মুক্তিযোদ্ধা মুক্তাদিরের চেতনা হারাতে দেব না

মুক্তাদির স্মৃতি কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা
মুক্তাদির স্মৃতি কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা

মুক্তিযোদ্ধা ম আ মুক্তাদির স্মরণে আয়োজিত সভায় বক্তারা বলেছেন, যে জাতি বীরের মর্যাদা দিতে জানে না, সে জাতির মধ্যে বীর জন্মায় না। আর তাদের জীবনদর্শন আলোচনার মাধ্যমে দেশ ও জাতির জন্য নিবেদিত প্রাণ দেশপ্রেমিক নাগরিক গড়ে তুলতে হবে।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে মুক্তাদিরের মতো আজকাল ত্যাগের মনোবৃত্তি নিয়ে কেউ রাজনীতি করে না। দেখে মনে হচ্ছে, সবাই ভোগের জন্য, অর্থ প্রতিপত্তির জন্য রাজনীতি করেন। এই ভোগের মন-মানসিকতা থেকে রাজনীতিকদের বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা ম আ মুক্তাদিরের মতো মানুষদের চেতনা হারিয়ে যেতে দেব না।
মুক্তিযোদ্ধা মুক্তাদিরের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ম আ মুক্তাদির স্মৃতি কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত আলোচনা সভা ও সংগঠনের আজীবন সদস্যদের সনদপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশ প্লাজা মিলনায়তনে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রবীণ প্রগতিশীল রাজনীতিবিধ, কলামিস্ট, মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত বিশ্বাস। সভায় স্বাগত বক্তৃতা করেন স্মৃতি কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি শাহাব উদ্দীন। সভা পরিচালনা করেন গাজী শামসউদ্দিন ও দেওয়ান শাহেদ চৌধুরী।
সভার শুরুতে মরহুমের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন তোফাজ্জুল করিম, অ্যাডভোকেট শেখ আখতারুল ইসলাম, বাংলা পত্রিকার সম্পাদক ও টাইম টেলিভিশনের সিইও আবু তাহের, ফখরুল আলম, এমাদ চৌধুরী, শাহীন আজমল, আবদুল কাদির, মঈনুল হক চৌধুরী হেলাল, মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, নূরে আলম জিকু, মোহাম্মদ আবদুর রহিম, আবুল কালাম আযাদ, মোশারফ খান, অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান, এমাদ চৌধুরী, ইয়ামীন রশীদ প্রমুখ। শাহাব উদ্দীন বলেন, ব্যক্তিগত জীবনে ম আ মুক্তাদির মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, ক্রীড়াবিদ, সাংবাদিক, লেখক ছাড়াও বহু গুনে গুণান্বিত ছিলেন। আর সব গুণাবলির আলোচনা ও মূল্যায়ন করার জন্যই গঠিত হয়েছে সাধারণ প্লাটফর্ম বীর মুক্তিযোদ্ধা ম আ মুক্তাদির স্মৃতি কল্যাণ ট্রাস্ট। এই ধারাকে বেগবান করা গেলে ম আ মুক্তাদিরের আত্মার প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করা হবে।
আজীবন বিপ্লবী এই মুক্তিযোদ্ধা ১৯৯৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর লন্ডনে মারা যান। দেশে তার মরদেহ যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করার পর খুবই অবহেলায় দীর্ঘ ২৮ বছর চলে যায়। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে তারই দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা শাহাবউদ্দিনের উদ্যোগে কবর চিহ্নিত করণসহ বিভিন্ন কাজ করা হয়। ড. মইনুল ইসলাম, লোকমান আহমদ, এমাদ উদ্দিন, শহীদুল ইসলাম শাহীন, মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল হক, আবদুল মান্নান, শাব্বীর আহমদ, মহসিন আলীসহ এক ঝাঁক সতীর্থ নিয়ে তাঁর নামে স্মৃতি কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এই সমাজসেবামূলক কাজের আয়োজন করা হয়। মূল উদ্দেশ্য হলো একজন মুক্তিযোদ্ধা ও আজীবন বিপ্লবী এভাবে হারিয়ে যেতে পারে না।