নিউইয়র্কে আইসকে সহযোগিতা নয়: মেয়র

অবৈধ অভিবাসীদের আমেরিকা থেকে বিতাড়নের লক্ষ্যে ১৪ জুলাই রোববার থেকে ধরপাকড় শুরু হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের এমন প্রচারণায় অভিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সপ্তাহান্তের দিনটি এমনিতেই ফাঁকা থাকে। দক্ষিণ আমেরিকান অভিবাসীরা এই দিনটিতেও কাজের সন্ধানে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন। রোববার সকালে ব্রুকলিন থেকে কুইন্স ঘুরে দেখা গেছে, আতঙ্কের মধ্যে চলাফেরা করছেন অনেকেই। একজন অন্যজনের কাছ থেকে খোঁজ নিচ্ছেন, কোথায় রেইড বা তল্লাশি শুরু হয়েছে। ইমিগ্রেশন এজেন্টরা ম্যানহাটনের হারলেম এলাকায় হানা দিয়েছে, এমন খবর চাউর হলেও সরেজমিনে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি। দক্ষিণ আমেরিকান বৈধ অভিবাসীরাও অহেতুক হয়রানি এড়াতে সঙ্গে পাসপোর্ট নিয়ে ঘোরাফেরা করছেন।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, অবৈধদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে আদালতের ডিপোর্টেশন বা বহিষ্কারের আদেশ আছে তাদের ধরে নিজ দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এ দেশে অবস্থান করা যেসব অবৈধ অভিবাসীর বিপক্ষে ক্রিমিনাল বা ফৌজদারি অভিযোগ আছে তাদের এখানকার অথবা নিজ দেশের জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। নিউইয়র্কসহ ১০ বৃহৎ নগরের কর্তৃপক্ষ তাদের সিটিতে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপে সহযোগিতা না করার ঘোষণা দিয়েছে।

মেয়র বিল ডি ব্লাজিও তো বলেই দিয়েছেন, ‘আমরা শুধু অসহযোগিতাই নয়, আমরা এটা প্রতিরোধ করব। গ্রেপ্তার কীভাবে এড়ানো যায়, আমরা আমাদের নগরবাসীদের সেই পরামর্শ দেব।’ তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের লক্ষ একটা ভীতি সৃষ্টির কৌশল হিসেবে এই পদক্ষেপ নিয়েছে।’

হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, ‘ইমিগ্রেশনদের ডিপোর্টেশনের ওয়ারেন্ট সার্চ ওয়ারেন্টের মতো নয় যে, আনুগত্য না করলে জোর করে প্রয়োগ করতে পারবে।’ সুতরাং ইমিগ্রেশন এজেন্ট দরজায় নক্ করলে না খোলার পরামর্শ দিয়েছেন পেলোসি। তিনিসহ ডেমোক্র্যাট অনেক নেতাই তাই বলেছেন।

সিটি কাউন্সিল স্পিকার করী জনসন ও মেয়র অফিসের ইমিগ্রেশন অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক কমিশনার বিট্টা মস্তফি সংশ্লিষ্ট সবাইকে ইমিগ্রেশন এজেন্টদের অভিযানকে প্রতিহত করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, ‘দুষ্ট ও বর্ণবাদী এই প্রশাসনের কাছে নিজেকে দুর্বল ভাববেন না।’

স্পিকার জনসন অবৈধ ইমিগ্রান্টদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, ইমিগ্রেশন এজেন্টদের সামনে নীরব থাকুন এবং সার্চের অনুমতি দেবেন না।

কমিশনার মস্তফি বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, নির্ধারিত সময়ের দুই দিন আগে থেকেই এই রেইড শুরু করে দিয়েছে ইমিগ্রেশন। সিটির সানসেট পার্কে দুইটি ও ইষ্ট হারলেমে একটি তল্লাশির ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের কাছে রিপোর্ট এসেছে। তিনটি জায়গাই সৌভাগ্যক্রমে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইস এজেন্টরা।

নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন পোস্টে নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন স্ট্রিটে, সাবওয়েতে আইস এজেন্টদের দেখা গেছে। এমনকি কোন কোন পোস্টে পথচারীদের আইডি চেক করতেও নাকি দেখা গেছে আইস এজেন্টদের। বিভিন্ন অভিবাসী গ্রুপের ফেসবুক পেজে এমন ছবি দিয়ে আইসের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ আনা হয়েছে।