাছে কোটি কোটি ডলার অস্ত্র বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ট্রাম্পের সেই উদ্যোগ আটকে দিয়েছে মার্কিন সিনেট। এই ইস্যুতে সিনেটে ভোটাভুটি হয়েছে।

গত মাসে কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে ট্রাম্প ৮০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তির উদ্যোগ নেন। যুক্তি ছিল, ইরান সৌদি আরবের জন্য হুমকি। তাই নিরাপত্তা রক্ষায় অস্ত্র বিক্রি জরুরি। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার রিপাবলিক নেতৃত্বাধীন সিনেট এই অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে তিনটি প্রস্তাব পাস করেছে। ট্রাম্প যদিও এতে ভেটো দেবেন বলে জানিয়েছেন।

ডেমোক্র্যাট–নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদ অস্ত্র বিক্রি আটকাতে ভোট দিতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের ভেটো উপেক্ষা করার মতো প্রয়োজনীয় ভোট কংগ্রেসের নেই।

চুক্তি অনুসারে, সৌদি আরব ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জর্ডানে অস্ত্র বিক্রি হতে পারে।

ট্রাম্প গত মাসে কংগ্রেসকে উপেক্ষা করে অস্ত্র বিক্রির জন্য চুক্তির উদ্যোগ নেন। ট্রাম্পের যুক্তি ছিল, ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার কারণে অস্ত্র বিক্রি করা খুবই জরুরি। তবে বিরোধীদের আশঙ্কা, এই অস্ত্র ইয়েমেনের নাগরিকদের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনী ব্যবহার করতে পারে।

সিনেটে অস্ত্র বিক্রি নিয়ে ভোটের মাত্র কয়েক ঘণ্টা হরমুজ প্রণালিতে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর ড্রোন ভূপাতিত করেছে বলে দেশটি অভিযোগ করেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভয় আরও বাড়তে পারে। ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তি দিতে পারে যে মধ্যপ্রাচ্যে তাদের বন্ধুদেশগুলোর এসব অস্ত্র প্রয়োজন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অস্ত্র বিক্রির চুক্তিতে সিনেটের উদ্যোগে ভেটো দেবেন বলে জানিয়েছেন। ট্রাম্পের ভেটো উপেক্ষা করার মতো যথেষ্ট ভোট আইনপ্রণেতাদের হাতে নেই। তবে আইনপ্রণেতারা চুক্তি আটকাতে আইনি ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবেন। কারণ, আইনপ্রণেতাদের আশঙ্কা, মার্কিন প্রশাসন তাঁদের পাশ কাটিয়ে ইরানে সেনা অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

গত বছরের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যায় এবং ইয়েমেনে চালানো সহিংসতায় সৌদি আরবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস সদস্যরা। গত বুধবার জাতিসংঘ বলেছে, খাসোগি হত্যায় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার যথেষ্ট প্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে।

রিপাবলিক সিনেটর জিম রিচ বলেছেন, অস্ত্র বিক্রির উদ্যোগ আটকে দিয়ে ইরানের হামলার মনোভাবকে উসকে দেওয়া হলো। তবে ডেমোক্র্যাট সিনেটর রবার্ট মেনেনদেজ বলেন, এই ভোটে প্রমাণ হলো, কংগ্রেসকে অবহেলা করা যাবে না।

ট্রাম্পকে বেশির ভাগ সময় সমর্থন দেন রিপাবলিক সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম। তিনি অস্ত্র বিক্রির চুক্তি আটকাতে ভোট দিয়েছেন। ভোটের আগে দেওয়া এক বক্তব্যে গ্রাহাম বলেন, ‘সৌদি আরবের সঙ্গে আমার সম্পর্ক চিরদিনের মতো বদলে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের জন্য আমার ভোট দেওয়ার কারণ হলো, আমি তাদের বোঝাতে চাই যে তোমরা যেভাবে কাজ করছ, তাতে তোমাদের সঙ্গে আমাদের কৌশলগত সম্পর্কের কোনো জায়গা নেই।’