চিয়ার্স টু জেনি

জেনি স্টেজনা। বয়স তার ১০৩ বছর। পোলিশ আমেরিকান। ম্যাসাচুসেটসের বাসিন্দা। উইলব্রাহাম শহরের ‘লাইফ কেয়ার সেন্টার’ নার্সিংহোমে বাস করেন। তাও প্রায় সাত বছর হয়ে গেছে।
জেনির বিশাল পরিবার। দুই সন্তান, নাতি-নাতনি, তাদের ঘরের বাচ্চাকাচ্চারা। নাতি-পুতিরা সবাই তাকে খুব ভালোবাসে। কিন্তু ব্যতিব্যস্ত জীবনে কারুরই সময় হয় না, এই শতবর্ষী নারীকে যথাযথভাবে দেখভাল করার। তাই শেষ সময়টুকু তাঁর কাটছে বৃদ্ধাশ্রমে।
বোস্টন স্পোর্টসের বিরাট ফ্যান জেনি এখন বয়সের ভারে চোখে দেখতে পায় না। শরীরও দুর্বল। কিন্তু মনের দিক থেকে একেবারে অদম্য। প্রতিদিন নিজের পুরোনো ট্রানজিস্টর রেডিওটিতে একাগ্র মনে ‘রেড সক্স গেম’ তার শোনা চাই। নার্সিংহোমের সবাই তার এই প্যাশনের কথা জানে। মাঝেমধ্যে জেনি অন্যদের নামে অভিযোগও করেন। ‘লোকজন কথা বলে এতটা সময় নষ্ট করে। অথচ মনোযোগ দিয়ে খেলা শোনে না।’
একদিন হঠাৎ করেই জেনির শরীর খারাপ হয়ে পড়ল। টেস্টে তার করোনা পজিটিভ এল। কোভিড-১৯ কী তা বুঝতে না পারলেও বুঝতে পারলেন, তিনি গুরুতর অসুস্থ। নার্সিং হোমের আরও কয়েকজন অধিবাসীও অসুস্থ হয়ে পড়ল। চিকিৎসা শুরু হল।
একসময় জেনির অবস্থার দ্রুত অবনতি হলে পরিবারের সদস্যদের তা জানানো হল। জেনিকে শেষবারের মত ‘গুডবাই’ বলার জন্য ভিডিওকলের অনুমতি পেল অশ্রুসজল স্বজনেরা।
হঠাৎ পরিবার ও চিকিৎসকদের অবাক করে দিয়ে চোখ মেলে তাকালেন জেনি। ফিরে এলেন নতুন জীবনে। তিন সপ্তাহেই সুস্থ হয়ে উঠলেন। এক সুন্দর দিনে জেনিকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা হল। করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করে জেনিই প্রথম নার্সিংহোমের সুস্থ হয়ে ওঠা রোগী।
জেনিকে উইশ করার আয়োজন করল নার্সিংহোমের কর্মীরা। জেনির প্রিয় একটি জিনিস উপহার দিয়ে তারা তাকে উইশ করতে চাইল। জেনি বললেন, ‘আমি আমার প্রিয় “বাড লাইট” বিয়ার খুলে চিয়ার্স করতে চাই।’ এল এক বোতল ‘বাড লাইট’। জেনি নিজেই সশব্দে সেই বোতল খুলে চুমুক দিলেন বিয়ারের ঠান্ডা বোতলে। চিয়ার্সের সেই মুহূর্তটি ক্যামেরাবন্দী হয়ে গেল।
নাতনি শেলীর ইনস্টাগ্রাম পোস্ট থেকে ছবিটি নিমেষেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেল।
খবরটি বিয়ার ব্র্যান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করল। তারাও রিটুইট করে জানাল, ‘তোমার পরের বিয়ারটি আমাদের ওপর রয়েছে, জেনি।’