যুক্তরাষ্ট্রের 'খ্যাপাটে' প্রার্থী

জন ম্যাকাফি
জন ম্যাকাফি

গত শতকের আশির দশকে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার বিক্রি করে শতকোটিপতির ঘরে নাম লেখান যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শীর্ষ ধনী জন ম্যাকাফি (৭৩)। তিনি ২০২০ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে আর দশজন প্রযুক্তি কোম্পানির মালিকের মতো সোজা-সরল জীবন কাটাননি তিনি। একদিকে ডলারের বন্যা বয়ে গেছে তাঁর জীবনে, আরেক দিকে জীবনকে তিনি চড়িয়েছেন চড়াই-উতরাইয়ের নাগরদোলায়। যুক্তরাষ্ট্রে কর ফাঁকির মামলায় পালিয়ে ম্যাকাফি একসময় আশ্রয় নিয়েছিলেন মধ্য আমেরিকার দেশ বেলিজে। সেখানে প্রতিবেশীকে খুনের ও মাদক মামলায় ফেঁসে পালান বাহামায়। সেখানেও এফবিআইয়ের তাড়া খেয়ে তিনি যান কিউবায়। ম্যাকাফি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে যেহেতু শিগগিরই ফিরতে পারছেন না, তাই এবার কিউবা থেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন তিনি। 

বর্তমান বিশ্বে ‘ক্রিপ্টোকারেন্সি গুরু’ বলা হয় যে ম্যাকাফিকে, সেই তিনিই এবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্তরসূরি হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প ও তাঁর মধ্যে মিল—দুজনই কোটিপতি ব্যবসায়ী, বয়স্ক, প্রার্থী হওয়ার আগে রাজনীতি করেননি, দুজনের জীবনই নানা ট্যাবলয়েড ম্যাগাজিনের গুঞ্জন ও স্ক্যান্ডালে ভরা এবং দুজনই বিতর্কিত কথা বলতে ওস্তাদ। তবে বৈচিত্র্য ও ঝঞ্ঝাটপূর্ণ জীবনের দিক থেকে ম্যাকাফি যোজন যোজন ছাড়িয়ে গেছেন ট্রাম্পকে।

ম্যাকাফি গত বৃহস্পতিবার হাভানার মারিনা হেমিংওয়ে পোতাশ্রয়ে তাঁর প্রমোদতরি থেকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি লিবার্টারিয়ান পার্টি থেকে মনোনয়ন চাইবেন। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও লিবার্টারিয়ান পার্টির মনোনয়ন চেয়েছিলেন ম্যাকাফি। তবে সেবার তিনি তৃতীয় হন। ম্যাকাফি বলেন, তিনি আদপে প্রেসিডেন্ট হতে চান না। তিনি জানেন, প্রেসিডেন্ট হতে হয়তো পারবেনও না।

ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে দৈনিক ২ হাজার ডলার পকেটে আসে ম্যাকাফির। টুইটারে তাঁর ১০ লাখ অনুসারীই বলে দেয়, লোকটা নেহাত ‘খ্যাপাটে’ নন। মহাকাশ সংস্থা নাসার প্রকৌশলী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা ম্যাকাফির নিজের নামে প্রতিষ্ঠিত ম্যাকাফি অ্যান্টিভাইরাস গত শতকে বড় অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। ২০১০ সালে কোম্পানিটি তিনি ইন্টেলের কাছে বিক্রি করে দেন। এরপর গড়ে তোলেন ক্রিপ্টোকারেন্সি কোম্পানি ‘টিম ম্যাকাফি’। ম্যাকাফি বলেন, তিনি মার্কিন সরকারকে আট বছর থেকে কোনো কর দেন না। কর দেওয়াকে ‘অসাংবিধানিক’ ও ‘অবৈধ’ বলে দাবি করেন এই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী।