সজল আশফাকের তিনটি ছড়া

গাছের পাতার রূপ

হঠাৎ দেখি গাছের পাতার
বদলে গেছে রূপ
সবুজ থেকে হলুদ হয়ে
রইছে না নিশ্চুপ।
দুদিন বাদেই হলুদ থেকে
হচ্ছে কিছু লাল
লাল সবুজ আর হলুদ রঙে
সাজছে গাছের ডাল।

গাছের রঙিন পাতাগুলো
থাকছে না আর গাছে
বাতাস বলে, চল উড়বি
আয় না আমার কাছে।
অমনি ওড়ে পাখির মতো
পাতা শত শত,
ক্লান্ত হলে পথকে ঢেকে
দেয় গালিচার মতো।

রঙিন পাতা রূপ নিয়েছে
নজরকাড়া ফুলে
বসন্ত কি ভুলবশত
দুয়ার দিল খুলে?

পাতা ঝরার দিন

স্প্রিং সামারের পড়ে এবার
এসে গেছে ফল
একে একে ঝরছে পাতা
গাছের চোখে জল।
পাতারা সব যাচ্ছে ছেড়ে
গাছের স্নেহের কোল,
ভালোই ছিল দিনগুলো তো
হাওয়ায় খেত দোল।
গাছের শরীরজুড়ে এখন
সবুজ পাতার নাচ
নেই তো রে আর, গাছে শেষে
রইল পাতা পাঁচ।
পাঁচটি পাতা বিষণ্নতায়
মুখ করেছে ভার
একটি গেল পাখির পেটে
রইল বাকি চার।
চারটি পাতার একটি এবার
ঝরল ঝড়ের দিন,
লাল হলুদ আর কমলা রঙের
রইল পাতা তিন।
তিনটি পাতার দুইটি জেগে
একটি বলে শুই,
ঘুমের ঘোরে পোকায় খেলো
রইল বাকি দুই।
দুইটি পাতার একটি রোগে
হয়ে গেছে ব্ল্যাক,
রোগে-শোকে মরল সেটি
থাকল বাকি এক।
একটি পাতা একা একা
গাছের শাখা জুড়ে,
কখন সেও যায় হারিয়ে
হাওয়ায় দূরে উড়ে।

দিগন্তে রঙের মেলা

—বাতাস বলে পাতার কানে
চল তোরা আয় উড়বি
আমার সঙ্গে ইচ্ছে মতো
এদিক সেদিক ঘুরবি।

—ঘুরব সে তো ভালো কথা
তার আগে তুই দেখ
আমার গায়ে রঙের খেলা
কাব্য করে লেখ।
লাল হলুদ আর কমলা ছাড়াও
কত রঙের আভা
বন-বাদাড় ও পাহাড় যেন
রঙিন ফুলের লাভা।

—মুগ্ধ আমি, বলল বাতাস
রঙের ধুনোধূপে,
চারদিকে আঁকা গাছের
সারির অপার রূপে।

—ওরে বাতাস তোর কণ্ঠে
সুরটা উঠুক বেজে,
ততক্ষণে সোনার রঙে
আরেকটু নিই সেজে!
এই না বলে, বৃষ্টি হয়ে
রঙিন পাতার দলে
ঝরতে থাকে হাওয়ার সঙ্গে
মেতে খেলাচ্ছলে।