করোনার সঙ্গে লড়ে ৫৪ দিন পর বাড়ি ফেরা

এত অস্থিরতা, অশান্তির মধ্যেও কিছু কিছু ঘটনা আমাদের নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শেখায়। নিউইয়র্কের স্ট্যাটেন আইল্যান্ডবাসী এমনই একটি মর্মস্পর্শী ঘটনা দেখেছে। স্ট্যাটেন আইল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিন্সেস বে ক্যাম্পাস থেকে ৫৪ দিন করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে জয়ী হয়ে একজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
এপ্রিলের শুরুতে ৬৪ বছর বয়সী রোজমেরি (রোজী) কুচিনস্কির করোনাভাইরাস পজিটিভ ধরা পড়ে। অল্প দিনের মধ্যে ডিহাইড্রেশন দেখা দিলে চিকিৎসার জন্য তিনি তার এলটিংভিলের বাড়ি থেকে হাসপাতালের যান। তবে এটি তার কোভিড-১৯ সংক্রমণের শুরুর কথা। স্ট্যাটেন আইল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পরীক্ষার পর কুচিনস্কিকে দুই সপ্তাহ অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছিল। দুর্ভাগ্যক্রমে শুধু অক্সিজেন তাঁর জন্য পর্যাপ্ত ছিল না। ভেন্টিলেটর তাঁকে এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করবে, পরিবারের সদস্যরা এমনই আশা করেছিলেন।
রোজীর স্বামী ম্যাথু কুচিনস্কি বলেন, আমাদের জন্য এটি একটি খুব অন্ধকার এবং ভীতিকর সময় ছিল। সারাক্ষণ আমরা উদ্বিগ্ন ছিলাম এই ভেবে, সে আর ফিরে আসবে কিনা। তিনি ২৪ দিন ভেন্টিলেটরে কাটিয়েছিলেন। তবে পরিবার আশা ছাড়েনি। কুচিনস্কির মেয়ে ডায়না ম্যাকমাহন বলেন, তারা আশাবাদী ছিলেন এবং প্রার্থনা করেছিলেন যাতে তার মা হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন। একদিন হঠাৎ করেই ম্যাকমাহন লক্ষ্য করেন, তার মা সুস্থ হতে শুরু করেছেন।
দীর্ঘ চিকিৎসার পর করোনাভাইরাস পরীক্ষায় দুইবার নেগেটিভ আসায় ডাক্তার তার পরিবারের সদস্যদের বলেন, তিনি এখন বাড়ি ফিরে যেতে পারেন। ৫৪ দিন পর ২৯ মে হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ার সময় হাসপাতালে কর্মীরা তাকে উৎসাহিত করেছিলেন। হাসপাতালের বাইরে তার পরিবারের বিপুলসংখ্যক সদস্য তাকে এক নজর দেখার জন্য অপেক্ষায় ছিল। তাঁর পরিবার একটি ড্রাইভ বাইয়ের ব্যবস্থা করেছিল, যেখানে এক শরও বেশি লোক এই অলৌকিক ঘটনার প্রতি ভালোবাসা এবং সমর্থন জানাতে উপস্থিত হয়েছিলেন।
পরিবারের সদস্যরা বলেন, কুচিনস্কির বেঁচে ফেরার এই সংবাদটি তাদের খুব প্রয়োজন ছিল। কারণ, ইতিমধ্যে তিনি হাসপাতালে থাকাকালে তার শ্বশুর অ্যান্টনি (টনি) কুচিনস্কি মারা যান। তাঁর স্বামী ম্যাথু কুচিনস্কি অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেন, ‘আমাদের জন্য এ দুটি মাস ছিল ভয়াবহ। আমরা সৃষ্টিকর্তার কাছে অনেক প্রার্থনা করেছি এবং তিনি আমাদের প্রার্থনার জবাব দিয়েছেন।’