মশা থেকে বাঁচুন

মশার উপদ্রব নিউইয়র্কেও দেখা দিয়েছে। মশাবাহিত রোগ নিয়ে বাংলাদেশসহ নানা দেশের সংবাদ এখানকার নাগরিকদেরও আতঙ্কিত করে তুলেছে। মশা মানবজাতির জন্য ভয়ংকর হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মশার কামড়ে বিভিন্ন রোগ ছড়ায় এবং এতে মৃত্যুর হার একেবারেই নগণ্য নয়।
কোনো মশার নমুনায় যদি ইইই ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায় তা সবার স্বাস্থ্যের সম্ভাব্য ঝুঁকি তৈরি করে। এ কারণে সাফক কাউন্টি হেলথ সার্ভিসেসের কমিশনার জেমস টমরকান নিউইয়র্ক স্টেট হেলথ ডিপার্টমেন্টকে কাউন্টির জনস্বাস্থ্যের জন্য আসন্ন বিপদের ঘোষণা দিতে অনুরোধ করেছেন।
এই জাতীয় সমস্যায় কাউন্টিকে মশার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। সাফক কাউন্টি গণপূর্ত বিভাগ মনোরভিল এবং কালভারটন এলাকায় মশার বংশবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের জন্য সপ্তাহান্তের সকাল সাতটা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত হেলিকপ্টারের সাহায্যে মশার ওষুধ ছড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
ইস্টার্ন ইকুইন এনসেফালাইটিস মানুষের জন্য একটি মারাত্মক রোগ। শুধু মানুষ না ঘোড়ার জন্যও এই রোগটি উদ্বেগের বিষয়। যদিও ঘোড়ার জন্য একটি ভ্যাকসিন পাওয়া যায়। ইইই এবং উয়েস্টনাইল এ দুটি ভাইরাস সংক্রামিত হয় মশার কামড় দ্বারা। আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থা গুরুতর হলে সে ক্ষেত্রে, ওই ব্যক্তি এনসেফালাইটিস বা মস্তিষ্কের ফোলাভাব অনুভব করতে পারে। এমনকি এর কারণে মৃত্যু হতে পারে। এতে মৃত্যুর হার প্রায় ৩৩ শতাংশ।
আমেরিকার রিপোর্ট করা ভাইরাসগুলোর মধ্যে ইইই এর জন্য কোনো ভ্যাকসিন নেই । রোগীদের সহায়ক যত্ন দিয়ে চিকিৎসা করা হয়।
সাফক কাউন্টি হেলথ সার্ভিস নাগরিকদের বাড়ির আশপাশের জমে থাকা স্থায়ী পানি অপসারণ করে মশার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। কাউন্টিতে ইইই ভাইরাসের সন্ধান পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, জনসাধারণকে আরও বেশি সচেতন হওয়ার পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। বিশেষত যারা মানোরভিল অঞ্চলে থাকেন বা ভিজিট করেন।
৫০ বছর বা তার ঊর্ধ্বে বয়স এমন মানুষজনকে, বিশেষ করে যাদের ইমিউন সিস্টেম ভালো না তাঁদের মশার কামড় থেকে নিজেদের নিরাপদে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সবাইকে আরও কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জরুরি না হলে সন্ধ্যা ও ভোরের মধ্যে আউটডোরের সব কাজ সেরে ফেলতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে দেওয়া পরামর্শে বলা হয়েছে, জুতা এবং মোজা, লম্বা প্যান্ট ও লম্বা হাতা শার্ট পরিধান করুন। যত্ন সহকারে লেবেল নির্দেশাবলি অনুসরণ করে মশা নিরোধক ব্যবহার করুন। নিশ্চিত হয়ে নিন যে বাড়ির সব উইন্ডো এবং দরজা বন্ধ আছে কি না। বাড়ির ভেতরে এবং বাইরে কোথাও যেন মশা ডিম পাড়তে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখুন। সপ্তাহে একবার খালি এবং স্ক্র্যাব, ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে, কভার করুন বা জল রাখে এমন পাত্রে ফেলে দিন। যেমন ফুলদানি, ফেলে দেওয়া টায়ার, বালতি, পুলের কভার, বার্ড ব্যাথস, ট্র্যাশ ক্যান এবং বৃষ্টির ব্যারেলে জমে থাকা আবর্জনা মশার বংশ বৃদ্ধির এলাকা হিসেবে পরিচিত। আমাদের সচেতনতার মাধ্যমে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি কমাতে পারি আমরাই।