কৌঁশুলিদের বিরুদ্ধে নারীদের হয়রানির অভিযোগ

নিউইয়র্কের বাংলাদেশি আমেরিকান কিছু ইমিগ্রেশন আইনজীবী বা তাদের সহকারীদের কাছে স্বদেশি নারীরা হেনস্তার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আর্থিক, দৈহিক বা মানসিকভাবে তাঁরা হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। আবার নানা ফাঁদে ফেলে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ এনেছেন পুরুষ মক্কেলও। এসব অভিযোগ এনে কয়েকজন ভুক্তভোগী আইনজীবী বা তাদের সহকারীদের বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন।

অ্যাসাইলাম বা আশ্রয় আবেদনসহ বিভিন্ন মামলায় সহযোগিতার জন্য আইনজীবীদের কাছে যান মক্কেলরা। আমেরিকায় নতুন আসার পর অনেকেই  দুর্বল অবস্থায় থাকেন। এ দেশের বা রাজ্যের আইনকানুন সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণাও থাকে না। নিজের ইমিগ্রেশনের আবেদনের মামলা চলায় নানাভাবে হয়রানির শিকার হওয়ার পরও চাইলেই পুলিশের কাছে অভিযোগ বা আইনের আশ্রয় নিতে  পারেন না। এ সুযোগে আইনজীবী বা তাদের সহকারীদের কেউ কেউ অভিবাসনপ্রত্যাশী বাংলাদেশি নারীদের দৈহিক, আর্থিক বা মানসিকভাবে হয়রানি করছেন। কথার ফাঁকে কৌশলে ব্যক্তিগত বিষয়গুলোও জেনে নেন। মামলা পরিচালনার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ফাঁদে ফেলে দ্বিগুণ/তিনগুণ অর্থ নেওয়ার পাঁয়তারা করেন। একই সঙ্গে নারী মক্কেলদের সঙ্গে জোর করে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ারও চেষ্টা করেন।

ব্রঙ্কসের পরিচিত মুখ এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে গ্রাহকের সঙ্গে জোর করে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ার অভিযোগ করেছেন এক নারী গ্রাহক। বর্তমানে তিনি ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। উকিল নোটিশ প্রদান করেছেন। নারী গ্রাহক জানান, আমি যখন তার অফিসে যাই কথা বলার ঘণ্টা খানিক পরে সে আমাকে অনৈতিক প্রস্তাব প্রদান করে এবং আমার হাত ধরে ফেলে। পরে আমি তার অফিস ত্যাগ করি।

জ্যাকসন হাইসের এক আইনজীবীর সহকারীর বিরুদ্ধেও একই রকম অভিযোগ উঠেছে। ওই নারী তাঁর স্বামীর কাছে অভিযোগ করে বলেন, তিনি আর এই আনজীবীর কাছে যাবেন না। ওই আইনজীবী একান্তে কথা বলার জন্য অফিসের দরজা লাগিয়ে দেন। তিনি মামলার অগ্রগতি জানতে চাইলে তখন আইনজীবী তাঁকে জড়িয়ে ধরেন এবং পিঠ চাপড়ে দেন। প্রায় সময় আইনজীবী তাঁর সঙ্গে এসব আচরণ করেন। মামলার ক্ষতি হবে মনে করে নীরবে সব সহ্য করেছেন তিনি।

ব্রুকলিনের এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ফাঁদে ফেল বেশি অর্থ আদায়ের অভিযোগ করেছেন ব্রঙ্কসে বসবাসরত মো. সুমন নামে এক বাংলাদেশি আমেরিকান। তিনি বলেন, আইনজীবীর সঙ্গে চুক্তিতে ছিল, গ্রিনকার্ড পাওয়া পর্যন্ত ২০ হাজার ডলার দেবেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি ওই আইনজীবী তাঁকে মামলার বেড়াজালে পেঁচিয়ে আরও পনেরো হাজার ডলার দাবি করেন। সুমন এ বিষয়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকাকে জানান।

জ্যাকসন হাইটসের আরও এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে জোর করে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই আইনজীবীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরই মধ্যেই পোস্ট দিয়েছেন ভুক্তভোগী। এ ঘটনা বাংলঅদেশি কমিউনিটিতে বেশ আলোচিত হচ্ছে।

এদিকে জ্যাকসন হাইটসের আরেক আইনজীবীর সহকারীর বিরুদ্ধ মামলা করা হয়েছে। অভিযোগে জানা যায়, ডলার কম দেওয়ায় মামলার শুনানিতে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী প্রয়োজনীয় নথিপত্র দাখিল না করায় রায় ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে চলে যায়।

ব্রুকলিনের মো. সুলতান আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলায় অবহেলার অভিযোগ এনে মামলাটি করেন। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। আইনজীবীর সহকারী একটি সমিতির পদেও বহাল আছেন।