আমার সকল দুঃখের প্রদীপ

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

সেদিন স্বাভাবিক কৌতূহল নিয়েই আমাদের কমিউনিটি স্কুলে গেলাম। জানতে চাইলাম, মে মাসে অর্থাৎ, বছর শেষ হতে মাত্র এক মাস আগে তারা আমার কন্যাকে স্কুলে ভর্তি করবে কিনা। জানলাম, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ স্কুলে গেলে তক্ষুনি মেয়ে ভর্তি হতে পারবে। মহানন্দে নাচতে নাচতে বাড়ি ফিরলাম। আমার প্রতিবেশী ও বন্ধু বলেছিলেন, স্কুলে এই বছর আর ভর্তি হতে পারবে না। সেপ্টেম্বর অবধি অপেক্ষা করতে হবে। গোঁয়ারগোবিন্দ এই আমার তো যাচাই না করে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা ধাতে নেই! ভাবছিলাম, এত লম্বা সময়, কী করবে আমার মেয়েটা সঙ্গীবিহীন এই বিদেশে? স্কুলে গেলে এই নতুন পরিবেশে ধীরে ধীরে অভিযোজিত হওয়ার সক্ষমতা কিছুটা হলেও বাড়বে ওর।

কথানুযায়ী পরের দিনই কন্যার নির্ধারিত শ্রেণিতে ভর্তির কাজ সম্পন্ন হলো। কন্যার পূর্বতন স্কুলের রিপোর্ট কার্ড ছাড়াও মেডিকেল ইনফরমেশন এখানকার স্কুলে ভর্তির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং দেশ থেকে আনা ডাক্তারদের যাবতীয় রিপোর্টের বস্তাসমেত হাজির হলাম স্কুলে। ওরা দেখলেন নেড়েচেড়ে, কিছু কিছু অস্পষ্টতায় প্রশ্নও করলেন আমায়। ভুল ব্যাকরণের ইংরেজিতে যতটুকু সম্ভব বোঝাতে চেষ্টা করলাম। কেবল এই একমাত্র সবেধন নীলমণির জন্যই দেশ ছেড়েছি আমি। ওকে সাহায্য কর। আমি আমার সবটুকু দিয়েই তোমাদের সহযোগিতা করব। শুধু বল, আমাকে কী-কী করতে হবে। হ্যাঁ, ঈশ্বরের কৃপায় আমি এক বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর মা। যার নয় বছর বয়সেই আমি দেশান্তরি হই, কেবল তাকে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ এনে দিতে।

কন্যার পড়াশোনার পাশাপাশি আমাকে অনেকরকম কর্মশালা, প্রশিক্ষণ এবং নানাবিধ তথ্য ও সহযোগিতার সন্ধানে প্রায় প্রতিদিনই দৌড়ঝাঁপ করতে হচ্ছে। আমিও মনের অসীম শক্তি আর সাহস নিয়ে সে সবই করে বেড়াচ্ছি। এই বিষয়ে প্রতিনিয়ত যিনি আমায় গাইড করছেন তিনি মি. পিটার ডেবরা। ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডীয়, যার পূর্ব-পুরুষেরা ভারত ছেড়েছিলেন প্রায় এক শ বছর আগে। পিটার দেখতে যেমন সুদর্শন, তেমনি অমায়িক তাঁর আচরণ-ব্যবহার—ভাইস প্রিন্সিপাল আমার কন্যার স্কুলের। পিটারের সঙ্গে প্রায় প্রতিনিয়তই কন্যার বিষয়ে কথা হতো, আমার নিজের ক্যারিয়ার, পড়াশোনা ও ভাষা শিক্ষাসহ এই নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নেবার জন্য অনেক তথ্য দিয়েই পিটার আমায় সাহায্য করেছিলেন তখন। পরবাসের এই মাটিতে নিজেকে গুছিয়ে নিতে পিটারের সেসব তথ্য ও পরামর্শ সহায়তার কথা আজীবন মনে রাখার মতো।

প্রতিদিন নতুন নতুন জিনিস শিখি, শিশুদের শিক্ষা, চিকিৎসা, বসবাস, বিশেষ করে স্পেশাল নিড চাইল্ডদের জন্য সরকারি-বেসরকারি সুযোগ-সুবিধা কোথায় কী আছে সে সব ব্যাপারেই পিটার ওয়াকিবহাল, আর তাঁর দায়িত্ব হলো সকল তথ্যভান্ডার দিয়ে আমাকে সমৃদ্ধ করা। এখানকার পলিসি অনুযায়ী আসলে সুযোগসুবিধা না বলে বলা উত্তম শিশুদের সমস্ত অধিকার! আর এভাবেই একটু একটু তেল জল দিতে থাকি অভিবাসীত জীবন বৃক্ষের গোড়ায়।

