নিউইয়র্কসহ ৯ শহরে অবৈধ অভিবাসীবিরোধী অভিযান শুরু কাল

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের প্রত্যাশায় সীমান্ত এলাকায় ভিড়। ছবি: রয়টার্স
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের প্রত্যাশায় সীমান্ত এলাকায় ভিড়। ছবি: রয়টার্স

কাল রোববার থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নয়টি শহরে বৈধ কাগজপত্রবিহীন অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সূত্র উদ্ধৃত করে এ কথা জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস। শহরগুলো হচ্ছে নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো, হিউস্টন, আটলান্টা, বাল্টিমোর, ডেনভার, মায়ামি ও সান ফ্রান্সিসকো।

অভিবাসী অধিকার নিয়ে কাজ করে—এমন একাধিক আইনজীবী ও মানবাধিকার সংস্থা ভীত না হয়ে প্রত্যেক অভিবাসীকে তাঁদের অধিকার সম্বন্ধে সচেতন হতে পরামর্শ দিয়েছে।

গতকাল শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, রোববার থেকেই এই অভিযান শুরু হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এদের ধরে যার যার দেশে ফেরত পাঠানো হবে। আর অপরাধী হলে তাদের জেলে ঢোকানো হবে। আমরা দুষ্ট লোকদের খুঁজছি। তবে আমরা সেসব লোকজনকে খুঁজছি, যারা আমাদের সীমান্ত অতিক্রম করে ঢুকে পড়েছে, আর ফেরত যায়নি।’

জানা গেছে, যেসব অভিবাসীর অব্যাহত অবস্থানের বিরুদ্ধে আদালত ইতিমধ্যে চূড়ান্ত রায় দিয়ে ফেলেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এই অভিযান শুরু হয়েছে। আদালত থেকে রায় প্রকাশিত হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নিজের দেশে না ফিরে গেলে মার্কিন আইনে তা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।

আইস নামে পরিচিত অভিবাসন পুলিশের এই অভিযানের খবর ইতিমধ্যে অভিবাসীদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করেছে। দুই সপ্তাহ আগে নিউইয়র্কে একজন সুপরিচিত বাংলাদেশি লেখককে জোরপূর্বক দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় স্থানীয় বাঙালিদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।

ধারণা করা হচ্ছে, প্রাথমিকভাবে বৈধ কাগজপত্রবিহীন দুই হাজারের মতো অভিবাসীকে জোরপূর্বক দেশে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এঁদের সবার ব্যাপারেই আদালত চূড়ান্ত রায় দিয়ে ফেলেছেন। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, আইস অভিযানের সময় ধারেকাছে থাকা তালিকাভুক্ত নন—এমন অন্য অভিবাসীদের অনেকে বহিষ্কারের শিকার হতে পারেন।

আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন পরামর্শ দিয়েছে, আইসের কোনো প্রতিনিধি গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে দরজায় আঘাত করলে তা না খুলতে। কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা না থাকলে তারা কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারে না। জোর করে ঢোকার কোনো অধিকারও তাদের নেই। তারা পরামর্শ দিয়েছে, দরজার ফাঁক দিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখাতে বলুন। যেকোনো অবস্থায় চুপ থাকারও পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। কারণ, ‘আপনি যা–ই বলবেন, তা আপনার বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হতে পারে।’

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হলেও কেউ যেন কোনো কাগজপত্রে স্বাক্ষর না করেন এবং অবিলম্বে একজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার দাবি জানান। তবে জোর করে গ্রেপ্তার করলে তা প্রতিরোধ না করার পরামর্শ দিয়েছে তারা।

নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন শহরে সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন ও অন্যান্য অভিবাসন অধিকার সংস্থা সব অভিবাসীকে বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ দেওয়ার কথা জানিয়েছে।