করোনার নজিরবিহীন সংকটে জনগণের প্রতি অভূতপূর্ব সহমর্মিতা

করোনাভাইরাসের আতঙ্কে নিউইয়র্ক নগরী প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে। ছবি: প্রথম আলো
করোনাভাইরাসের আতঙ্কে নিউইয়র্ক নগরী প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে। ছবি: প্রথম আলো

করোনাভাইরাসে আমেরিকা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে বন্ধ হওয়ায় বেকার নাগরিকেরা কেন্দ্রীয় সরকার থেকে পূর্ণ মজুরি পাবেন। নিয়মিত বেকার ভাতার চেয়ে এই ভাতা বেশি। ফুল টাইম, পার্ট টাইম কর্মজীবী ছাড়াও যারা স্বাধীন পেশায় আছেন, তাদেরও ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে অন্তত চার মাসের ভাতা দেওয়া হবে।

আমেরিকায় ২১ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যাও ৩০০ অতিক্রম করেছে। শরীরে ভাইরাসটি সংক্রমিত হয়েছে কি না, তা পরীক্ষার যত সুযোগ বাড়ছে, আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও তত বাড়ছে। আমেরিকার সবচেয়ে বড় নগর নিউইয়র্কেই সংখ্যাটি সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যেই রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা প্রায় ৭৬ জন। নিউইয়র্কে প্রতি ঘণ্টায় একজনের মৃত্যু হচ্ছে। শনিবার বিকেলেই নিউইয়র্কের শিক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, জ্যাকসন হাইটসের একটি স্কুলের শিক্ষার্থীর শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। নগর পুরোই লকডাউনে যাচ্ছে স্থানীয় সময় ২২ মার্চ মানে আজ সন্ধ্যায়।

নিউইয়র্কের সব বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অ্যাভিয়েশন অথোরিটির একজন কর্মীর শরীরে করোনা পাওয়া যাওয়ার পর পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আকাশ পথ বন্ধ থাকবে। নিউইয়র্কে হাসপাতালের বেড সংকট মোকাবিলায় ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। একইভাবে পাশের রাজ্য নিউজার্সিসহ বড় বড় নগরে লক ডাউনের ঘোষণা এসেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাওয়া যাবে না। নাগরিকদের আবশ্যিক প্রয়োজনীয় ব্যবসা-বাণিজ্য খোলা রাখা হচ্ছে। আমেরিকার ইতিহাসে এমন ঘটনা কেউ কোনো দিন দেখেনি। এমন নাজুক পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত না হলেও সবাই নিজেদের রক্ষায় আইন মানছে।

মার্কিন সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা নিউইয়র্ক থেকে নির্বাচিত সিনেটর চার্লস শুমার ২১ মার্চ রাতে সিএনএনকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, নাগরিকদের পর্যাপ্ত কর্মহীন ভাতা দেওয়া হবে। তারা পূর্ণ মজুরি পাবে। বিমা ও ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কীভাবে এ সুবিধা দেওয়া হবে, তা নিয়ে আইন প্রণেতারা শেষ মুহূর্তের সমঝোতায় আছেন। স্বাধীন কর্মজীবী, ফ্রি ল্যান্সারসহ সবাই অন্তত চার মাস সামাল দেওয়ার মতো ভাতা পাবেন।

আমেরিকার সাম্প্রতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন সব ঘটনা ঘটছে। ২০০১ সালে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রসহ আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা হয়েছিল। থমকে গিয়েছিল পুরো দেশ। নাগরিক উৎকণ্ঠার মধ্যে দ্রুতই সামলে নিয়েছিল বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশটি।

এবারের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। অজানা আতঙ্ক তাড়া করছে খোদ প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে দেশটির সব পর্যায়ে মানুষের মধ্যে। নাগরিকদের পাশে এমন সহানুভূতি নিয়ে সরকার পাশে দাঁড়ানোর ঘটনাও নজিরবিহীন। নানা কারণে বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে নিজের দল, ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক উত্তেজনা, রাজ্য ও নগর পিতাদের টানাপোড়েনের সম্পর্ক এই সংকটে একদমই চাপা পড়েছে। সবাই যার যার অবস্থান থেকে নাগরিকদের রক্ষায় এগিয়ে এসেছেন। নানা প্রতিরোধমূলক, পরিষেবামূলক কর্মসূচি এরই মধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে। যা আমেরিকার ইতিহাসে আর কখনো হয়নি।

ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে জরুরিভাবে যা করা হচ্ছে
মৃদু অভিযোগ উঠেছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনাভাইরাস নিয়ে নাগরিকদের রক্ষায় কিছুটা বিলম্ব করেছেন। যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২১ মার্চ সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তাঁর কাছে পর্যাপ্ত তথ্য আসার পরই নাগরিকদের রক্ষায় সর্বোচ্চ উদ্যোগে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। এর মধ্যেই নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত বিভাগকে পুরোপুরি সক্রিয় করা হয়েছে। চিকিৎসার জন্য পরীক্ষামূলক ওষুধকে করোনা রোগীর ওপর প্রয়োগে দ্রুত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ওষুধটি আগে কলেরার জন্য ব্যবহার করা হতো।

কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্টকে (ফেমা) মাঠে নামানো হয়েছে। ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া এলাকায় ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। সংকট মোকাবিলায় নাগরিকদের মনোবল বাড়াতে ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে জীবন রক্ষাকারী সার্জারি ছাড়া সব সার্জারি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইমিগ্রেশন বিভাগ কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের ধরপাকড় বন্ধ রেখেছে।

আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নাগরিক সহযোগিতা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই করদাতা সব নাগরিক এক হাজার ডলার করে চেক পাবেন। এ ছাড়া পরিবার প্রতি আরও কিছু নগদ অর্থ সহযোগিতা নিয়ে আইন প্রণেতারা একমত হওয়ার চেষ্টা করছেন। কাল সোমবারের মধ্যেই জানা যাবে, কয় দফায় নাগরিকেরা কত পরিমাণ ব্যক্তি পর্যায়ে বা পরিবার পর্যায়ে অর্থ সহযোগিতা পাবেন।

কর্মহীন নাগরিকদের জন্য দ্রুত বেকার ভাতা অনুমোদনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যারা কাজ হারাচ্ছেন, তারা বেকারভাতার জন্য আবেদন করলে দ্রুতই অনুমোদনের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। আগে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হতো। পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে বেসরকারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। গাড়ি থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি। তারা চিকিৎসা ও প্রতিরোধ সরঞ্জাম তৈরি ও সরবরাহে ঝাঁপিয়ে পড়েছে।

ফেডারেল ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) দ্রুত করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে যন্ত্র অনুমোদন করে ২১ মার্চ থেকে আক্রান্ত নগরগুলোতে পাঠাচ্ছে। নতুন এই শনাক্তকরণ যন্ত্রে মাত্র ৪৫ মিনিটে ভাইরাসটি শনাক্ত করা সম্ভব বলে জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বয়স্কদের অবসরভাতা দ্রুত পরিশোধ করা হচ্ছে। অসুস্থতার কারণে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য চিকিৎসাকালীন ছুটি অনুমোদন করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ব্যয়বহুল মার্কিন চিকিৎসা ব্যবস্থায় ভাইরাস শনাক্ত করতে সব নাগরিকের বিনা মূল্যে পরীক্ষা করানোর সুবিধার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

অবশ্য পর্যাপ্ত পরীক্ষাকেন্দ্র না থাকায় কেবল আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা গেলেই কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ফেমার পক্ষ থেকে নিউইয়র্ক, নিউজার্সিসহ বড় বড় নগরে ভ্রাম্যমাণ করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারে পক্ষ থেকে নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যসহ বিভিন্ন এলাকায় হাসপাতালের বেড সংকটের কারণে ভাসমান হাসপাতাল, মেরিন হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে, করা হচ্ছে। (এসব হাসপাতাল যুদ্ধ বা মহামারিতেই ব্যবহার হয়ে থাকে)।

বাড়ির মালিকদের মর্টগেজ সময়মতো পরিশোধ না করলেও কোনো মাশুল দিতে হবে না। তিন মাসের জন্য বাড়ির মর্টগেজ নিয়ে এই সিদ্ধান্ত হলেও কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মর্টগেজদাতা ব্যাংকের সঙ্গে নাগরিকেরা যেন নিজেদের অসুবিধা জানিয়ে যোগাযোগ করেন। এ ব্যাপারে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে নাগরিকদের অনুকূলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

ফেডারেল শিক্ষাঋণের কিস্তি পরিশোধ স্থগিত করা হয়েছে। ঋণের ওপর প্রদেয় সুদ মওকুফ ঘোষণা করা হয়েছে। মার্কিন নাগরিকদের ট্যাক্স ফাইলিংয়ের সময় সীমা ১৫ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। বড় বড় ব্যবসা, নির্মাণপ্রতিষ্ঠানকেও অর্থ সাহায্য দিতে আইনপ্রণেতারা কাজ করছেন। ২১ মার্চ সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয় তাঁর হোটেল ব্যবসার খবরাখবর। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেও ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন বলে জানিয়েছেন। এতে তিনি বলেছেন, অন্য ব্যবসায়ীরা যে সুবিধা পাবেন, তিনি নিজেও সে সুবিধা পেতে পারেন।