এখানকার স্কুল শুরু হয় সেপ্টেম্বরে, শেষ হয় জুনে। বছরের দুই মাস না ঘুরতেই শেষ হলো স্কুল। কন্যার জন্য নতুন ক্লাস, সে ইংরেজিতে যোগাযোগ করতে পারে না, শিক্ষকেরা তাকে যা করতে বলেন সে তা ফলো করতে পারে না। একে তো নতুন পরিবেশ, বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী সবই নতুন, তার ওপরে ভাষাও ভিন্ন। সে একেবারে হাবুডুবু খাচ্ছে। নিজের আশৈশব বেড়ে ওঠার সেই পরিচিত পরিবেশ, নানুমণি, খামুণিদের (খালামণিকে সে এভাবেই ডেকে অভ্যস্ত) ফেলে এসে সে যেন অথই সাগরে পড়ে গেছে। শেকড় ছিঁড়ে আসার বেদনায় জবাই করা মুরগির মতোই ছটফট করছে ভেতর-বাইরে। সবকিছুতেই সে তখন রিভোল্ট করে, রিফিউজ করে, জিদও বেড়ে গেছে অত্যধিক। একটা নয় বছরের শিশুর জন্য সেটাই স্বাভাবিক! আমি নিজেও কী খুব আনন্দে ছিলাম? সেসব কথা মনে হলে এখনো দুই চোখের কোণ ঝাপসা হয়। এমন অস্থির সময় বোধ করি সকল অভিবাসীকেই এক সময় পার করতে হয়। যত দিন যায়, শেকড়ের ক্ষত শুকাতে থাকে, আর গাঁটছড়া বাঁধা হয় ধীরে ধীরে নতুন আবাসে।

আমাদের সঙ্গে সঙ্গে সেও চেষ্টা করছিল খাপ খাওয়াতে। স্কুলের অর্ধেক সময়ে সে তার নিজের ক্লাসে থাকে। আর বাকি অর্ধেক সে ইংরেজি ভাষা শেখে। সে সময়ে স্কুলের শিক্ষকসহ প্রশাসনিক সকল কর্মকর্তারা আমাকে ও তাকে যেভাবে সাহায্য করেছিলেন তা যে কেবল পেশাগত দায় থেকেই করেছিলেন এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তথাপিও আমি আজানু কৃতজ্ঞ সকলের কাছে; এমন উচ্চতর পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্যও মানুষের মননশীলতা দরকার। নিঃসন্দেহে সেসব একদিনে হয় না, একার চেষ্টাতেও হয় না। এ জন্য দরকার রাষ্ট্রকাঠামোর ভেতরে অনেক শক্তিশালী ব্যবস্থা!

স্কুল সমাপনী পরীক্ষা শেষ। আমার মেয়ের মূল্যায়ন চলছে। এত দিনে কন্যার ভাষাগত জ্ঞানের বেশ উন্নতি হয়েছে। তথাপিও, ঠিক কোন ধরনের ক্লাস, কারিকুলাম ও সহযোগিতা তার জন্য প্রযোজ্য এটা নির্ধারণ করাটা ছিল জরুরি। সেটি সম্পন্ন করতেই আমাদের প্রায় এক বছর তিন মাস অপেক্ষা করতে হয়েছিল। এই সময়ে সে পিটারের স্কুলেই যাচ্ছিল। তার নতুন স্কুল প্রাপ্তির কাজটি ত্বরান্বিত করতে পিটারের নিরলস প্রচেষ্টার কোনো ঘাটতি ছিল না। আমাদের তখনো হেলথ কার্ড হয়নি। অর্থাৎ আমরা বিনা মূল্যে সরকারি স্বাস্থ্য সেবার আওতাভুক্ত তখনো হইনি। নতুন স্কুলের জন্য মেয়ের মেডিকেল অ্যাসেসমেন্ট দরকার, যা একজন শিশু বিশেষজ্ঞ করবেন। মি. ডেবরা নিজ দায়িত্বে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্টের ব্যবস্থা করলেন এবং নিজের গাড়ি চালিয়ে আমাদের মা-মেয়েকে নির্ধারিত দিনে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলেন। প্রথম দিনে ডাক্তার যেসব টেস্ট করলেন, তার রিপোর্ট সেদিন পাওয়া গেল না। ডেবরা নিজেই সেই রিপোর্ট সংগ্রহ করে আমার কাছে পৌঁছে দিলেন।

