সমুদ্র এলাকা সুরক্ষায় সামরিক জোট চায় যুক্তরাষ্ট্র

ইরান ও ইয়েমেনের চারপাশের সমুদ্র এলাকা সুরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র একটি আন্তর্জাতিক সামরিক জোট তৈরি করতে চায়। ছবি: রয়টার্স
ইরান ও ইয়েমেনের চারপাশের সমুদ্র এলাকা সুরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র একটি আন্তর্জাতিক সামরিক জোট তৈরি করতে চায়। ছবি: রয়টার্স

ইরান ও ইয়েমেনের চারপাশের সমুদ্র এলাকা সুরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র একটি আন্তর্জাতিক সামরিক জোট তৈরি করতে চায়। একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

নৌবাহিনীর জেনারেল জোসেফ ডানফোর্ড বলেন, প্রেসিডেন্ট এই অঞ্চলে নৌ চলাচলের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চান, এই অঞ্চলেই প্রয়োজনীয় বাণিজ্য পথ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে ওই সব দেশের সঙ্গে আলোচনা করছে, যাদের এই পরিকল্পনা সমর্থন করার রাজনৈতিক ইচ্ছা আছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ ক্ষমতায় সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সরাসরি কাজ করবে। প্রতিটি দেশকে এই উদ্যোগ সমর্থন করতে হবে।

জেনারেল বলেন, ‘এই উদ্যোগের আকার নির্ভর করছে কতগুলো দেশ এতে সমর্থন দেবে, তার ওপর। যদি অল্পসংখ্যক সমর্থন পায়, তবে আমাদের জোট ছোট হবে।’

গত মাসে ওমান উপসাগরে ঢোকার মুখে দুটি তেলবাহী ট্যাংকারের ওপর হামলার ঘটনায় ইরানের ওপর দোষ চাপায় যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের ওই অভিযোগ পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরান। ট্যাংকার দুটির একটি মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী ফ্রন্ট অ্যালটেয়ার, অন্যটি পানামার পতাকাবাহী কোকুকা কারেজিয়াস। ফ্রন্ট অ্যালটেয়ার নরওয়ের মালিকানাধীন আর কোকুকা জাপানের মালিকানাধীন ট্যাংকার। বিস্ফোরণের পর দুই ট্যাংকার থেকে ৪৪ জন ক্রুকে উদ্ধার করে ইরানি কর্তৃপক্ষ। এরপরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দুই দেশের নৌসীমান্ত রাজনীতি।

হরমুজ প্রণালি ও বাব এল-মান্দেব বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দুটি সমুদ্রপথ। মধ্যপ্রাচ্য থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় তেল রপ্তানি করা হয় হরমুজ প্রণালির মাধ্যমে। হরমুজ প্রণালির একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র কয়েকটি আরব দেশ রয়েছে। হরমুজ প্রণালির অন্য পাশে রয়েছে ইরান। হরমুজ প্রণালির সবচেয়ে সংকীর্ণ যে অংশ, সেখানে ইরান ও ওমানের দূরত্ব মাত্র ২১ মাইল। এই প্রণালিতে জাহাজ চলাচলের জন্য দুটো লেন রয়েছে এবং প্রতিটি লেন দুই মাইল প্রশস্ত। তবে জ্বালানি তেলবাহী পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাহাজ চলাচল করার জন্য হরমুজ প্রণালি যথেষ্ট গভীর এবং চওড়া। পৃথিবীতে যে পরিমাণ জ্বালানি তেল রপ্তানি হয়, তার পাঁচ ভাগের এক ভাগ হরমুজ প্রণালি দিয়ে যায়। এই প্রণালি দিয়ে প্রতিদিন ১ কোটি ৯০ লাখ ব্যারেল তেল রপ্তানি হয়।

অন্যদিকে, প্রতিদিন প্রায় ৪০ লাখ ব্যারেল তেল বাব-এল মান্দেবের মাধ্যমে সারা বিশ্বে চলে যায়। ইয়েমেন, জিবুতি ও ইরিত্রিয়ার মাঝখানের বাব এল-মান্দেব হলো মার্কিন সরকারি তালিকার গুরুত্বপূর্ণ তেল সঞ্চালনকেন্দ্রের একটি। বাব এল-মান্দেবের জলপথ বন্ধ হয়ে গেলে একদিকে পারস্য উপসাগর থেকে আসা তেলবাহী জাহাজগুলোকে অনেক ঘুরপথে যেতে হবে, তেলের পাইপলাইনে সরবরাহ ব্যাহত হবে। ভূমধ্যসাগরের সঙ্গে ভারত মহাসাগরের কৌশলগত সংযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।