করোনা থেকে মুক্তি মিলবে কবে

ছবি: রয়টার্স
ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ কি আবার স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরতে পারবে? জীবনযাত্রা স্বাভাবিক কবে হবে? এমন প্রশ্ন এখানকার মানুষের মনে।

করোনাভাইরাসে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত নিউইয়র্ক। নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটির ওপরও করোনার খড়গ নেমে এসেছে। করোনা লন্ডভন্ড করে দিয়েছে অনেক প্রবাসী পরিবার। এখনো চলছে করোনার তাণ্ডব।

নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যুমো প্রতিদিন প্রেস ব্রিফিংয়ে মানুষকে আপডেট দিচ্ছেন। খুব সাবধানতা অবলম্বন করছেন তিনি, যাতে মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া না হয়।

মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিন আগের দিনকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তবে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। হাসপাতালে নতুন ভর্তি এখন কম। নিবিড় পর্যবেক্ষণে করোনা রোগীর ভর্তি কমছে।

এসব দেখে ও অন্যান্য মডেল অনুসরণ করে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, সামনের দিনগুলোয় করোনায় মৃত্যুর সংখ্যাও কমবে।

তবে মৃত্যুর সংখ্যা কমতে না দেখে এমন আশার কথা শুনেও মানুষ শান্তি পাচ্ছে না। শান্তি পাওয়ার কথাও নয়। কারণ, এত আক্রান্ত, এত মৃত্যুর শেষ কোথায়, তা কেউ বলতে পারছে না। ফলে মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়ছে।

ভ্যাকসিনের কথা শোনা যাচ্ছে। তবে কার্যকরভাবে সাধারণ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন কবে সহজলভ্য হবে, সেই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তরের অপেক্ষায় মানুষ।

বিল গেটস একাধিক ভ্যাকসিন গবেষণায় অর্থায়ন করেছেন, যার অন্তত একটি সফলতার দ্বারপ্রান্তে বলে জানা গেছে। এটি মানুষের শরীরে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ শুরু হয়েছে। তবে কবে নাগাদ এফডিএ অনুমোদন পাবে, তা পরিষ্কার নয়।

সেই পর্যায়ে পৌঁছাতে এক বছর থেকে ১৮ মাস সময় লাগতে পারে। তখন তা সাধারণ মানুষের জন্য ব্যবহার উপযোগী হবে।

করোনাভাইরাসে মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত নিউইয়র্ক। ছবি: রয়টার্স
করোনাভাইরাসে মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত নিউইয়র্ক। ছবি: রয়টার্স

বিল গেটস বলেন, সম্ভবত ২০২১ সালের ফল (হেমন্ত) সিজনের আগে কোভিভ-১৯ থেকে নিরাপদ হতে পারবে না মার্কিন নাগরিকেরা। পিবিএস নিউজ আওয়ারের জুডি উডরাফের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ৭ এপ্রিল এ কথা বলেন বিল গেটস।

সে সময় পর্যন্ত মানুষ কী করবে? এ বিষয়ে গভর্নর ক্যুমো বলেন, ‘আমাদের সামাজিক দূরত্বের রীতি পালন করেই চলতে হবে। আমরা গতকালে আর ফিরে যেতে পারব না।’

নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। অভাবনীয় অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন আমরা। এই ক্ষতি কীভাবে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে? ক্যুমো বলেন, ‘এখন আমাদের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হচ্ছে মানুষের মৃত্যু ও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া। এটাকে আগে রোধ করতে হবে।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চান, মানুষ দ্রুত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ফিরে যাক। সুযোগ বুঝে এমন তাগিদ দিচ্ছেন তিনি।
নানা অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ট্রাম্পের সঙ্গে একমত হচ্ছেন না। এমনকি তাঁর প্রসাশনের বিশেষজ্ঞরাও এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করছেন।

এতে অ্যালার্জি ও সংক্রামক ব্যাধি কেন্দ্রের পরিচালক ফাউচিরও দ্বিমত। তাঁর মতে, ‘এ বিষয়টি আমরা নয়, বরং করোনাই ঠিক করবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের এক কোটির বেশি মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। বেকার ভাতার আবেদনের সংখ্যা স্মরণকালের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। এক মাসের বেশি হয়ে গেছে, মানুষের কাজ নেই। সঞ্চয়ের সব শেষ হয়ে আসছে। মানুষ কী করবে? ঘরভাড়া যদিও আপাতত না দিলে চলবে। কারণ, আইন অনুযায়ী, নিউইয়র্ক নগরীর কেউ তিন মাস পর্যন্ত বাড়ি ভাড়া না দিতে পারলেও ভাড়াটেকে উচ্ছেদ করা যাবে না।

তবে মানুষ খাবে কী? সহায়তা চেকের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে নিউইয়র্কের মানুষ। শোনা যাচ্ছে, আগামী সপ্তাহের শুরু থেকে করোনা সহায়তার অর্থ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি জমা হতে থাকবে।