করোনা চিকিৎসায় হাইড্রোক্সিক্লরোকুইন কতটা নিরাপদ

আমেরিকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের অপরীক্ষিত ওষুধ হিসেবে হাইড্রোক্সিক্লরোকুইন দেওয়ায় অনেকের মৃত্যু হচ্ছে বলে মেডিকেল কমিউনিটিতে আলোচনা হচ্ছে।

আমেরিকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিমা কোম্পানিদের এইচএমও (হেলথ মেইনট্যানেন্স অর্গানাইজেশন) পুরো চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ করে। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই ম্যালেরিয়া রোগে ব্যবহার করা এ ওষুধ নিউইয়র্কের হাসপাতালে কতটা প্রয়োগ করা হচ্ছে, এ নিয়ে কোনো তথ্য এখন আর জানা যাচ্ছে না। এ অপরীক্ষিত ওষুধ আগ্রাসীভাবে প্রয়োগের ফলেই কোনো কোনো রোগীর মৃত্যু হচ্ছে কি না, এ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। একের পর এক রোগী হাসপাতালে যাচ্ছে, আর লাশ হয়ে বেরিয়ে আসছে।

নিউইয়র্কের বেশ কিছু রোগী ও তাঁদের স্বজনদের উদ্বেগ নিয়ে বিষয়টি প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার পক্ষ থেকে জানার চেষ্টা করা হয়। ফিলাডেলফিয়ার ড্রেক্সেল ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক জিয়াউদ্দিন আহমেদ এ–সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন, নিউইয়র্কে করোনাভাইরাসের রোগীদের ওপর হাইড্রোক্সিক্লরোকুইন ব্যবহার করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত হাইড্রোক্সিক্লরোকুইন একমাত্র ওষুধ, যা এই রোগে কাজ করতে পারে।

জিয়াউদ্দিন আহমেদ বলেন, হাইড্রোক্সিক্লরোকুইন ব্যবহারের জন্য রোগীর হার্টের অবস্থা চিকিৎসকেরা অবশ্যই বিবেচনায় নিয়ে থাকেন। এ ওষুধের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকজন মারা পড়ছে কি না, এ নিয়ে কোনো তথ্য নেই। তিনি বলেন, এ নিয়ে চূড়ান্ত কোনো মতামত দেওয়ার আগে আরও স্টাডি করার সুযোগ আছে। এখন এসব নিয়ে দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই এ ব্যাপারে ভালো তথ্য উন্মুক্ত হবে বলে তিনি মনে করেন।

বাংলাদেশি চিকিৎসক নাহিদ খান নিউইয়র্কের বাস্তব পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছেন, হাসপাতালে যাবেন না। বাসায় থাকুন। হাসপাতাল থেকে ফিরে আসছে না অনেক বাংলাদেশি। যন্ত্রপাতির এই সংকটে সবাইকে সবকিছু দেওয়া যাচ্ছে না অথবা সময়ের আগেই অন্যের জন্য বরাদ্দ করতে হচ্ছে। কিছু রোগী সাময়িক ভালো হচ্ছে, আবার খারাপ হয়ে যাচ্ছে। হাইড্রোক্সিক্লরোকুইন ম্যালেরিয়ার ওষুধ, দীর্ঘকাল থেকে তা রিউমাটয়েড আর্থরাইটিস রোগেও ব্যবহৃত হতো। এবার হয়তো কোভিড-১৯–এ ব্যবহার করা হবে।

নাহিদ খান বলেন, মনোবল রাখুন। বিশ্বাস করুন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আপনার ভালো হওয়ার সুযোগ আছে। ভয় পাওয়া এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা।

আমেরিকার চিকিৎসা আইন অনুযায়ী, রোগী সচেতনভাবে তাঁর ওপর কোনো ড্রাগের প্রয়োগ প্রত্যাখ্যান করতে পারেন। চিকিৎসায় অবহেলা বা ভুল চিকিৎসার জন্য এখানে ক্ষতিপূরণ আইনও বেশ শক্ত ও কার্যকর।