প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্ক এসে পৌঁছেছেন

দলের এক নেতাকে মারধরের মামলায় নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী ও তাঁর ভাই আবু সাঈদ চৌধুরীকে আটক করে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত
দলের এক নেতাকে মারধরের মামলায় নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী ও তাঁর ভাই আবু সাঈদ চৌধুরীকে আটক করে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪ তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার নিউইয়র্ক এসে পৌঁছেছেন। স্থানীয় সময় ২২ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে চারটায় তিনি জেএফকে বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। এ সময় বিএনপির কিছু সমর্থকদের সেখানে প্রতিবাদ করতেও দেখা যায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে আসার কয়েক ঘণ্টা আগে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী ও তাঁর ভাই আবু সাঈদ চৌধুরী ওরফে কুটি চৌধুরীকে রোববার ভোর রাত আড়াইটায় পুলিশ আটক করে। এক সপ্তাহ আগে দলের এক নেতাকে মারধরের মামলায় তাঁদের আটক করা হয়। আটকের কয়েক ঘণ্টা পর আদালতে হাজিরার শর্তে তাঁদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্টুরেন্টে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা ওয়ালি হোসেনকে (৪৪) মারধরের ঘটনা ঘটে। হামলায় ওয়ালি হোসেন মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান। দুদিন তাঁকে হাসপাতালে থাকতে হয়। এ ঘটনায় ইমদাদ চৌধুরী ও তাঁর ভাই আবু সাঈদ চৌধুরীকে আটক করে পুলিশ। একই ঘটনায় আরও তিনজনকে খুঁজছে পুলিশ।

জেএফকে বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান। ছবি: সংগৃহীত
জেএফকে বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান। ছবি: সংগৃহীত

ওয়ালি হোসেনের ভাষ্য, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দাবি ওঠার পরই একশ্রেণির লোক পদ-পদবির টোপ দিয়ে নগদ অর্থ আদায় করছেন। এ নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তিনি। ওই স্ট্যাটাসের জের ধরেই তাঁর ওপর হামলা হয়।

আটকের সময় রাত আড়াইটায় এমদাদ চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগের অনেকেই জ্যাকসন হাইটসের রাস্তায় ছিলেন বলে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে নানা কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে নিজ নিজ গ্রুপের শো-ডাউন নিয়ে তাঁরা সলাপরামর্শ করছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক হাজি এনাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন সবাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর নিয়ে ব্যস্ত। দলীয় ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য দলের কোনো নেতা-কর্মী লিপ্ত থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রধানমন্ত্রী তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে ম্যানহাটনের একটি হোটেলে অবস্থান করছেন। ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি ভাষণ দেবেন। এর পরদিন স্থানীয় সময় শনিবার বেলা ১১টায় নিউইয়র্কের বাংলাদেশ মিশনে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী গণমাধ্যমের কর্মীদের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেবেন। ওই দিন দুপুরে টাইমস স্কয়ার-সংলগ্ন ম্যারিয়ট মার্কাস হোটেলের বলরুমে প্রধানমন্ত্রী তাঁর জন্য আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন।

একাধিক নেতা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দাবিসহ নানা কারণে নেতাদের মধ্যে বিবাদ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিউইয়র্ক সফর সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধ আরও বড় আকার ধারণ করে। দলের নেতাদের নিজ নিজ গ্রুপের শো-ডাউন নিয়ে চলছে নানা প্রস্তুতি। ব্রুকলিন থেকে জ্যাকসন হাইটস জেগে আছে রাতভর। সম্মেলন হবে, নাকি কমিটি পুনর্গঠন হবে—এ নিয়ে চলছে নানা আলোচন।