আমেরিকায় করোনাভাইরাস নিয়ে নতুন আতঙ্ক

করোনাভাইরাস আক্রান্ত কোনো অঞ্চল ভ্রমণ করে না এলেও ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন—এমন প্রথম ব্যক্তি শনাক্ত করা হয়েছে আমেরিকায়। ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর আগে আমেরিকায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত যেসব ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে, তারা হয় ভাইরাসটির সংক্রমণ রয়েছে এমন এলাকা ভ্রমণ করে এসেছেন, নয় তো এতে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন। কিন্তু এই প্রথম কোনো ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হলো, যার এমন কোনো ইতিহাস নেই। এটিই সম্ভবত আমেরিকায় কমিউনিটি পর্যায়ে এ ভাইরাস সংক্রমণের প্রথম ঘটনা।
আক্রান্ত ওই ব্যক্তিকে ইউসি ড্যাভিস মেডিকেল সেন্টারে গত সপ্তাহে ভর্তি করা হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি তাঁকে পরীক্ষা করা হয়। হাসপাতালটির সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডিন ব্লুমবার্গ এ ঘটনাকে ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
আমেরিকায় এখন ফ্লু মৌসুম শুরু হচ্ছে। এ পর্যায়ে হাসপাতালগুলোতে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, কোনো আক্রান্ত এলাকা ও ব্যক্তির সংস্পর্শে না থেকেও একজন ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বলছে যে, আমেরিকার কমিউনিটিতেই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ছে। এর অর্থ হচ্ছে, সবাই এখন ঝুঁকিতে রয়েছে। ডিন ব্লুমবার্গের মতে, ‘আমরা জানি না, কে এই ভাইরাস বহন করছে। আমরা জানি না, কার কাছ থেকে আমাদের শরীরে এ ভাইরাস ঢুকে পড়বে। আর যেহেতু ভাইরাসটি একেবারে নতুন, তাই আমাদের কারও শরীরই এ থেকে প্রতিরক্ষার জন্য প্রস্তুত নয়।’
এখন পর্যন্ত আমেরিকায় ৬০ জন করোনাভাইরাস আক্রান্তকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র একজন ছাড়া বাকি সবারই ভাইরাসটি আক্রান্ত এলাকা ভ্রমণ বা ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার ইতিহাস রয়েছে। নতুন এই আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করার পর তাই স্বাভাবিকভাবেই নড়েচড়ে বসেছে মার্কিন স্বাস্থ্য বিভাগ। চিকিৎসক ও ঊর্ধ্বতন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যে প্রস্তুতিকে এত দিন যথেষ্ট মনে করা হচ্ছিল, তা এখন আর যথেষ্ট নয়। ফ্লু মৌসুমের শুরুতেই এমন ঘটনা আরও বেশি সতর্কতা দাবি করছে। লক্ষণ একই হওয়ায় ফ্লু ও করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের শুরুতে পৃথক করাটা কঠিন হয়ে পড়বে। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি হাসপাতালে আরও কঠোর সতর্কতা নিতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে কী কৌশল নিতে হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি পথ বের করার কথা বলছেন।