'আমরা এখন আত্মঘাতী মিশনে'

কেলি ক্যাব্রেরা। ছবি: সংগৃহীত
কেলি ক্যাব্রেরা। ছবি: সংগৃহীত

নিউইয়র্কে জ্যাকবি মেডিকেল সেন্টারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা দেওয়া জ্যেষ্ঠ নার্স কেলি ক্যাব্রেরা বলেন, ‘এই হাসপাতালে আমরা নার্স ও চিকিৎসকেরা এখন আত্মঘাতী মিশনে আছি। কারণ, আমাদের ব্যক্তিগত সুরক্ষার সরঞ্জামের চরম সংকট এখানে।’

নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়, জ্যাকবি মেডিকেল সেন্টার নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে অবস্থিত। নার্স কেলি ক্যাব্রেরা এই হাসপাতালে পাঁচ বছর ধরে কাজ করছেন।

কেলি ক্যাব্রেরা বলেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এই সপ্তাহান্তে আমাদের একজন সহকর্মী নার্সের মৃত্যু হয়েছে। এখন আমরা নিজেরাই নিজেদের অসুস্থ হওয়া দেখছি। তাহলে আমাদের বদলে কে আসবে এখানে সেবা দিতে?’

কেলি ক্যাব্রেরা বলেন, ৩১ মার্চ এই হাসপাতালের একজন চিকিৎসক সহকর্মী শ্বাসকষ্টসহ কোভিড-১৯–এর লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘লক্ষণ নিয়েও তিনি (ওই চিকিৎসক) বাসায় অপেক্ষা করছিলেন। আমরা অন্য রোগীদের যা যা করতে বলি, তিনি বাসায় সেসবই অনুসরণ করছিলেন। একপর্যায়ে তিনি শ্বাস নিতে পারছিলেন না। এ রকম রোগী সামনে থেকে দেখা অনেক কষ্টের। আর নিজেদের মধ্যে কাউকে এমন অবস্থায় দেখাটা আরও কষ্টের।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, কেলি ক্যাব্রেরা জানিয়েছেন, তাঁর হাসপাতালে সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন ১২ ঘণ্টার শিফট চালু হয়েছে। সকাল সাতটা থেকে রাত সাড়ে সাতটা পর্যন্ত কাজ করে যেতে হয়। কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সামাল দিতে মাঝেমধ্যে আরও বেশি সময় কাজ করতে হচ্ছে।

কেলি ক্যাব্রেরা বলেন, ‘আমরা আত্মঘাতী মিশনে আছি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতেও রক্ত। এর বেশি আমি আর কিছু বলতে পারছি না।’ তিনি বলেন, চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের ঘাটতি নিয়ে খবর প্রচারিত হচ্ছে। অথচ এসব বার্তা ফেডারেল সরকারের কাছে যাচ্ছে কি না, জানা নেই।

জ্যাকবি মেডিকেল সেন্টারের এই নার্স বলেন, বেশ কয়েকজন চিকিৎসক নিজেরাই নিজেদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম কিনেছেন। আর নার্সরা বিভিন্ন কমিউনিটি গ্রুপ থেকে দান করা সরঞ্জামের ওপর নির্ভর করেই চলছেন। তবে অনেকেই এই সরঞ্জাম ছাড়াই সেবা দিচ্ছেন। এতে স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগী সবাই সংক্রমণের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন।

নিউইয়র্ক নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক প্যাট কানে বলেন, ‘আমাদের নার্সরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিনই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এই ভাইরাসের কারণেই আমরা আমাদের তিন সহকর্মীকে হারিয়েছি।’