৩২ ঘণ্টা ৯০ অতিথিকে একাই সামলালেন তিনি

হোমউড সুইটস নামের এই হোটেলের কর্মী স্মিথ ৩২ ঘণ্টা একাই অতিথিদের সামলান। ছবি: হোটেলের ওয়েবসাইট থেকে
হোমউড সুইটস নামের এই হোটেলের কর্মী স্মিথ ৩২ ঘণ্টা একাই অতিথিদের সামলান। ছবি: হোটেলের ওয়েবসাইট থেকে

অন্য দিনের মতোই বেলা তিনটার শিফটে হোটেলে পৌঁছান ২১ বছর বয়সী স্যাচেল স্মিথ। বাবা তাঁকে নামিয়ে দিয়ে যান। স্মিথ যখন হোটেলে ঢোকেন, তখন আগের শিফটের কর্মীরা সবাই চলে গেছেন, পরের শিফটের কর্মীরা তখনো এসে পৌঁছাননি। রাত ১১টা পর্যন্ত স্মিথের ডিউটি। তবে দিনটি যে অন্য দিনের মতো হবে না, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি। 

সেদিন প্রচণ্ড ঝড় ও ভারী বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। বাইরে বের হওয়ার কোনো উপায় ছিল না। ওই সময় হোটেলটিতে ছিলেন ৯০ জন অতিথি। আর কর্মী বলতে স্মিথ একা। এই দীর্ঘ সময় একাই তাঁকে সামলাতে হয় হোটেল। ঘটনাটি ঘটেছে স্থানীয় সময় গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের বিউমন্ট শহরে হোমউড সুইটস নামের একটি হোটেলে।

আজ সোমবার সিএনএনের খবরে বলা হয়, বৃষ্টির পানিতে হোটেলে আটকে পড়েন অতিথিরা। ৩২ ঘণ্টা সেই অতিথিদের একাই সেবা দিতে হয়েছে স্মিথকে।

স্যাচেল স্মিথের ছবিটি গত বৃহস্পতিবার ফেসবুকে পোস্ট করেন হোটেলের অতিথি অ্যাঙ্গেলা চান্ডলের।
স্যাচেল স্মিথের ছবিটি গত বৃহস্পতিবার ফেসবুকে পোস্ট করেন হোটেলের অতিথি অ্যাঙ্গেলা চান্ডলের।

দেড় দিন ধরে শুধু স্মিথের কাছ থেকে সেবা পাওয়া অতিথিদের ভাষায়, স্মিথ হিরো। অতিথিদের অনেকে ফেসবুকে স্মিথকে নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তেমন একজন অতিথি অ্যাঙ্গেলা চান্ডলের। স্মিথের প্রশংসা করে লেখা তাঁর স্ট্যাটাসটি ১৩ হাজারের বেশি শেয়ার হয়েছে। অ্যাঙ্গেলা লিখেছেন, যখন সহকর্মীরা পানির কারণে আটকে পড়ে হোটেলে পৌঁছাতে পারেননি, তখন স্মিথ একাই সেবা দিয়েছেন অতিথিদের। তিনি লিখেছেন, ‘স্মিথ সব ফোন ধরেছেন, আমাদের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন, আমাদের নিশ্চিত করেছেন যে গরম চা-কফি আছে, গরম খাবার পরিবেশনেও সাহায্য করেছেন। পুরো পরিস্থিতি তিনি সামলেছেন হাসিমুখে।’

স্মিথ জানান, তিনি ফ্রন্ট ডেস্কে বসেন। তবে ওই ৩২ ঘণ্টা তাঁকে সবকিছু করতে হয়েছে। চার শিফটে কাজ করতে হয়েছে। শেফের কাজ, পরিচ্ছন্নতার কাজ, রুম সার্ভিসসহ সবকিছু। যদিও এসব কাজে তাঁর সেই রকম কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। তিনি বলেন, ‘আমি কখনো রান্নাঘরে কাজ করিনি। আমি ভালো রাঁধতে জানি না।’

এরপরও তিনি রান্না করেছেন। একজন অতিথি তাঁকে সকালের নাশতা তৈরিতে সাহায্য করেছেন। আর কয়েকজন অতিথি সাহায্য করেছেন রাতের খাবার তৈরিতে। যদিও খাবার ছিল সাধারণ, গার্লিক রুটির সঙ্গে মুরগির পাস্তা। তবে স্মিথ খুবই অবাক হয়েছেন যে রান্না ভালোই হয়েছে। অতিথিরা বেশ খুশি ছিলেন এবং বারবার তাঁকে ধন্যবাদ দিচ্ছিলেন।

স্মিথ বলেন, ‘অতিথিরা খুবই সহযোগিতাপূর্ণ ছিলেন। মনে হচ্ছিল, যেন আমরা একটি বড় পরিবার।’

শুক্রবার সকালে হোটেলের অন্য কর্মীরা আসার পর বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ পান স্মিথ।