অভিশংসন ইস্যুতে নিজ সমর্থন বাড়ার দাবি ট্রাম্পের

মিসিসিপির টুপেলো শহরে আয়োজিত সমাবেশে ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
মিসিসিপির টুপেলো শহরে আয়োজিত সমাবেশে ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

ডেমোক্র্যাটরা তাঁর বিরুদ্ধে অভিশংসন তদন্ত শুরু করায় আখেরে তিনি লাভবান হয়েছেন বলে মনে করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর মতে, বেশির ভাগ মানুষ এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে সমর্থন দিচ্ছেন।

স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার মিসিসিপিতে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযানে সমর্থকদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন ট্রাম্প। মিসিসিপিতে ট্রাম্পের শক্ত অবস্থান রয়েছে। সেখানে তিনি সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, অভিশংসন ইস্যু নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘ক্ষুব্ধ’ রিপাবলিকান ঢেউয়ের সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের যে সমর্থন রয়েছে, এত বেশি আর কখনো ছিল না।’
মিসিসিপির টুপেলো শহরে আয়োজিত ওই সমাবেশে সমর্থকেরা ট্রাম্পের কথায় উল্লাস প্রকাশ করেন।

আজ শনিবার বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, সবশেষ এক জরিপে বলা হয়েছে, মাত্র ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ মার্কিন নাগরিক ট্রাম্পকে সমর্থন দিচ্ছেন। তবে উত্তেজিত প্রেসিডেন্ট স্পষ্টই তাঁর মূল ভিতটি দেখছেন, যা তাঁর রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকা ও আগামী বছরের নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয়। ডেমোক্র্যাট-নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদের এই অভিশংসন তদন্ত ট্রাম্পের মতে, ‘গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ’।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আপনাদের বলতে চাই, রিপাবলিকানরা সত্যিই অনেক শক্তিশালী।’

গত বৃহস্পতিবার অভিশংসন তদন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুর লক্ষ্যে প্রতিনিধি পরিষদে প্রস্তাব পাস হওয়ার পর ট্রাম্পের এটাই প্রথম সমাবেশ।

একটি হুইসেলব্লোয়ার বা সতর্কতাকারী ব্যক্তির অভিযোগ থেকে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসন তদন্ত শুরুর প্রস্তাব পাসের মতো ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটে। হুইসেলব্লোয়ার অভিযোগে বলা হয়, ট্রাম্প তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে অপ্রমাণিত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে চাপ দিয়েছিলেন। জো বাইডেনের ছেলে ইউক্রেনের গ্যাস কোম্পানি বুরিসমায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। ট্রাম্পের ভাষায়, ওই গ্যাস কোম্পানিতে থাকার সময় বাইডেনের ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল এবং বাইডেন ক্ষমতা প্রয়োগ করে সেই দুর্নীতির তদন্ত বন্ধ করেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি ওই তদন্ত আবারও শুরু করতে চাপ দেন এবং এই চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে তিনি ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তাও সাময়িকভাবে বন্ধ রাখেন।

তবে যখন ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এগোচ্ছেন, তখন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজ দলের আনুগত্যের ওপর নির্ভর করার কৌশল নিয়েছেন। ইউক্রেনের ওপর তাঁর চাপ সৃষ্টির বিষয়টি বৈধ নয় বলেও স্বীকার করছেন না। আর রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সিনেট যদি তাঁর পক্ষে শক্ত অবস্থান ধরে রাখে, তাহলে তাঁকে অভিশংসন করা সম্ভব হবে না। কারণ অভিশংসন তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসনের পক্ষে ডেমোক্র্যাটরা ভোটাভুটিতে পাস করলে তা উঠবে সিনেট। সিনেটে পাস হলেই অভিশংসন কার্যকর সম্ভব হবে।

এর বাইরে ট্রাম্প দেশটির অর্থনীতি খাতে আরও বেশি উদ্যোগ নিচ্ছেন। চাকরির সুযোগ সৃষ্টির বিষয়টিও একটি গতিতে এগোচ্ছে। শ্রম দপ্তরের হিসাব অনুসারে, ১ লাখ ২৮ হাজার নতুন চাকরির সৃষ্টি হয়েছে। বেকারত্বের হার কিছুটা বেড়ে ৩ দশমিক ৬ হলেও সাম্প্রতিক দশকগুলোতে এটা সর্বনিম্ন।
সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, ‘ডেমোক্র্যাটরা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতলে সব উন্নয়ন থেমে যাবে। স্টক মার্কেটে এমনভাবে ধস নামবে, যা আপনারা কেউ কখনো দেখেননি।’