নিউইয়র্কে লকডাউন নিয়ে গভর্নর-মেয়রের দ্বন্দ্ব

নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো ও নগরীর মেয়র বিল ডি ব্লাজিও। ছবি: রয়টার্স
নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো ও নগরীর মেয়র বিল ডি ব্লাজিও। ছবি: রয়টার্স

নিউইয়র্কে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে এবার রাজ্য গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো ও নগরীর মেয়র বিল ডি ব্লাজিওর মধ্যে বচসা শুরু হয়েছে। গভর্নর কুমো বলেছেন, স্থানীয় সরকার নির্দেশ লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারলে আবারও বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তা করা হবে। এদিকে মেয়র ডি ব্লাজিও বলেছেন, লোকজনকে কারাগারে পাঠানো কোনো সমাধান হতে পারে না।

১৪ জুন সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর কুমো বলেছেন, রাজ্যে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা এবং হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা একদম নিচে নেমে এসেছে। ধাপে ধাপে নগরী খুলে দেওয়ার নির্দেশ মানা হচ্ছে না অভিযোগ করে গভর্নর বলেছেন, এর মধ্যেই সামাজিক দূরত্বের নির্দেশ অমান্য করার ২ হাজার ৫০০ অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। স্থানীয় সরকার এ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে নগরী পুনরায় খুলে দেওয়ার নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে।

নিউইয়র্ক রাজ্যে আগের ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৬৫৭ জন হাসপাতালে ভর্তি ও ২৩ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়ে কুমো বলেন, পরিস্থিতির সহনীয় উন্নতি হয়েছে। নিউইয়র্কের লোকজনকে নাজুক করে ফেলা করোনাভাইরাস থেকে বেরিয়ে আসায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলা যাচ্ছে। এখন ব্যাপক টেস্টিং করা হচ্ছে। ১৩ জুন পরীক্ষায় লোকজনের মধ্যে মাত্র ১ দশমিক ৪ শতাংশের ভাইরাস পজিটিভ পাওয়া গেছে।

অ্যান্ড্রু কুমো বলেন, ম্যানহাটনের বহু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্দেশনা মানছে না। বার, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের যেসব নিয়মাবলি মানার কথা, সেসব মানছে না। এমন হলে নিউইয়র্ক আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। প্রয়োজনে ম্যানহাটন আবার লকডাউন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে। নগরীর বার ও রেস্টুরেন্টের লাইসেন্স বাতিল হতে পারে। তিনি বলেন, মানুষের জীবিন নিয়ে এমন খেলা বরদাশত করা হবে না।

গভর্নরের এমন বক্তব্যে খেপেছেন নগরীর মেয়র। ডেমোক্রেট দলের এই দুই নেতার মধ্যে এমনিতেই দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বৈরিতা আছে। মেয়র ডি ব্লাজিও বলেছেন, লোকজনকে কারাগারে পাঠানো কোনো সমাধান হতে পারে না ।

ব্লাজিও তাঁর মুখপাত্রের মাধ্যমে নিউইয়র্ক পোস্টকে দেওয়া বক্তব্যে বলেছেন, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য নগরীর লোকজন পুরো সপ্তাহান্ত কাজ করছে। মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। লোকজনকে কেনাকাটা করার পর স্থান ত্যাগ করতে বলা হচ্ছে। তিনি বলেন, গভর্নরের নির্দেশেই ব্যবসা–বাণিজ্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এখন লোকজনকে নির্দেশ না মানার জন্য জেলে পাঠানো বা তাঁদের জীবিকায় হাত দেওয়া এই পরিস্থিতিতে কোনো সমাধান হতে পারে না।