'মা-বাবাকে বলো না, তাঁরা দুশ্চিন্তা করবেন'

ম্যানহাটন হাসপাতালের নার্স ম্যানেজার কিউস কেলি। ছবি: সংগৃহীত
ম্যানহাটন হাসপাতালের নার্স ম্যানেজার কিউস কেলি। ছবি: সংগৃহীত

করোনায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য চিকিৎসা দিতে গিয়ে নিউইয়র্কে মারা গেছেন ম্যানহাটনের একটি হাসপাতালের নার্স ব্যবস্থাপক কিউস কেলি। মৃত্যুর আগে বোনকে একটি হৃদয়বিদারক বার্তা পাঠিয়েছিলেন তিনি। এতে লেখেন, ‘আমি করোনভাইরাসে আক্রান্ত, নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে আছি। অনেক কষ্টে বার্তাটি লিখছি, কিন্তু কথা বলতে পারছি না।’

১৮ মার্চ পাঠানো ওই বার্তায় বোন মারিয়া প্যাট্রিস শেরনকে কেলি লিখেছিলেন, ‘আমি ঠিক আছি, মা-বাবাকে বলো না। তাঁরা দুশ্চিন্তা করবেন।’

এটিই ছিল কেলির শেষ বার্তা। এরপর এক সপ্তাহের কম সময়ে তিনি মারা যান।

মহামারি করোনার ভয়াল তাণ্ডবে বিপর্যস্ত বিশ্ব। ইতালি, স্পেনের পর সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের। দেশটিতে এরই মধ্যে করনায় আক্রান্ত ৮৫ হাজারের বেশি। মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৩০০ জনের। নিউইয়র্ক সিটিতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৩৯ হাজার ছুঁই ছুঁই। সেখানে মারা গেছেন ৪৬৬ জন। শহরের হাসপাতালগুলোর জরুরি সেবাকক্ষ, এমনকি ফ্লোরেও জায়গা নেই। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের সংকট দেখা দিয়েছে। লাশের স্তূপ জমছে। নার্সদের জন্যও মাস্কসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না থাকার কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকে হাসপাতালে কাজ করছেন। রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান কিউস কেলি।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে কোনো নার্সের মৃত্যুর ঘটনা এটাই প্রথম। এ ঘটনার পর কেলির বোন জানান, তাঁর হাঁপানি হয়েছিল, তবে অন্য কোনো রোগ ছিল না।

মারিয়া প্যাট্রিস ফেসবুকে বলেন, ‘আমার ভাই সুস্থ ছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় কেলির মৃত্যু হয়েছে। তারা চাইলে তাকে বাঁচাতে পারত।’

কেলির সহযোগী নার্সরাও তাঁর মৃত্যুতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ করেন, নার্সদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ মাস্কসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নেই। সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস