কংগ্রেসে বুধবার সাক্ষ্য দেবেন ম্যুলার

রবার্ট ম্যুলার। ছবি: রয়টার্স
রবার্ট ম্যুলার। ছবি: রয়টার্স

বিস্তর বাদ-বিবাদ ও টানাহেঁচড়ার পর বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট ম্যুলার মার্কিন কংগ্রেসের সামনে হাজির হচ্ছেন। ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ ও বিচারপ্রক্রিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাধা দেওয়া প্রশ্নে সাক্ষ্য দেবেন তিনি।

কাল বুধবার কংগ্রেসের বিচার বিভাগীয় কমিটি ও গোয়েন্দাবিষয়ক কমিটির সামনে ম্যুলার মোট পাঁচ ঘণ্টার পরপর দুটি প্রশ্নোত্তরে অংশ নেবেন।

বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের আশা, ট্রাম্প যে ম্যুলারের তদন্তে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বিচারপ্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করেছেন, সেই সত্য এই সাক্ষ্যের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে আসবে।

অন্যদিকে, রিপাবলিকানদের ধারণা, ম্যুলার তাঁর বক্তব্যে নতুন কিছুই বলবেন না। ফলে, ম্যুলারের বক্তব্য ব্যবহার করে ট্রাম্পকে অভিশংসনের যে আশা ডেমোক্র্যাটরা করছেন, তা ব্যর্থ হবে।

গতকাল সোমবার একাধিক টুইটে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজের আত্মবিশ্বাসের কথা প্রকাশ করেছেন। তাঁর ভাষ্য, তিনি যে সম্পূর্ণ নিরপরাধ, ম্যুলারের সাক্ষ্য থেকে তা চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হবে।

ট্রাম্পের দাবি, ম্যুলারকে এই সাক্ষ্য প্রদানের সুযোগই দেওয়া উচিত নয়। এই সাক্ষ্য ম্যুলার ও ডেমোক্র্যাট উভয় পক্ষের জন্যই ক্ষতিকর হবে।

বড় অক্ষরের টুইটে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ‘কোনো আঁতাত নেই। বিচারপ্রক্রিয়ায় কোনো বাধা নেই।’

ম্যুলার তাঁর সাড়ে ৪০০ পাতার প্রতিবেদনে রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্প ক্যাম্পেইনের কোনো আঁতাত রয়েছে—এ কথা প্রমাণ করতে পারেননি।

তবে বিচারপ্রক্রিয়ায় বাধা প্রসঙ্গে ম্যুলার ১০টি উদাহরণ দিয়েছেন। বলেছেন, এ অভিযোগ থেকে ট্রাম্পকে দায়মুক্ত করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। তবে এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া তাঁর কাজ নয়। এ কাজ কংগ্রেসের।

ট্রাম্পকে অপরাধ থেকে দায়মুক্ত করতে পারেননি—ম্যুলারের মুখ থেকে এ কথাটাই শুনতে চান ডেমোক্র্যাটরা।

টেলিভিশনের পর্দায় বারবার এ কথা ম্যুলারকে দিয়ে বলানো গেলে জনমত প্রভাবিত করতে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

হোয়াইট হাউস এ বিপদ সম্পর্কে সচেতন। গতকাল ফক্স নিউজের ফাঁস করা এক খবর থেকে জানা যায়, বিচার বিভাগ এক চিঠিতে ম্যুলারকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে ইতিমধ্যে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বাইরে কোনো কথা তিনি বলতে পারবেন না। বিশেষত অভিযুক্ত হয়নি—এমন কারও বিষয়ে কিছুই বলা যাবে না।

বিচার বিভাগের এই কথার অর্থ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করে কোনো নতুন তথ্য ম্যুলার দিতে পারবেন না। বিচার বিভাগের ভাষায়, এর সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘নির্বাহী অধিকার’ যুক্ত।

ট্রাম্প প্রথমে বলেছিলেন, তিনি টিভিতে ম্যুলারের সাক্ষ্য দেখবেন না। তবে গতকাল এ কথা শুধরে জানিয়েছেন, অল্প সময় তিনি টিভি খুলে দেখবেন ম্যুলার কী বলছেন।

ট্রাম্পের এ কথা হেসে উড়িয়ে দিয়ে একজন রিপাবলিকান কৌশলবিদ বলেছেন, ম্যুলারের সাক্ষ্যের পুরো সময়ই টিভির সঙ্গে আঠার মতো সেঁটে থাকবেন ট্রাম্প।