কেন্দ্রীয় সরকারের গৃহীত এসব ব্যবস্থা ছাড়াও রাজ্য, নগর ও মিউনিসিপ্যাল সরকারের পক্ষ থেকে নাগরিকদের এই উদ্বেগ–উৎকণ্ঠায় নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সদাজাগ্রত বলে পরিচিত জনশূন্য নিউইয়র্কের অবস্থা সত্যি নাজুক। রাজ্য গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো ২১ মার্চ রাজ্যে লকডাউন ঘোষণা দিতে গিয়ে বিমর্ষ চিত্তে বলেন, যদি একটি জীবনও রক্ষা করা যায়, তার জন্যই এমন সব উদ্যোগ।

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নগর ও পৌর সরকারগুলোর জন্য জরুরি অর্থ অবমুক্ত করা হচ্ছে। নিউইয়র্ক নগর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য নগদ সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি সপ্তাহ থেকেই ব্যবসার আকার ও কর্মচারী সংখ্যা অনুযায়ী সাহায্য ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে বলে মেয়র ঘোষণা দিয়েছেন।

এ ছাড়া আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিনা সুদে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ৭৫ হাজার ডলার ঋণ দেওয়া হবে। বিনা ভাড়ায় বাস ট্রেনে যাতায়াত সুবিধা দিচ্ছে নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন নগরী। প্রতিটি স্থানীয় সরকার অফিসে সার্বক্ষণিক হটলাইন খোলা হয়েছে। নাগরিকেরা যেকোনো সাহায্যের জন্য ফোন করলেই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে শহর ও নগরকেন্দ্রগুলো সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

কেন্দ্রীয় সরকার থেকে স্থানীয় সরকার পর্যন্ত তথ্য অবমুক্ত রাখা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভাইস প্রেসিডেন্টসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে নিয়ে প্রতিদিন দীর্ঘ সংবাদ সম্মেলনে হাজির হচ্ছেন। সাংবাদিকেরা প্রেসিডেন্ট প্রশ্নবাণে জর্জরিত করছেন। প্রেসিডেন্ট সাধারণত যেসব মার্কিন মিডিয়া হাউসের লোকজনকে দেখলেই ‘ফেক নিউজ’ বলে তাড়া করতেন, তাদের প্রশ্নের উত্তরও বিস্তারিত দিচ্ছেন। যদিও অভ্যাসবশত প্রতিদিনই কোন না কোন সাংবাদিকের প্রশ্নে প্রেসিডেন্টকে বিব্রত হতে দেখা যাচ্ছে।

রাজ্য সরকারগুলো প্রতিদিন পরিস্থিতি নিয়ে হালনাগাদ তথ্য দিচ্ছে। নাগরিকদের প্রতি নির্দেশনা ছাড়াও সংকট মোকাবিলায় প্রস্তুতি, সংকট ও সীমাবদ্ধতার কথা অকপটে জানানো হচ্ছে। সব ক্ষেত্রেই নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে। আক্রান্ত ব্যক্তি বা মৃত নাগরিকের নাম পরিচয় দেওয়া হচ্ছে না।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় আমেরিকার রাজনীতির দুই দল রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে কখনো ভালো সম্পর্ক গড়ে না উঠলেও এবার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। ডেমোক্র্যাট দলের আইন প্রণেতারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সংকট মোকাবিলায় একযোগে কাজ করছেন। নাগরিক সংকটের গভীরতার কারণেই হয়তো এই মুহূর্তে কোন ব্লেইম গেমে কোনপক্ষই জড়াচ্ছেন না।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে জোরালো ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে। সাম্প্রতিক সভ্যতার সবচেয়ে জটিল এই সংকটকে এভাবেই মোকাবিলা করছে বিশ্বের সবচেয়ে অগ্রসর দেশে দাবিদার আমেরিকা। প্রতিটি জীবন যাতে রক্ষা পায়, এর জন্য সরকার যেমন এগিয়ে এসেছে, তেমন নাগরিকরাও নিজেদের দায়বদ্ধতা নিয়ে এগিয়ে এসেছে।

এগিয়ে এসেছে সেবা সংস্থাসহ নানা চ্যারিটি সংস্থা। লোকজন ব্যক্তিগত পর্যায়েও এগিয়ে এসেছে। নগরকেন্দ্র ছাড়াও প্রান্তিক এলাকায় লোকজন নিজেদের নিরাপদ রেখে কেউ খাবার বিতরণ করছে, কেউ ওষুধপত্র বা গ্রোসারি পৌঁছে দিচ্ছে বাসাবাড়িতে। আমেরিকার রেডক্রস থেকে জানানো হয়েছে, তাদের মজুতে রক্তের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। রক্ত দাতাদের দ্রুত এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।

আমেরিকার সাবেক এক সেনাসদস্য নিউজার্সির জর্জ ওয়াকার আমেরিকার বসন্ত দিনের মেঘলা আকাশের দিকে তাকিয়ে মন্তব্য করলেন, ‘আমরা চাই না, আমাদের সমাধির ওপর মানবসভ্যতার ভিন্ন ইতিহাস রচিত হোক! ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করবেন।’