জর্জিয়ায় করোনায় মৃত ৭৯, আক্রান্ত দুই সহস্রাধিক

লকডাউন আতঙ্কে জর্জিয়ার গ্রোসারিগুলোতে কেনাকাটায় মানুষের ভিড়। ছবি: প্রথম আলো
লকডাউন আতঙ্কে জর্জিয়ার গ্রোসারিগুলোতে কেনাকাটায় মানুষের ভিড়। ছবি: প্রথম আলো

আমেরিকার জর্জিয়ায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৭৯ জনের। ২৮ মার্চ সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৪৪৬ জন। আর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে ৬৬০ জন। জর্জিয়া ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথ এই তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে পুরো আমেরিকায় বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছুঁই ছুঁই। মৃতের সংখ্যাও প্রায় ৩১ হাজার। তবে জর্জিয়ার অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে।

সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি জর্জিয়ার ফুলটন কাউন্টিতে। এই কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭৮ জন, আর মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডিক্যাব। এখানে আক্রান্তের সংখ্যা ২৪৬, মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। এ ছাড়া ডহার্টি কাউন্টিতে আক্রান্ত হয়েছে ২২৪ জন, মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের।

জর্জিয়া ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত প্রায় ১১ হাজার মানুষের করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করা হয়েছে। ২২ দশমিক ০২ শতাংশের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সের রোগী আছে ৫৬ শতাংশ। আর ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে রোগীদের ক্ষেত্রে শতকরা ৩৪ জন শনাক্ত হয়েছে।

জর্জিয়ার ফুলটন কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭৮, মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের, ডিক্যাব কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২৪৬, মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের, ডঘের্টি কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২২৪, মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের, কব কাউন্টিতে আক্রান্ত ১৮৫, মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের, ফাইট কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২৬, মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের, কাউটা কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২০, মৃত্যু হয়েছে ২, ক্লার্ক কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫, মৃত্যু হয়েছে ২ জনের এবং টেরেল কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১০, মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।

এ ছাড়া গুইনেট কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩১, বার্টন কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১১৭, ক্লেটন কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৭, চেরোকি কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৪, হেনরি কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০, লি কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯, ডগলাস কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫, ফ্লয়েড কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২৭, ফোরসাইট কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২২, লন্ডেস কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২০, রকডেল কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭, আর্লি কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৬, গর্ডন কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪, হিউস্টন কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩, পিকেন কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫, ট্রুপ কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৯, ওর্থ কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ এবং ব্যারো কাউন্টিতে ৭ জন আক্রান্ত হয়েছে। এসব কাউন্টিতে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে একজন করে।

বিবে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩, পালডিংয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ২০, টিফটে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩, কলম্বিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ১২, রিচমন্ডে আক্রান্তের সংখ্যা ১২, স্পালডিংয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১১, ওকোনিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১০, পোলকে আক্রান্তের সংখ্যা ১০, মাস্কোজিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৮, চ্যাথামে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫, মিশেলে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫, নিউটনে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫, ব্রায়ানে আক্রান্তের সংখ্যা ৭, কফিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৭, গ্লেন, টমাস, ক্রিস্প ও পিচে আক্রান্তের সংখ্যা ৬, হুইটফিল্ড ও বাটসে আক্রান্তের সংখ্যা ৫, কলিকিটে আক্রান্তের সংখ্যা ৫, আপসনে আক্রান্তের সংখ্যা ৫, ওয়্যারে আক্রান্তের সংখ্যা ৫, ডিকেটরে আক্রান্তের সংখ্যা ৪, এফিংহামে আক্রান্তের সংখ্যা ৪, ল্যাপকিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৪, মিলারে আক্রান্তের সংখ্যা ৪, বার্কে আক্রান্তের সংখ্যা ৩, ক্যালহাউনে আক্রান্তের সংখ্যা ৩, ক্যাটোসায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩, হলে আক্রান্তের সংখ্যা ৩১, ফ্যানিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৩, ইরভিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৩, লিবার্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩, লিংকনে আক্রান্তের সংখ্যা ৩, ম্যাডিসনে আক্রান্তের সংখ্যা ৩, মেরিওথের আক্রান্তের সংখ্যা ৩, মনরোতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩, পুলাস্কিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩, ক্যারলে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৪, র‍্যান্ডলপে আক্রান্তের সংখ্যা ৩, সেমিনোলে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ ও স্টিফেনসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ জন।

ক্রেতাহীন একটি অফিস ডিপোর্ট। ছবি: প্রথম আলো
ক্রেতাহীন একটি অফিস ডিপোর্ট। ছবি: প্রথম আলো

এ ছাড়া বাল্ডউইন, বেন হিল, ক্যামডেন, ডসন, ফ্রাঙ্কলিন, হারালসন, হ্যারিস, জ্যাকসন, জ্যাসপার, জোন্স, লামার, মারে, পিয়ার্স, টটনল, টার্নার, টুইগস, ওয়ালটন ও ওয়াশিংটনে দুজন করে আক্রান্ত হয়েছেন।

বেকার, বুলোচ, চার্লটন, চাটাহোচি, ক্লিঞ্চ, ডজ, গ্রিন, হার্ট, হিয়ার্ড, জেনকিন্স, লং ম্যাকন, ম্যাকডুফি, মরগান, পাইক, টেলর, টমবস, হুইলার, হোয়াইট ও উইলকস কাউন্টিতে একজন করে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পুরো রাজ্য লকডাউন বা অবরুদ্ধ ঘোষণা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। এ আতঙ্কে অনেকেই খাদ্য সামগ্রী কিনে মজুত করে রেখেছে। দোকানগুলো প্রায় খালি পড়ে আছে। ক্লাব বার ব্যাংক ও রেস্তোরাঁগুলো বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনেকেই স্বেচ্ছায় গৃহবন্দী জীবন কাটাচ্ছে। জর্জিয়া প্রায় ২৪ হাজার বাংলাদেশি বাস করে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশি কারও আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

জর্জিয়া বিএনপি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন সামগ্রী ও খাদ্য সামগ্রী বিনা মূল্যে বিতরণ করছে। জর্জিয়া বিএনপির সভাপতি নাহিদুল খান প্রথম আলো উত্তর আমেরিকাকে বলেন, তাঁদের পক্ষ থেকে সাবান, হ্যান্ড গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্কসহ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে তাঁরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকেও প্রচার করেছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব জর্জিয়া খাদ্য সামগ্রী বিতরণের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বলে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা মাহমুদ জানিয়েছেন।