ভবিষ্যতে বাংলাদেশিরা কংগ্রেসে নেতৃত্ব দেবে

অনুষ্ঠানে সিনেটর চাক শুমারকে ক্রেস্ট দিয়ে সম্মান জানানো হয়
অনুষ্ঠানে সিনেটর চাক শুমারকে ক্রেস্ট দিয়ে সম্মান জানানো হয়

আমেরিকার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ নেতা সিনেটর চাক শুমার বলেছেন, ‘আমি অনুমান করি আগামী দিনে বাংলাদেশিরা কংগ্রেসে নেতৃত্ব দেবে। শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে প্রতিটি অঙ্গনে তারাই থাকবে আমেরিকার শীর্ষে।’

১১ জানুয়ারি জ্যামাইকায় নিউ আমেরিকান ইয়ুথ ফোরাম, নিউ আমেরিকান ডেমোক্রেটিক ক্লাব ও নিউ আমেরিকান উইমেন্স ফোরামের নবম বার্ষিক ডিনার এবং নিউ ইয়ার সেলিব্রেশন অনুষ্ঠানে চাক শুমার এ কথা বলেন। চাক শুমার ইউএস সিনেটে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান এবং সিনেট মাইনরিটি লিডার হিসেবে দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি।

অনুষ্ঠানে মূলধারার এক ডজনেরও বেশি রাজনীতিক বক্তব্য রাখেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ইউএস কংগ্রেসওমেন, নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর ও স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান।

চাক শুমার বলেন, বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটি খুবই শক্তিশালী। নিজের অভিবাসী হওয়ার ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমার নাম চাক শুমার অ্যালিস। অ্যালিস আইল্যান্ডে হাজারো অভিবাসীর সঙ্গে আমিও অভিবাসী হয়েছি। আজ সিনেটে নেতৃত্ব দিচ্ছি। অভিবাসীদের কষ্ট, জীবনসংগ্রাম এবং উজ্জ্বল সম্ভাবনা আমি বুঝি বলেই অনুমান করি, একদিন আমেরিকার কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দেবে বাংলাদেশিরা। শিক্ষা অর্থবাণিজ্য, বিজ্ঞান সবক্ষেত্রে তারাই থাকবে সবচেয়ে এগিয়ে।’

চাক শুমার আরও বলেন, ‘আমি গর্বিত এই জন্য যে, আমেরিকার মধ্যে নিউইয়র্কেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি বসবাস করে।’

আমেরিকার ৫০টি স্টেটের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশির বসবাস নিউইয়র্কে। তবু এখন পর্যন্ত এই কমিউনিটি থেকে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়নি। বরং বাংলাদেশি কমিউনিটি যখন যে প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে তারাই নির্বাচিত হয়েছেন।
অনুষ্ঠানে রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর আনোয়ার হোসেন সিনেটর চাক শুমারকে ক্রেস্ট প্রদান করে সম্মান জানান।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতারা বলেন, অন্য কমিউনিটির নেতৃবৃন্দকে অনেক সমর্থন দিয়েছে বাংলাদেশিরা। এখন বাংলাদেশিদের সময় এসেছে নিজেদের নেতৃত্ব নিজেদের দেওয়ার।

অতিথি ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে সিনেটর চাক শুমার
অতিথি ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে সিনেটর চাক শুমার

নিউ আমেরিকান ইয়ুথ ফোরামের আনাফ আলম ও শেখ আল আমীন এবং নিউ আমেরিকান উইমেন্স ফোরামের রোমানা জেসমিন ও সালমা ফেরদৌসের অভ্যর্থনা শেষে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নিউ আমেরিকান ডেমোক্রেটিক ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা মোর্শেদ আলম।

অনুষ্ঠানে সিনেটর চাক শুমার ছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন ইউএস কংগ্রেসওমেন গ্রেস মেং ও ইভেক্ট ক্লার্ক, নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন ল্যু, অ্যাসেম্বলিম্যান ডেভিড ওয়েপ্রিন, নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক অ্যাডভোকেট জুমানি উইলিয়াম, নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন—কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী এলিজাবেথ ক্রাউলি, নিউজার্সির প্লেইন্স বরো সিটির কাউন্সিলম্যান মুক্তিযোদ্ধা নূরুন নবী, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ওয়াজেদ এ খান, স্টেট অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট-৩৭ এর আগামী প্রাইমারি নির্বাচনে প্রার্থী মেরী জোবায়দা, স্টেট অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট-৩৪ এর প্রার্থী মওলা, জয় চৌধুরী, আগামী প্রাইমারি নির্বাচনে প্রার্থী নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলম্যান পদপ্রার্থী রাজিব গৌদা, মূলধারার রাজনীতিক মিলন রহমান, অ্যাসালের জামিলা উদ্দিন, কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট কাজী আশরাফ হোসেন, মোহাম্মদ আলী, আহমেদ শাকিল, কাজী সাখাওয়াত হোসেন, ফিরোজ আহমেদ, আহসান হাবিব, ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন, পরেশ সাহা প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে আয়োজক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান উপদেষ্টা মোর্শেদ আলমকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এ ছাড়া কমিউনিটিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য শাহ নেওয়াজকে নিউ আমেরিকান লিডার অব দ্য ইয়ার, শায়লা আজিমকে বছরের সেরা নারী উদ্যোক্তা, গোলাম মোস্তফা খান মিরাজকে বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্টস ওয়্যার ভেটারান অ্যান্ড অ্যাকটিভিজম ইন মেইন স্ট্রিম অ্যাওয়ার্ড অব এক্সিলেন্স, অ্যাটর্নি হাসানুজ্জামান মালিককে ল’ইয়ার অব দ্য ইয়ার, এলব্রেট ব্রাডিওকে সিভিল রাইটস অ্যাকটিভিস্ট অব দ্য ইয়ার, জিনাত নবীকে সায়েন্টিস্ট অব দ্য ইয়ার, হেলাল উল করীমকে বাংলাদেশি-আমেরিকান পলিটিক্যাল লিডার অব দ্য ইয়ার এবং টেকফিউসকে কনসালট্যান্ট ইয়ুথ দ্য মোস্ট জব রিপ্লেসমেন্ট অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্বে সংগীত ও নৃত্য পরিবেশিত হয়। এতে স্বরলিপি শিল্পী গোষ্ঠীর শিল্পীরা দলীয় সংগীত পরিবেশন করেন। এ ছাড়া সংগীত পরিবেশন করেন জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী আলী মাহমুদ।

সবশেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন নিউ আমেরিকান উইমেন্স ফোরামের সালেহা আলম ও রূপা আবদুল্লাহ।

কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন—আবদুল আওয়াল সিদ্দিকী, আলী ইমাম শিকদার, তাজুল ইসলাম, হাসানুজ্জামান হাসান, এ বি এম ওসমান গণি, ফাহিম রেজা নূর, হাসান জিলানী, মাকসুদুল হক চৌধুরী, ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার প্রমুখ।