একের পর এক কোম্পানি দেউলিয়া হচ্ছে

করোনায় লকডাউনের কারণে বেকারত্বের সংকটে ভুগছে আমেরিকার জনগণ। এ কঠিন সময়েই পিৎজা হাট ও ওয়েন্ডিজের মতো বড় ফাস্ট ফুড কোম্পানি ব্যবসায়িক মন্দার কারণে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করতে যাচ্ছে।

আমেরিকার বড় ফাস্ট ফুড ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো করোনাকালে ডেলিভারি, টেক আউট করে বিক্রয় বেড়ে যাওয়ার কথা বলেছিল। এনপিসি ইন্টারন্যাশনালের তথ্যমতে, আমেরিকায় ১২০০ পিৎজা হাটের অপারেটর ও প্রায় ৪০০ ওয়েন্ডিজ চেইন দেউলিয়ার জন্য আবেদন করেছে। করোনাভাইরাসের কারণে হওয়া লকডাউন প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের ঋণ, ব্যয়বহুল শ্রম ও খাদ্য ব্যয়কে এর কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। অবশ্য পিৎজা হাট ও ওয়েন্ডিজ চেইনের এই অপারেটর কয়েক বছর ধরেই সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। মূলত পিৎজা হাট চেইন থেকে আয় কমে যাওয়ার কারণেই তাদের সমস্যায় পড়তে হয়।

সিএনএন বিজনেসে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চ্যাপটার ১১ নামে পরিচিত আইনগত দেউলিয়া প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা পর্যন্ত খাবারের দোকানগুলো সক্রিয় থাকবে বলে জানানো হয়েছে। কোম্পানির ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, এতে আমেরিকার ২৭টি অঙ্গরাজ্যের বিপুলসংখ্যক লোক কাজ হারাবে।

ওয়াইইউএম ব্র্যান্ডের মালিকানাধীন ফাস্ট ফুড চেইন পিৎজা হাটের ৭১০০ রেস্তোরাঁ বা দোকান রয়েছে আমেরিকায়। কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে এ রেস্তোরাঁগুলোতে বেচাকেনা এত কমে গেছে যে, তাদের পক্ষে আর নতুন করে শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।

এনপিসি হচ্ছে সর্বশেষ মার্কিন সংস্থা যারা বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালে দেউলিয়া ঘোষণার জন্য আবেদন করেছে। গত মার্চেই দেউলিয়া ঘোষণার জন্য আবেদন করেছিল নিউইয়র্ক নগরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডিন অ্যান্ড ডেলুসা। নিউজার্সি, ক্যালিফোর্নিয়া ও ফ্লোরিডায় ব্যবসা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাপেক্স পার্কস, ব্রাভো ও ব্রায়ো রেস্টুরেন্ট চেইনের প্যারেন্ট কোম্পানি ফুডফার্স্ট গ্লোবাল হোল্ডিংস, কাপড়ের ব্র্যান্ড ট্রু রিলিজিয়ন অ্যাপারেল, চেইন মুভি থিয়েটার সিএমএক্স সিনেমাস, রুবি’স কস্টিউম কোম্পানি, আমেরিকাজুড়ে সাত শতাধিক জিমের মালিক ও পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান গোল্ড’স জিম, শত বছরের পুরোনো ডিপার্টমেন্ট স্টোর নাইম্যান মার্কাস, স্টেজ স্টোরস, হার্টজ করপোরেশনসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান এ আবেদন করেছে। এ তালিকায় রয়েছে চাকি ই চিজের মূল সংস্থা, জিএনসি, টুয়েন্টি ফোর ফিটনেস, জে ক্রু-এর মতো প্রতিষ্ঠানও। এদের সবাই গত দু মাসে এমন দেউলিয়া ঘোষণার মামলা দায়ের করছে। করোনাভাইরাসে নাকাল আমেরিকার ব্যাপক জনগোষ্ঠী এখন কর্মহীন। পুনরায় কাজে ফিরে যেতে হলে কী করণীয় এ নিয়ে নিশ্চিত নয় লোকজন। এতগুলো কোম্পানি দেউলিয়া হওয়ার পর কোম্পানির কর্মীদের কী হবে, করোনাকালে কোথায় কাজ পাবে—এসব প্রশ্ন এক বিরাট অনিশ্চয়তার জন্ম দিয়েছে।