ইঁদুরের এইচআইভি নির্মূলে সফলতা

ছবি: রয়টার্স
ছবি: রয়টার্স

ইঁদুরের ডিএনএ থেকে এইচআইভি ভাইরাস সরাতে পেরেছেন বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা। এ সফলতা মানুষের ক্ষেত্রে এইচআইভি দূর করার প্রাথমিক পদক্ষেপ হতে পারে বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা। গত শুক্রবার দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে এইচআইভি বিষয়ে গবেষণার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। টেম্পল ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব নেব্রাস্কা মেডিকেল সেন্টারের ৩০ জনের বেশি বিশেষজ্ঞ এই গবেষণা করেছেন। গবেষণায় বলা হয়, সিআরআইএসপিআর (সমজাতীয় ডিএনএ ক্রম) উপকরণের সঙ্গে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ মিশিয়ে এই ফল পাওয়া গেছে, যা জিনকে প্রভাবিত করতে পারে। গবেষকেরা ২৩টি ইঁদুরের মধ্যে ৯টি থেকে এইচআইভি নিরাময় করতে পেরেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওই গবেষক দলের জ্যেষ্ঠ গবেষক কামেল খালিলি বলেন, খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগ কর্তৃপক্ষ) যদি অনুমোদন দেয়, তবে আগামী বছরের শুরুর দিকে জিন সংযোজন উপকরণের জন্য ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হতে পারে। তিনি ও অন্যান্য এইচআইভি বিশেষজ্ঞের করা ইঁদুরের ওপর গবেষণার প্রাপ্ত ফল কীভাবে মানুষের ক্ষেত্রে সাফল্য আনতে পারে, সে বিষয়ে তাঁরা জোর দিয়েছেন।

খালিলি বলেছেন, ‘আমরা জানতাম কী করতে হবে। কিন্তু তখন প্রযুক্তি ছিল না। তিনি ও তাঁর দল সিআরআইএসপিআরের মতো টুলের অপেক্ষায় ছিলেন। জিন সম্পাদনা বাস্তবে চলে আসায় এর ফল দারুণ হতে পারে।’

এর আগে খালিলির দল মাঝারি ও ছোট আকৃতি ইঁদুর থেকে এইচআইভি ডিএনএর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ নিরাময় করতে উপায় খুঁজে পেয়েছিল। তবে তখন পুরোপুরি সংক্রমণ দূর করার উপায় ছিল না। পরবর্তী সময়ে এই সমস্যা দূর করতে খালিলির দল ভিন্ন প্রক্রিয়া শুরু করে। এরপর বিজ্ঞানীদের মিলিত প্রচেষ্টায় ওষুধের সঙ্গে জিন সংযোজন কৌশল এ সাফল্য এনে দিল।

এইচআইভির ওপর ব্যাপক কাজের অভিজ্ঞতা আছে সানফ্রান্সিসকোর ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার অধ্যাপক স্টিভেন ডেকসের। তিনি বলেন, জিন সংযোজনের ব্যবহার প্রাণিদেহ থেকে এইচআইভি নির্মূল করে। এ বিষয়ে এটি একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্যমতে, বিশ্বজুড়ে এইচআইভি–সংক্রমিত মানুষ রয়েছে ৩ কোটি ৭০ লাখ। এর মধ্যে মাত্র প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ অ্যান্টিরিট্রভাইরাল থেরাপি নেয়। আর এইচআইভি–সংক্রান্ত সমস্যায় ২০১৭ সালে বিশ্বে প্রায় ১০ লাখ মানুষ মারা যায়।