ইতিমধ্যে আরও একটি বছর পার করে ফেললাম। মেয়ে আরও একটি নতুন ক্লাস শেষ করে ফেলেছে। এক মাস হাতে আছে শিক্ষা সমাপনী হতে। সময় যত গড়াচ্ছে আমার দুশ্চিন্তারা ডালপালা মেলে এগোচ্ছে। এই স্কুলটি বাসার কাছেই ছিল। হেঁটে গেলে তিন মিনিটেই যাওয়া যেত। এখন কত দূরে নতুন স্কুল হবে, সে কীভাবে স্কুলে যাবে, কারা তার বন্ধু হবে, কীভাবে নতুন পরিবেশে আবার অ্যাডজাস্ট করবে—এসব ভাবনায় মন ভারাক্রান্ত হয়ে থাকত। তবুও, যা হবে নিশ্চয়ই ভালো হবে সেই ভেবে আবার নিজেই সান্ত্বনা দিতাম নিজের মনকে।

স্কুল ছুটি হয়ে যাবে জুনের ত্রিশ তারিখে; এই বছরের ঝামেলা এই বছরের মধ্যেই শেষ না করলে পরবর্তী বছরে স্কুল প্লেসমেন্ট পাওয়া যাবে না। হঠাৎই একদিন ফোনকল পেলাম—আমাকে স্কুল পরিদর্শনে যেতে হবে। আমি তিনবার তিনটি স্কুল দেখতে যেতে পারব। এর মধ্য থেকে যেকোনো একটিকেই বেছে নিতে হবে কন্যার জন্য। সময় অল্প হাতে, এ কারণে একটু তাড়া ছিল বৈকি। তথাপিও, আনন্দ হচ্ছিল খুব।

লেখিকা
লেখিকা

স্কুল ভিজিটের ব্যাপারে ডেবরা আমায় যাবতীয় তথ্য দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, আমি কীভাবে যাব, মানে আমার বাহন আছে কিনা? কারণ, স্কুলটা খানিকটা ভেতরের রাস্তায়, যেখানে কাছাকাছি কোনো বাস স্টপেজ নেই। আমি কীভাবে সেখান অবধি যথাসময়ে পৌঁছতে পারি সেটাও তাঁর চিন্তার কারণ। আমি খুব উৎকণ্ঠিত না হলেও কিছুটা শঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম যথাসময়ে পৌঁছাতে পারব কিনা সেই ভেবে। তিনি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে এক মুহূর্ত কী ভেবে নিয়ে বললেন, আমি তোমায় ড্রপ করতে পারব, কিন্তু ফিরে আসার দায়িত্ব তোমার। আমি যেন মেঘ না চাইতেই জল পেয়ে গেলাম। কতটা যে কৃতজ্ঞ হলাম তাঁর কাছে, সেই ঋণ অপরিশোধ্যই থেকে যাবে এ জীবনে। পিটার ডেবরার গাড়িতে চড়ে সেদিন নতুন স্কুল পরিদর্শনে গেলাম মা ও মেয়ে।

আগেই উল্লেখ করেছি, এসবই করেছিলেন তিনি তাঁর পেশাগত দায় থেকে। আমার জন্য কোনো প্রকার বাড়তি সহানুভূতি কিংবা দরদ কোনো কিছুই কাজ করেনি তাঁর মনে। অথচ, কী পরম শ্রদ্ধাভরে আমার মনে গেঁথে আছে তাঁর সদাচরণের কথা! আন্তরিকতা আর যত্নে ভরা ছিল তাঁর সকল কাজ!

সেদিন মনে পড়েছিল ঢাকা শহরের একটি যেমন তেমন মানের গলির মুখের কিন্ডারগার্টেন স্কুলের কথা, যেখানে আমার কন্যা তার প্রথম স্কুলিং শুরু করে। স্কুলের প্রিন্সিপালের সঙ্গে কথা বলেই ক্লাসরুমে বাড়তি একজন শিক্ষকের ব্যবস্থা করেছিলাম। যার পুরো বেতনই আমি দিতাম। আমার কন্যার ভিন্নরকম চাহিদা ও বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় সেটি ছিল প্রয়োজনীয়। সে ক্ষেত্রে স্কুলকে সাহায্য করা, যদি তারাও সাহায্য করেন আমায়। স্কুলে বড় অঙ্কের ডোনেশনেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। তথাপি কিছুদিন পরে, আমার কন্যা শিক্ষকের কাছে নির্মমভাবে ভর্ৎসনার শিকার হয়ে, পরিহাস পেয়ে বাসায় পালিয়ে আসে, আর কোনো দিনই তাকে সেই স্কুলে নিতে পারিনি।

