নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমদের করোনায় মৃত্যু

কামাল আহমদ
কামাল আহমদ

নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির দুবারের সভাপতি কামাল আহমদ (৬৯) মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। নিউইয়র্ক নগরীর কুইন্সের এলমহার্স্ট হাসপাতালে আজ রোববার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর গত কয়েক দিন তিনি এলমহার্স্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

বাংলাদেশে কামাল আহমদের বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার বাউরভাগ গ্রামে। নিউইয়র্কের বাঙালি কমিউনিটিতে তিনি আস্থাভাজন লোক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে কমিউনিটির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত কামাল আহমদ নিউইয়র্কের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

দেশে থাকতেই রাজনীতিসহ বিভিন্ন সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কামাল আহমদ। প্রবাসী হওয়ার পর জড়িয়ে পড়েন কমিউনিটির নানা কাজে। ২০১১ সালে বাংলাদেশ সোসাইটির বোর্ড সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালে প্রথম সোসাইটির সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১৭ সালে দ্বিতীয় দফায় তিনি সোসাইটির সভাপতির দায়িত্ব নেন।

কামাল আহমদের মৃত্যুতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর ছবি পোস্ট করে অনেকেই শোক বাণী, শ্রদ্ধা, স্মৃতিচারণ ও তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছেন।

একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে নিউইয়র্কে স্বদেশিদের যেকোনো সমস্যায় ছুটে যেতেন কামাল আহমদ। কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের সমস্যা থেকে শুরু করে, বিদ্বেষমূলক অপরাধসহ নানা সমস্যায় পড়া স্বদেশিদের খোঁজ খবর নিতেন তিনি। সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ সোসাইটির দায়িত্ব নেওয়ার আগে তিনি দুই দফা নিউইয়র্কে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তাঁর উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় ফিলাডেলফিয়া নগরে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন নিজস্ব বাড়ি ক্রয় করে।

কামাল আহমদের বাবা জিয়া উদ্দিন আহমদ পারিবারিক ভিসায় ১৯৭৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। ২৬ বছর বয়সে কামাল আহমেদ পারিবারিক অভিবাসনে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন।

প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার একজন পৃষ্ঠপোষক ছিলেন কামাল আহমদ। তাঁর মৃত্যুতে নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র প্রবাসীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। লকডাইনের নগরী নিউইয়র্কে এর আগে তাঁর অসুস্থতার সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছিল। চিকিৎসার দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। রাতভর কোরআন খতম হয়েছে। প্রবাসীরা ফোন কনফারেন্সের মাধ্যমে সম্মিলিত মোনাজাত করে কামাল আহমদের রোগমুক্তি কামনা করেছেন। কিন্তু সব চেষ্টাই ব্যর্থ করে তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে।