'ক্রিস্পার বিপ্লবে' আছে বাংলাদেশও

প্রাণীর ডিএনএ (DNA) কাটাছেঁড়া করতে বিজ্ঞানীদের মধ্যে ক্রিস্পার (CRISPR) একটি অত্যাধুনিক ও অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রযুক্তি। প্রায় সাত বছর আগে এটি নতুন একটি জিন সম্পাদনা-প্রযুক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। সেই থেকে এই প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে আমেরিকা, চীন এবং এশিয়া ও ইউরোপের উন্নত দেশগুলো চিকিৎসা, কৃষি, শিল্প ও জীববিজ্ঞানের প্রযুক্তিগত নতুন নতুন আবিষ্কারে মত্ত হয়েছে। এটিই CRISPR Revolution বা ‘ক্রিসস্পার বিপ্লব’ নামে পরিচিতি পেয়েছে।
আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অফ সায়েন্সের বিজ্ঞান সাপ্তাহিক ‘সায়েন্স’-এর ২ আগস্ট সংখ্যায় এ সংক্রান্ত তথ্যবহুল এক সংবাদের দ্বিতীয় চিত্রের প্রথমাংশে আমার দৃষ্টি আটকে গেল! মাত্র ২৮টি দেশের সঙ্গে ‘বাংলাদেশ’ নামটি দেখে আমার দুর্বল হৃদপিণ্ডটি প্রবলভাবে নেচে উঠল!
ক্রিস্পার প্রযুক্তি প্রয়োগে নতুন কিছু আবিষ্কার করে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই দেশগুলো ২০০০ পেটেন্ট বা মেধাস্বত্ব স্বীকৃতির জন্য দরখাস্ত করেছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ থাইল্যান্ডের নাম থাকলেও দক্ষিণ এশিয়ার আর কোনো দেশের নাম এতে নেই। মেধাস্বত্ব পাক বা না–পাক, বাংলাদেশ যে এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তিটি ইতিমধ্যেই নিজস্ব প্রয়োজনে কাজে লাগাচ্ছে, আমার কাছে সেটিই উৎসাহব্যঞ্জক মনে হয়েছে।
প্রকাশিত এই সংবাদ থেকে বাংলাদেশের কোনো গবেষণাগার বা কোনো বিজ্ঞানী বা বিজ্ঞানী দল কী আবিষ্কার করেছেন—তা জানার উপায় নেই। নাম না–জানা সেই বিজ্ঞানী বা বিজ্ঞানী দলকে সালাম, কৃতজ্ঞতা, ও সাধুবাদ জানাই।
বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা এবার ক্রিস্পার প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং আরও অনেকে দুরারোগ্য ভাইরাস বহনকারী এডিস ইজিপ্টাই মশার বংশ বিস্তাররোধে আত্মনিয়োগের কথা চিন্তা করতে পারেন। অবশ্য এ জন্য সরকারের দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক ও অন্যান্য সাহায্যের প্রকাশ থাকতে হবে। ২০১৫ সালে নিউইয়র্কের রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ক্রিস্পার প্রযুক্তিতে এই মশার জিনোমে পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছিলেন।