আমেরিকায় পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা দুশ্চিন্তায়

করোনাভাইরাসের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসন্ন সেমিস্টারে সব ক্লাস অনলাইনে যাবে, সেসব প্রতিষ্ঠানের বিদেশি শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে পারবেন না। ট্রাম্প প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের পর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশ থেকে দেশটিতে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এমনকি যাঁদের পড়তে যাওযার কথা ছিল, তাঁরাও অনিশ্চয়তায় আছেন।

নাম প্রকাশে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইনি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়ুয়া এক বাংলাদেশি প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর শেষ পর্যায়ে আছেন। আগস্টে শুরু হওয়া ফল সেমিস্টারে পিএইচডি শুরু করতে যাচ্ছেন। ওই সিদ্ধান্তের পর তাঁদের মতো অনেকেই দুশ্চিন্তায় আছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সহযোগিতার মনোভাব দেখিয়ে যাচ্ছে। অনানুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে,  তাঁরা কিছু কোর্স অনলাইনে ও কিছু স্বশরীরে উপস্থিতির ভিত্তিতে করার চেষ্টা করছে। এ নিয়ে আলোচনাও চলছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট বিভাগ ৬ জুলাই জানিয়েছে, আসন্ন সেশনে (ফল সেমিস্টার) আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যায়, তবে ওই দেশে থাকা বিদেশি শিক্ষার্থীদের আমেরিকা ছাড়তে হবে। এ ছাড়া যাঁরা নতুন শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হতে যাবেন এবং সে কার্যক্রমও যদি অনলাইনে চলে, তাহলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা দেওয়া হবে না।

এ সিদ্ধান্তের পর একেবারে নতুনদের জন্য সমস্যাটি বেশি। গোপালগঞ্জের তারন আহসান বাংলাদেশের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে বিবিএ শেষ করে আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব আলাবামায় এমবিএ পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। গত মে থেকে তাঁর সেমিস্টার শুরুর কথা ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা শেষে সেটি সেপ্টেম্বর থেকে শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু করোনার কারণে এখনো ভিসা প্রক্রিয়াই শেষ করতে পারেননি। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এখন কী হবে, সেটাই তাঁর দুশ্চিন্তার বিষয়।

ইউনেসকোর সর্বশেষ তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে বছরে প্রায় ৬০ হাজার শিক্ষার্থী বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। সবচেয়ে বেশি যান মালয়েশিয়ায়। এরপর রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, কানাডা, ভারত ও জাপান। অন্য দেশেও বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নেভাদা থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে অন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি শুরু করতে যাওয়া একজন বাংলাদেশি নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, এ সিদ্ধান্তের পর তাঁরা দুশ্চিন্তায় আছেন।