ওয়াশিংটনে বর্ণমালা স্কুলের বাংলা উৎসব

বাংলা উৎসবে সংগীত পরিবেশন করছে বর্ণমালা স্কুলের খুদে শিক্ষার্থীরা
বাংলা উৎসবে সংগীত পরিবেশন করছে বর্ণমালা স্কুলের খুদে শিক্ষার্থীরা

আমেরিকায় প্রবাসী বাঙালি শিশু-কিশোরদের মাঝে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরার প্রয়াসে ‘বাংলা উৎসব ২০১৯’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৭ সেপ্টেম্বর ভার্জিনিয়ার আলেক্সান্দ্রিয়ায় অবস্থিত হোমস মিডল স্কুলে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান বর্ণমালা স্কুল এই বাংলা উৎসবের আয়োজন করে। ওয়াশিংটন ডিসি-বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর (রাজনৈতিক) মোহাম্মদ শাহ আলম এই উৎসবের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, বর্ণমালা স্কুলের প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে বাংলাদেশ দূতাবাস সব ধরনের সহযোগিতা করে আসছে। প্রবাসী শিশুদের জন্য বাংলাদেশের ভাষা ও কৃষ্টি নিয়ে কাজ করে যাওয়ার জন্য বর্ণমালা স্কুলকে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে বর্ণমালা স্কুলের প্রেসিডেন্ট নাজনীন আখতার বলেন, দেশ, দেশের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি নতুন প্রজন্মের কোমলমতি শিশুদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। সেই লক্ষ্য পূরণে আপনাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করে যেতে চাই।
উদ্বোধনী পর্বে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ থেকে আসা বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি ছায়ানটের বিভাগীয় প্রধান (উচ্চাঙ্গ) অনুপ বড়ুয়া, বর্ণমালা স্কুলের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মোশারফ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক রোহিতোষ মণ্ডল, ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারহানা আক্তার প্রমুখ।
এর আগে বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। বাংলা উৎসবে ভার্জিনিয়ার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন অংশ নিয়েছিল। বাংলাদেশ থেকে আসা শিল্পী এস আই টুটুল, বিটিভির এস এ রুবি, চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ কৃষ্ণা তিথিসহ স্থানীয় শিল্পী ও বর্ণমালা স্কুলের খুদে শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে বিকেল পাঁচটা রাত ১২টা পর্যন্ত বাংলা উৎসবের হলরুম হাজারো প্রবাসীদের উপস্থিতিতে ছিল পরিপূর্ণ।
নাজনীন আখতারের চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় এবং বর্ণমালা স্কুলের শিশুদের অভিনয় ও নৃত্য নিয়ে ছিল বাংলাদেশের নৃ-গোষ্ঠীদের জীবনকথা নিয়ে গীতিনৃত্য ‘নৃ-গোষ্ঠীদের ইতিকথা’। বর্ণমালার শিশুদের নিয়ে সমবেত সংগীত ‘বর্ণমালা থিম সং’ পরিবেশনায় ছিল বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসা, পিউলি, নিঝুম, রায়ান ও শ্রাবণীর একক গান ছিল বাংলা উৎসবের প্রাণের ছোঁয়া। কলকাতা থেকে আসা তা-থৈ, ম্যারিল্যান্ডের নৃত্য প্রতিষ্ঠান ‘সৃষ্টি নৃত্যাঙ্গন’ এর পরিবেশনা ছিল এক অন্যরকম ভালোবাসার অনুভূতি।
বাংলা উৎসবের সমাপনী পর্বে ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রধান রোকেয়া হায়দার বলেন, আজকে বর্ণমালা স্কুলের ৪০ জন শিশু অত্যন্ত প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে বিভিন্ন পর্বে প্রবাসীদের মাঝে বাংলাদেশকে তুলে ধরেছে। ভয়েস অব আমেরিকা সব সময় এই কোমলমতি শিশুদের নিয়ে এগিয়ে যাবে।
বর্ণমালা স্কুলের প্রধান উপদেষ্টা ও ডেটা গ্রুপের প্রেসিডেন্ট জাকির হোসাইনের সার্বিক সহযোগিতা ছাড়াও অনুষ্ঠানে আরও যারা সহযোগিতা করেছিলেন তাঁরা হলেন—বাংলা উৎসবের টাইটেল স্পনসর সুফিয়া ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ইভেন্ট স্পনসর জি আই রাসেল, গ্র্যান্ড স্পনসর তৌফিক মতিন, সঞ্জিত সাহা ও নিজাম উদ্দিন।
সাউন্ড সিস্টেমে ছিলেন শিশির, লাইটিং ও মঞ্চ সজ্জায় উৎপল সাহা। বাংলা উৎসবের উপস্থাপনায় ছিলেন বাংলা ভিশনের সংবাদ পাঠক আইরিন তানি, বর্ণমালা স্কুলের মিউজিক ডিরেক্টর স্বর্ণালি, এডুকেশন ডিরেক্টর সাবিনা ও নাঈম রহমান।
বাংলা উৎসবের আলোকচিত্র ও ভিডিওগ্রাফিতে ছিলেন বর্ণমালার প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া ডিরেক্টর দেওয়ান বিপ্লব এবং শৌখিন ফটোগ্রাফার শামীমা আক্তার ও ইন্তেখাব সিদ্দিকী।
বাংলা উৎসবের সহযোগী সংগঠন হিসেবে ছিল বন্ধন অ্যাসোসিয়েশন, একাত্তর ফাউন্ডেশন ও আমরা বাঙালি ফাউন্ডেশন। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল ওয়াশিংটন বাংলা, ওয়াশিংটন সংবাদ ও ডিসি বাংলা ডট কম।