ক্যালিফোর্নিয়ায় 'এনকাউন্টারে' কিশোরী নিহত হওয়া নিয়ে প্রশ্ন

নিহত কিশোরী হান্নাহ উইলিয়ামস। ছবি: এএফপি
নিহত কিশোরী হান্নাহ উইলিয়ামস। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় এক পুলিশ কর্মকর্তার গুলিতে নিহত কিশোরীর পরিবার মেয়ের হত্যা মামলায় নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে এই আবেদন জানায় তারা।

১৭ বছর বয়সী কিশোরীর নাম হান্নাহ উইলিয়ামস। লস অ্যাঞ্জেলসের দক্ষিণে আনাহেইম শহরে তার বাড়ি। গত শুক্রবার বাড়ির কাছেই ফুলারটনের এক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে ‘এনকাউন্টারে’ মারা যায় হান্নাহ। পুলিশ কর্তৃপক্ষ এই মামলা বা এনকাউন্টারের ব্যাপারে বিস্তারিত কোনো তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে হান্নাহর লাশের পাশ থেকে বেরেটা ৯২এফএসের আদলে তৈরি একটি রেপ্লিকা হ্যান্ডগান উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

অরেঞ্জ কাউন্টি এলাকার অ্যাটর্নির কার্যালয় সূত্র জানায়, কর্তব্যরত ওই পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর কে-৯ জাতের কুকুরের চিকিৎসার জন্য পশু চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছিলেন। পুলিশের গাড়িতে করেই যাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় হাইওয়েতে তীব্র গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিল হান্নাহ। পথিমধ্যে দুটি গাড়ির সংঘর্ষ হয়।

হান্নাহর পরিবারের মুখপাত্র রেভারেন্ড জেরেট মাউপিন জোর দিয়ে বলেন, হান্নাহর কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত রেপ্লিকা বন্দুকের মালিক কে, তা নিয়েও সংশয়ে রয়েছে কিশোরীর পরিবার। তিনি জানান, দুর্ঘটনার সময় ভাড়া করা গাড়ি চালাচ্ছিল হান্নাহ। বিভিন্ন সময় অন্যরাও ওই গাড়ি চালাত বলে উল্লেখ করেন জেরেট মাউপিন।

নিরস্ত্র হান্নাহ কীভাবে এনকাউন্টারে মারা গেল, তা জানতে গতকাল মঙ্গলবার আনাহেইম সিটি হলে জড়ো হয় হান্নাহর পরিবার। সেখানেই স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানায় তারা।

হান্নাহর পরিবার এক বিবৃতিতে জানায়, জনগণ জানতে চায়, সেদিন ঠিক কী ঘটেছিল। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতে পুলিশ কর্মকর্তা আইনি নীতি এবং প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেছেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে হান্নাহর পরিবার। পুরো ব্যাপার খতিয়ে দেখতে অ্যাটর্নির কার্যালয়ের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে তারা। এই মামলায় মধ্যস্থতা করতে তারা নাগরিক অধিকারকর্মী রেভারেন্ড আল শার্পটনের সহায়তা চেয়েছে।

কিশোরীর বাবা বেনসন উইলিয়ামস বলেন, ‘আনাহেইমে সেদিন ঠিক কী ঘটেছিল, তা জানতে রেভারেন্ড শার্পটনের সাহায্য চাই আমরা। আমরা জানতে চাই, কেন ওই পুলিশ কর্মকর্তার মনে হয়েছিল ১৭ বছরের মেয়েটাকে গুলি করা প্রয়োজন, কেন নিরস্ত্র একটি বাচ্চাকে মেরে ফেলা হলো।’

পরিবারের দাবি, ৫ জুলাই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পর থেকে পত্রিকাগুলো যেভাবে এই ঘটনাকে তুলে ধরছে, মেয়ে হারানোর চেয়েও তা বেশি দুঃখজনক। হান্নাহর মা বলেন, ‘হান্নাহর সঙ্গে কী ঘটেছিল, এখনো আমরা তা জানি না। পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতি বহুবার পরিবর্তিত হয়েছে।’

অরেঞ্জ কাউন্টি এলাকার অ্যাটর্নির কার্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আনাহেইম পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে তদন্ত চালাচ্ছে তারা।