এখানেই থামতে চান না হোসেন ইশতিয়াক

হোসেন ইশতিয়াক
হোসেন ইশতিয়াক

আমেরিকায় সপরিবারে অভিবাসী হয়ে এসেছিলেন ২০০৩ সালে। এসেই শুধু কোন চাকরি বা কাজে ঢুকে পড়েননি। বড় কিছু করার অদম্য ইচ্ছায় এ দেশে আবার পড়ালেখা শুরু করেন। ভর্তি হন ব্রুকলিন কলেজ সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি নিজেকে একজন কর্মদক্ষ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন তিনি। নিজের পরিশ্রম, মেধা আর দক্ষতায় নিউইয়র্কে গড়ে তুলেছেন বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে শুধু নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেননি, সৃষ্টি করেছেন কর্মসংস্থান। তাঁর প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরি করেন কয়েক শ মানুষ। তাঁর নাম মোহাম্মদ হোসেন ইশতিয়াক।

জীবনসংগ্রামে সফল ব্যক্তি হিসেবে আজ নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে পরিচিত মুখ ইশতিয়াক। এখানেই আত্মতুষ্টি নিয়ে বসে থাকতে চান না তিনি। ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রত্যয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়ের মেধাবী এই শিক্ষার্থী। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ইস্পাহানি গ্রুপের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মোজাম্মেল হোসেনের মেঝ ছেলে ইশতিয়াক। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রী সাহানা ইশতিয়াক পেশায় ল্যাব সায়েন্টিস্ট।

এসেনশিয়াল হোম কেয়ার ও এসেনশিয়াল ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ হোসেন ইশতিয়াক। তাঁর প্রতিষ্ঠানে বেশ কয়েক শ কর্মকর্তা–কর্মচারী কাজ করছেন। এঁদের বেশির ভাগই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। এঁদের নিয়েই তাঁর নিত্যদিনের কর্মযজ্ঞ। নিউইয়র্কের এই প্রবাসজীবনে বয়স্কদের উন্নত সেবা ও পরিচর্চার জন্য হোমকেয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন। একই সঙ্গে কর্মসংস্থানের বিষয়টিও তাঁর মাথায় ছিল। সেই চিন্তা থেকে শুরু করেন নিউইয়র্ক সিটি ডিওএইচের সঙ্গে হোমকেয়ার ব্যবসা। ধীরে ধীরে এসেনশিয়াল হোমকেয়ার একটি জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠানে রূপ নেয়। উন্নত সেবার লক্ষ্যে নিউইয়র্কের বিভিন্ন বরোতে এসেনশিয়াল হোমকেয়ারের রয়েছে সার্ভিস শাখা। জ্যামাইকার হিলসাইডে দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।
ভিসা ও টিকেটিং ব্যবসার প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেল প্রসঙ্গে ইশতিয়াক হোসেন বলেন, ‘নিউইয়র্কে অনেক মানুষ টিকিট কিনে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। আমরা কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বস্ততার সঙ্গে কাজ করছি। লোকজন যাতে প্রতারণার শিকার না হয়, সে জন্য আমরা ট্রাভেল এজেন্সি খুলেছি।’
জীবনের নানা পর্যায়ে নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে সাফল্যের দেখা পেয়েছেন মোহাম্মদ হোসেন ইশতিয়াক। ২০১২ সাল থেকে ঢাকা ফার্মেসির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করেন টানা তিন বছর। এ ছাড়া সেফ অ্যান্ড ড্রাগ ইনক করপোরেশনের মালিকানায়ও ছিলেন তিনি।
হোসেন ইশতিয়াক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সমাজসেবামূলক সংগঠনের সঙ্গেও জড়িত রয়েছেন। তিনি জ্যামাইকা ফ্রেন্ডস সোসাইটি ও বাংলাদেশ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের অব নিউইয়র্কের উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। আমেরিকায় প্রবাসজীবনে থেকেও দেশে নানা সমাজসেবা ও মানবিক কাজে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন এই সফল ব্যবসায়ী।
একজন সফল মানুষের গুণাবলি প্রসঙ্গে নিজের মতামত জানাতে গিয়ে ইশতিয়াক বলেন, মেধা ও অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে কঠোর পরিশ্রম এনে দিতে পারে যেকোনো মানুষের জীবনের সাফল্যের চাবিকাঠি।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে এসেনিশয়াল হোমকেয়ার–বস বলেন, ‘এখানেই থেমে যেতে চাই না। আমার লালিত স্বপ্ন হচ্ছে বড় কিছু করা। ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্থাপনা তৈরি করে কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনতে পারলে বাংলাদেশি কমিউনিটি ও আমেরিকার সমাজের জন্য কল্যাণকর কিছু করা সহজতর হবে।’