ওড়িয়া ভাষায় বাংলাদেশি কবির বই

‘ক্রিয়াপদোহিনো কবিতা’ বইয়ের প্রচ্ছদ
‘ক্রিয়াপদোহিনো কবিতা’ বইয়ের প্রচ্ছদ

সম্প্রতি ভারতের ওডিশা থেকে বেরিয়েছে কাজী জহিরুল ইসলামের কবিতার বই ‘ক্রিয়াপদোহিনো কবিতা’। ওড়িয়া ভাষায় এটিই প্রথম বাংলাদেশি কোনো কবির কবিতার বই।
বইটি ওড়িয়া ভাষায় অনুবাদ করেছেন কবি অজিত পাত্র। প্রকাশ করেছে ওডিশার ভুবনেশ্বরের প্রকাশক ‘লেখালেখি’। ‘ক্রিয়াপদোহিনো কবিতা’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয় ১০ নভেম্বর ওডিশার করাপুটে আয়োজিত নবম লিট ফেস্টিভ্যালে। মোড়ক উন্মোচন করেন একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক ফনী মহান্তী, প্রকাশক প্রদীপ্ত বেহুরা ও অনুবাদক অজিত পাত্র।
এর আগে বাংলাদেশের হ‌ুমায়ূন আহমেদের বেশ কিছু বই ওডিশা ভাষায় অনুবাদ হয়ে বেরিয়েছে। আনিসুল হকের ‘মা’ ও হ‌ুমায়ূন কবীর ঢালির শিশুতোষ লেখারও ওড়িয়া অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
কাজী জহিরুল ইসলামের বই ‘ক্রিয়াপদোহিনো কবিতা’ বইটির অনুবাদক অজিত পাত্র জানান, ‘এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি কবির কবিতার বই ওড়িয়া ভাষায় প্রকাশিত হলো। আমি যেহেতু বাংলা ভাষাটা জানি এবং কবিতা লিখি, তাই বাংলাদেশের কবিরা কেমন কবিতা লিখছেন, তা জানার একটি অদম্য আগ্রহ আমার আছে। অনেকের কবিতাই আমার ভালো লাগে। আল মাহমুদ ও সৈয়দ শামসুল হকের কবিতা আমাকে বেশ টানে।’ তিনি বলেন, ‘কাজী জহিরুল ইসলামের কবিতায় কিছু একটা আছে। আন্তর্জাতিক অনুষঙ্গ তো থাকেই। এ ছাড়া প্রতিদিনই তিনি তাঁর কবিতাকে বদলে ফেলেন; নতুন করে তোলেন। ক্রিয়াপদ তুলে দিয়ে কবিতা লেখার বিষয়টি খুব অভিনব লেগেছে আমার কাছে। তাই আমি অনুবাদের জন্য তাঁর এই বইটিই বেছে নিয়েছি। বইটি সংগ্রহ করি কলকাতা থেকে। পরে কবিতাগুলোকে আরও ভালো করে বোঝার জন্য আমি কবির সঙ্গে যোগাযোগ করি। এভাবে তার সঙ্গে আমার একটি যোগাযোগ গড়ে ওঠে। ভারতের একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত ওড়িয়া কবি ড. সংগ্রাম জেনার সঙ্গেও তাঁর বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। সংগ্রাম জেনাও জহিরুলদার কবিতার একজন ভক্ত। সংগ্রাম জেনা সম্পাদিত “এশিয়া মার্গ” পত্রিকায় তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে।’
ওড়িয়া ভাষায় নিজের অনূদিত কবিতার বই প্রকাশ হওয়ায় কাজী জহিরুল ইসলাম বেশ আনন্দিত। তিনি বলেন, ‘বাংলা, ওড়িয়া ও অহমিয়া, এই তিনটি ভাষা খুবই কাছাকাছি। এক সময় তো একটি ভাষাই ছিল। এই তিন ভাষার মানুষের আবেগ অনুভূতির মধ্যেও অনেক মিল আছে। আশা করি এখন থেকে আমাদের প্রধান কবিদের কবিতা ওড়িয়া ভাষায় অনূদিত হয়ে তা ওডিশা থেকে প্রকাশিত হবে। শুধু ওডিশা নয় ভারতের প্রতিটি রাজ্যের ভাষাতেই আমাদের সাহিত্যের অনুবাদগ্রন্থ প্রকাশ হওয়া দরকার। এর মধ্য দিয়ে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমাদের শৈল্পিক চিন্তার সমন্বয় সহজ হবে; পরস্পরকে বুঝতে সুবিধা হবে।’