৯৯ বছর বয়সে করোনাজয়

করোনাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন ৯৯ বছর বয়সী রুবেন হুভা। মেয়ে লিন্ডা হরস্পুলের ছবিতে উজ্জীবিত বাবা। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া
করোনাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন ৯৯ বছর বয়সী রুবেন হুভা। মেয়ে লিন্ডা হরস্পুলের ছবিতে উজ্জীবিত বাবা। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

সেঞ্চুরিটা এবার করেই ফেলবেন রুবেন হুভা। না, ক্রিকেট মাঠে ব্যাট হাতে তিনি নামেননি কোনো দিন। ক্রিকেট নামের খেলার নামও এই কানাডীয় শুনেছেন কি না সন্দেহ। শুনলেও কিছুতেই মনে করতে পারবেন না নিশ্চিত। গুনে গুনে ৯৯ বছর পার করেছেন হুভা। ডিমেনশিয়ার জেরে আজকাল আর ঠিকঠাক মনে করতে পারেন না কিছুই। হুইলচেয়ার ছাড়া বলতে গেলে অচল। শেষ বয়সে ঠাঁই হয়েছে রিটায়ারমেন্ট হোম, মানে কিনা অবসরযাপন কেন্দ্রে। তো সেই মানুষটাকে যখন করোনাভাইরাসের মতো দুষ্ট রোগে ধরল, সবাই একরকম ধরেই নিয়েছিলেন, এবার হুভার চাপ নিতে পারবেন না।

প্রথমে খানিক খুসখুসে কাশি। তারপর জ্বর জ্বর ভাব। খানাপিনায় অরুচি। হুভা ভেবেছিলেন, একটু ঠান্ডা লেগেছে তাঁর। কিন্তু পরীক্ষা করানোর পরই এল বিরাট দুঃসংবাদ। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। করোনার জেরে হঠাৎ করে নিজের ঘরে রীতিমতো বন্দী হয়ে পড়লেন বয়স্ক মানুষটা। বাইরে যাওয়া একদম বারণ। হুভা ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেন না কিছুই। আচমকা কেন এই দুর্ভোগ তাঁর কপালে।

তিন কুলে বুড়ো মানুষটার খুব আপন বলতে মেয়ে লিন্ডা। এই লিন্ডাই একমাত্র ভয়ডর ভুলে, গাউন আর দস্তানা পরে দেখতে আসতেন বাবাকে। আর বাকিরা তত দিনে মোটামুটি হুভাকে ‘শেষ দেখা’ দেখে গেছে বন্ধ জানালার ওপাশ থেকে।

‘১১ মার্চ বাবার অসুখটা ধরা পড়ল। আমরা মোটামুটি তৈরি হয়ে গিয়েছিলাম। ধরেই নিয়েছিলাম বাবাকে আর ফিরে পাব না।’ বলছিলেন অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক লিন্ডা। কিন্তু হুভা যে অন্য ধাতুতে গড়া, সেটা তো আর করোনাভাইরাস জানে না। করোনার সঙ্গে জোরদার লড়াই শেষে শেষমেশ হুভা ফিরেছেন বিজয়ীর বেশে। ২৫ মার্চ চিকিৎসকেরা জানান, এখন পুরোপুরি করোনামুক্ত হুভা।

‘আমি আবার আগের মতো ফুরফুরে মেজাজে ফেরত গিয়েছি।’ রোগমুক্তির পর বলেছেন কানাডার পশ্চিম ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার এই বাসিন্দা।

‘নার্ভাস নাইনটি নাইন’ হয়তো একেই বলে। সেটা কাটিয়ে উঠে এবার নিশ্চিত সেঞ্চুরির পথে রুবেন হুভা। সব ঠিক থাকলে আগামী ডিসেম্বরেই শততম জন্মদিন উদ্‌যাপন করবেন তিনি।

তথ্যসূত্র: সিবিসি নিউজ