স্বাস্থ্যবিমা কিনতে না পারলে গ্রিনকার্ড নয়

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেকটা নীরবেই আমেরিকায় বৈধ ইমিগ্রেশন বা অভিবাসন ব্যবস্থাকে কঠিন করছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের ৪ অক্টোবর জারি করা আদেশটি আগামী ৩ নভেম্বর থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে, যাতে বলা আছে স্বাস্থ্যবিমা নেই বা স্বাস্থ্যবিমা ক্রয় করতে যারা পারবে না, তারা আমেরিকায় গ্রিনকার্ড নিয়ে আসতে পারবে না। মাইগ্র্যান্ট পলিসি ইনস্টিটিউটের মতে, শুধু এই আদেশের কারণেই বছরে তিন লাখ পঁচাত্তর হাজার বৈধ ইমিগ্রান্ট বা অভিবাসী আমেরিকায় প্রবেশ করতে পারবে না। মূলত চেইন ইমিগ্রেশন ও ডিভি ভিসায় এখনো নানা দেশ থেকে যেসব অভিবাসী আসছে, তাদের ঠেকাতেই নানা উপায় আবিষ্কার করছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইমিগ্রান্টবিরোধী তাঁর উপদেষ্টা স্টিফেন মিলারের পরামর্শে একের পর এক সিদ্ধান্ত আসছে। কংগ্রেস এ ক্ষেত্রে কিছুই করছে না। ইমিগ্রান্টদের বন্ধু হিসেবে পরিচিত ডেমোক্র্যাটদের রাজনৈতিক তোড়জোড়ে ইমিগ্রান্টদের সমস্যা নিয়ে কথা বলার তেমন কেউ নেই। নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলোর ব্যর্থ চিৎকারে ইমিগ্রান্টদের জন্য সহনীয় কিছুই আর হচ্ছে না ট্রাম্পের আমেরিকায়।

নতুন নির্দেশনায় গ্রিনকার্ড পাওয়ার জন্য ইমিগ্রান্টকে কনস্যুলেট অফিসেই প্রমাণ করতে হবে, আমেরিকায় পৌঁছার ৩০ দিনের মধ্যে স্বাস্থ্যবিমা ক্রয় করার জন্য তার অর্থনৈতিক সামর্থ্য আছে কি না। এ নির্দেশনা কীভাবে কার্যকর হয়, তা দেখার পর বিস্তারিত জানা যাবে। কনস্যুলেট অফিসে ভিসা কর্মকর্তাকে এ ক্ষেত্রে আবেদনকারীর অবস্থা মূল্যায়নের জন্য বিরাট ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ কী নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে , তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।
স্বাস্থ্যবিমা সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্তের কারণে গত তিন বছরে আমেরিকায় আসা অধিকাংশ লোকজনেরই ইমিগ্রেশন না হওয়ার কথা। মাইগ্র্যান্ট ইনস্টিটিউটের তথ্য মতে, নতুন গ্রিনকার্ড প্রাপ্ত ৩৪ শতাংশ ইমিগ্রান্টদেরই স্বাস্থ্যবিমা নেই। নতুন এ আদেশের ফলে যে বা যারা পারিবারিক ইমিগ্রেশনের জন্য আবেদন করছেন, তাদের ওপর চাপ পড়বে। এমনিতেই ফাইন্যান্সিয়াল সাপোর্টের জন্য চাপ ছিলই, এখন তা আরও বৃদ্ধি পাবে। অনেকেই নিজের আর্থিক অবস্থায় স্বাস্থ্যবিমা কেনার সামর্থ্য প্রমাণ করতে পারবে না।
এর আগে জারি করা পাবলিক চার্জ আদেশ কার্যকর হওয়ার কথা ১৫ অক্টোবর থেকে। নিম্ন আয়ের আমেরিকানদের আত্মীয়স্বজনের ইমিগ্রেশন তখন থেকেই কঠিন হয়ে পড়বে। ফুড স্ট্যাম্প, মেডিকেইড, আবাসন সহযোগিতাসহ অন্তত ২০টি নতুন বিষয় এখন ভিসা বিবেচনার জন্য যুক্ত হচ্ছে। এর ফলে ট্রাম্প প্রশাসন বছরে আরও অন্তত চার লাখ বৈধ ইমিগ্রান্টকে আটকাতে সক্ষম হবে বলে মনে করা হচ্ছে।