নিনা আহমেদের নির্বাচন

নেতৃত্বগুণ যাঁর আছে, তাঁর আলাদা কোনো দেশ থাকে না, থাকে না আলাদা কোনো গোত্র পরিচয়। নেতা তো তিনিই, যিনি সবার কথা ভাবেন, দুর্যোগে বুক পেতে সবাইকে রক্ষা করেন। ব্যক্তির ঊর্ধ্বে উঠে সমষ্টির ভাবনাই যাকে চালিত করে, তিনিই নেতা। জাতি পরিচয় নির্বিশেষে একজন যোগ্য নেতা তাই দেশ-কালের পরিধি পার হয়ে হয়ে ওঠেন সবার, সব কালের।
আমেরিকাপ্রবাসী বাংলাদেশি অনেকের মধ্যে রয়েছে এ নেতৃত্বগুণ। এরই মধ্যে সামষ্টিক নানা প্রশ্নে, জাতি পরিচয় নির্বিশেষে সবার মঙ্গলে সামনের সারি থেকে নেতৃত্ব দেওয়ায় অনেক বাংলাদেশি আমেরিকান নিজ কমিউনিটির বাইরে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন। এরই মধ্যে কয়েকজন অঙ্গরাজ্য পর্যায়ের আইনপ্রণেতার দায়িত্বও পেয়েছেন। আর নগর প্রশাসনে বা কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অনেকেই।
এমনই এক নেতৃত্ব গুণসম্পন্ন বাংলাদেশি আমেরিকান নিনা আহমেদ। গত কয়েক বছর ধরেই তাঁর নেতৃত্ব গুণ, তাঁর বিভিন্ন কর্মকাণ্ড আমেরিকার মূলধারার রাজনীতিতে আলোচিত হচ্ছে। নজর কাড়ছেন তিনি সবার। এবার তিনি পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের অডিটর জেনারেল পদের জন্য লড়ছেন। অঙ্গরাজ্যটির প্রভাবশালী অনেক আইনপ্রণেতা তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন এরই মধ্যে। সমর্থন জানিয়েছে অঙ্গরাজ্যটির রাজনীতির মাঠে প্রভাবশালী সংগঠন হিসেবে পরিচিত ফিলাডেলফিয়া লেবার।
অতীত কর্মকাণ্ডের ভিতে দাঁড়িয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দেওয়ার মাধ্যমেই নিনা আহমেদ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। অথচ একজন জীববিজ্ঞানী হিসেবে, একজন উদ্যোক্তা হিসেবেই তিনি স্বচ্ছন্দে জীবন কাটিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু তেমন যাপন তাঁকে স্বস্তি দেয়নি। সবাইকে নিয়েই এগিয়ে যেতে চেয়েছেন। আর এই চাওয়াই তাঁকে এনে দাঁড় করিয়েছে সক্রিয় রাজনীতির মাঠে। কাজ করেছেন সাবেক বারাক ওবামা প্রশাসনের উপদেষ্টা কমিশনের সদস্যসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায়। এখন তিনি আরও বড় দায়িত্ব নিতে চান।
নারীবাদী হিসেবে পরিচিত নিনা আহমেদ চান সব কর্মক্ষেত্রকে নারীর জন্য অনুকূল করতে। আমেরিকায় প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ হওয়া অস্ত্র ব্যবসায় লাগাম টানতে চান। চান প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে। এ সবই যেকোনো অঞ্চলের মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ইতিবাচক নানা কাজের মধ্য দিয়ে নিনা আহমেদ অনেক আগেই জাতি-ধর্ম-বর্ণ পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে সবার কাছে নিজের গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছেন। সব দিক থেকেই তিনি নেতার ভূমিকাই পালন করছেন। এখন সময় এসেছে প্রশাসনিক উচ্চ স্থান থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার। নিনা আহমেদ সে জন্য প্রস্তুত। এখন প্রস্তুত হতে হবে বাংলাদেশিদের। একজন বাংলাদেশি হিসেবে নিনা আহমেদকে সমর্থন জানিয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশের একজনকে অঙ্গরাজ্যের উচ্চপদে আসীন করতে পেনসিলভানিয়ার বাংলাদেশি কমিউনিটিকেই তাঁর প্রচার দল হিসেবে সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব পালন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যে কোনো বিভক্তি থাকলেও তাকে পাশ কাটাতে হবে। নিনা আহমেদ বিজয়ী হলে, তিনিই হবেন পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের এমন উচ্চপর্যায়ে যাওয়া প্রথম বাংলাদেশি। রাজ্যের এই পদে তিনিই হবেন প্রথম নারী ও প্রথম অশ্বেতাঙ্গ কেউ। নিনা আহমেদ বিজয়ী হলে, বাংলাদেশি প্রবাসীদের জয় হবে। তাই তাঁর সমর্থনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।