স্বামী-স্ত্রী ২৪০০, সন্তান পাবে ৫০০ ডলার

হোয়াইট হাউস ও কংগ্রেসের দুই কক্ষে আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নাগরিক সহযোগিতার সমঝোতা হয়েছে। সর্বশেষ ২৫ মার্চ সিনেটে ২ ট্রিলিয়ন ডলারের এই নাগরিক সহযোগিতা বিল পাস হয়েছে। কর্মহীন মানুষ, কোম্পানি ও বিভিন্ন রাজ্য সরকার এই সহযোগিতা তহবিল থেকে অর্থ পাবে। তবে আমেরিকার ইতিহাসের বৃহত্তম এই নাগরিক সুবিধা সরাসরি জনগণের হাতে পৌঁছতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানা গেছে।
৭৫ হাজার ডলারের নিচে বার্ষিক আয়ের মানুষ জনপ্রতি ১ হাজার ২০০ ডলারের এককালীন চেক পাবেন। চার মাসের জন্য বেকার ভাতা দেওয়া দেওয়া হবে। স্বামী-স্ত্রী বা দম্পতি মিলে পাবেন ২ হাজার ৪০০ ডলার। ১৭ বছর পর্যন্ত প্রতি সন্তান পাবে ৫০০ ডলার। বার্ষিক আয় ৭৫ হাজার ডলার থেকে ৯৯ হাজার ডলার পর্যন্ত কমতে থাকবে এবং বছরে এককভাবে যারা ৯৯ হাজার ডলার আয় করেন, তাঁরা কোন সহযোগিতার যোগ্য বলেই বিবেচিত হবেন না। আমেরিকার ৯০ শতাংশ মানুষই ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এই নাগরিক সুবিধাপ্রাপ্তির যোগ্য হবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

নাগরিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে কংগ্রেসের আইনে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের দেওয়া ঋণের পেমেন্ট স্থগিত রাখা হয়েছে। কর্মহীনদের জন্য চার মাসের ভাতা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। এসবের বাইরে ক্ষুদ্র ব্যবসায় ঋণ দেওয়া, এয়ারলাইনস কোম্পানিসহ বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানেও সহযোগিতার অর্থ আছে এই ফেডারেল অনুদানে।
বাড়ির মালিকদের ফেডারেল ব্যাক্‌ড মর্টগেজের বিলম্ব ফি দুই মাসের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। এ জন্য বাড়ির মালিকদের ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করত হবে। ভাড়াটেদেরও দুমাসের জন্য উচ্ছেদ করা যাবে না। তাদের ওপর বাড়ির মালিকেরা বিলম্ব ফি আরোপ করতে পারবে না। চার মাসের মধ্যে বাড়ি ছেড়ে দিতে ভাড়াটেদের বলতে পারবে না।
নিউইয়র্কে যারা কভিড–১৯ বা করোনাভাইরাসের কবলে পড়ে বিপর্যস্ত, তাদের জন্য সহযোগিতার নানা সূত্র দেওয়া হল। কর্মহীন লোকজনের বেকারভাতার আবেদন প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হচ্ছে। সবেতন পারিবারিক ছুটি দেওয়া হচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ফুড স্ট্যাম্পের আবেদন দ্রুততার সঙ্গে মঞ্জুর করা হচ্ছে। নিচের লিংকগুলো থেকে প্রয়োজনীয় সব আবেদন করা যাবে। নিজে না পারলে পরিবারের কারও সাহায্য নিয়ে আবেদন করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
https://paidfamilyleave.ny.gov/COVID19
https://www.cdc.gov/coronavirus/2019-ncov/index.html
ফুডস্ট্যাম্পের নিতে চাইলে https://a069-access.nyc.gov/accesshra/login এই ওয়েব সাইটে, জটিল মানসিক সমস্যার জন্য https://www1.nyc.gov/site/dfta/services/find-help.page যোগাযোগ করতে হবে। এ ছাড়া রয়েছে হটলাইন যার নম্বর হচ্ছে ২১২–২৪৪–৬৪৬৯।
ক্ষুদ্র ব্যবসায় সহযোগিতা ও ঋণ গ্রহণের জন্য https://www1.nyc.gov/…/busin…/covid19-business-outreach.page, নিউইয়র্কের শিক্ষা বিভাগে শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার জন্য বিনা মূল্যে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের জন্য https://coronavirus.schools.nyc/RemoteLearningDevices এই ওয়েবসাইটে যোগাযোগ করতে পারেন। কারও ঘরে ইন্টারনেট না থাকলে বিনা মূল্যে ইন্টারনেট পাওয়ার জন্য ৮৪৪–৪৮৮–৮৩৯৫ এই নম্বর যোগাযোগ করতে পারেন।
এছাড়াও যাদের অভিবাসন কাগজপত্রে জটিলতা আছে, বৈধ কাগজপত্র নেই, তারা নানা চ্যারিটিতে সাহায্যের আবেদন করতে পারবেন। এসব সহযোগিতার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোন অভিবাসন পরিচয় জিজ্ঞাসা করা হয় না। এসব চ্যারিটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ক্যাথলিক চ্যারিটিজ কমিউনিটি সার্ভিস (যোগাযোগের নম্বর ১–৮৮৮–৭৪৪–৭৯০০), ইমিগ্রান্ট অ্যান্ড রিফিউজি সার্ভিসেস, (ইমেইল [email protected], ফোন নম্বর ২১২–৪১৯–৩৭০০), যোগাযোগ করতে পারেন এনওয়াসি ওয়েল (৮৮৮–৬৯২–৯৩৫৫)।
মানবিক নগর নিউইয়র্কে সংকটেও হতাশ হবেন না। ৩১১ নম্বর কল দিন যেকোনো প্রয়োজনে। ২৮ ঘণ্টা খোলা এ নম্বর থেকে দ্রুততার সঙ্গে আপনাকে পরামর্শ দেওয়া হবে করণীয় সম্পর্কে। ইংরেজি না জানলেও কথা বলতে পারবেন। এ ছাড়া কমিউনিটির নানা লোকজন সাহায্যের জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। নিউইয়র্কে যেকোনো সংবাদ কর্মীদের ফোন করতে পারেন। ২৪ ঘণ্টা কর্মতৎপর এসব সংবাদকর্মীও দ্রুত আপনাকে পরামর্শ দিয়ে করণীয় নিয়ে পরামর্শ দিতে পারবেন।