এ তো গেল ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। যদি কল্পনা করি আমার সোনার দেশের একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কথা! কেমন ছবি ভেসে আসে আমাদের মানসপটে? সেখানে দরদ, ভালোবাসা, স্নেহ-মায়া মমতা, কিংবা পেশাদারি কী কী দেখতে পাই আমরা একজন প্রতিবন্ধী কিংবা স্পেশাল নিড শিশুর জন্য? একসময় আমাদের প্রাথমিক শিক্ষা অনেক অবহেলিত ছিল। শিক্ষকদের বেতনাদি কম ছিল। শিক্ষকেরা সমাজে মূল্যহীন ছিলেন। এখন সেই অবস্থার উত্তরণ ঘটেছে বলে আমার বিশ্বাস। যদিও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হিসাব করলে বেতন এখনো যথেষ্ট ভালো নয়। তবে, আমাদের শিক্ষকদের মেধা-পরিশ্রম-দক্ষতা আর যোগ্যতার যোগফল করলে এর বেশি (বেতন) প্রাপ্যতা অনেকাংশেই হাস্যকর মনে হয়! শিক্ষকদের ওপর শ্রদ্ধা রেখেই বলছি এ কথা! একদা আমিও এমন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম। তখন তুলনা দেওয়ার সাহস ও সামর্থ্য কিছুই ছিল না। আজ স্পষ্টতই জানি শুভংকরের ফাঁকিটা কোথায়!

বলা হয়ে থাকে, প্রাথমিক শিক্ষা সকল শিক্ষার বুনিয়াদ; এটা ধ্রুব সত্য। কিন্তু আমাদের দেশের ক্ষেত্রে এই সত্য বরাবরই উল্টো। আমাদের শিক্ষকদের কম জেনে, কিংবা কিছুই না জেনেও শিক্ষকতা করে জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভব; ব্যবস্থাটাই এমন! শিশুদের বুনিয়াদ-ভিত তৈরির বিষয়টা রয়ে গেছে ঔদাসীন্যেই মোড়া। গেল কয়েক বছরের শিক্ষাক্রমের মূল টেক্সটের রদবদল দেখে এমনটাই মনে হয়। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সেটিও রাজনীতির মহান (?) দোষে দুষ্ট!

এ কথা সত্য, আমাদের সামর্থ্য নেই। আমরা দরিদ্র, তাই মেধাবী শিক্ষক পোষার সামর্থ্য নেই। তবে, মননশীল, প্রাণময়, হৃদয়বান মানুষ কোথায় পাব আমরা? যে শিক্ষকেরা মানুষ গড়ার কারিগর, তারা নিজেরাই কতটা মানুষ (!) সেই হিসাব কষার সময় কি এসেছে আজও? আমাদের সময়ে শিক্ষকদের হাতে থাকত জোড়া বেত, কথায় কথায় বেত্রাঘাতই ছিল তাদের প্রধান কাজ। সে অবস্থাও দূরীভূত হয়েছে খানিকটা চাপে পড়েই। কিন্তু আক্ষরিক অর্থে কি শিক্ষকদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়েছে এতে? আমাদের দেশের মূলধারার শিক্ষায় এখনো বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীরা অবহেলিত, এখনো আমাদের শিক্ষকেরা মননশীল মানুষ নন। তাদের সকলের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে কিংবা মূলধারায় সম্পৃক্ত করে জীবনকে এগিয়ে দিতে শিক্ষকেরা আদতেই কোনো দায় নিতে চান না।

দিনে দিনে আমাদের সমাজ থেকে হারিয়ে গেছে অনেক মানবীয় প্রকাশ; মায়া-মমতা, সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি, সহযোগিতা-সহমর্মিতা। এসব অভিধানেই শোভা পায়। এসবের বাস্তব প্রয়োগ আমাদের প্রতিদিনের জীবনে কদাচিৎ মেলে। অথচ, আমরাই গর্ব করি আমাদের হাজার বছরের সামাজিক আচার-প্রথা আর সংস্কারের!

এই পরভূমে যখন দেখি মানুষের স্বাভাবিক পেশাদারি আমাদের সবচেয়ে মহৎ ব্যক্তির চেয়েও উত্তম তখনই কলম তুলি। তুলনাটা চলে আসে স্বাভাবিক কারণেই; পুলিশ ভালো আচরণ করলে, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ভালো আচরণ করলে কিংবা কোনো ডাক্তার ভালো আচরণ করলে এখনো আমাদের মিডিয়ায় সংবাদ শিরোনাম হয়। তাই জানাতে ইচ্ছে করে ‘এই ভালো কাজসমূহ’ পেশাদারির অংশমাত্র। এসব সংবাদ হতে নেই, এসব নিয়ে আশ্চর্য হওয়ারও যেমন কিছু নেই, নেই তেমন গর্বেরও কিছু।

তবুও আশায় বুক বাঁধি, আমাদের দেশেও একদিন সেই ছেলে হবে, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে! একদিন আমরাও গর্ব করব হৃদয়বান মানুষ গড়ার কারিগরদের নিয়ে। আমাদের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েরাও পাবে যথাযোগ্য আদর, সম্মান আর ভালোবাসা। বেড়ে উঠবে মন-মননে, একদিন ওরাই এগিয়ে নেবে আগামীর বাংলাদেশকে।
...

ধারাবাহিক এ রচনার আগের পর্ব পড়তে ক্লিক করুন