আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের পক্ষে ১৮ অঙ্গরাজ্যে মামলা

ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

আমেরিকার কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সব বা অধিকাংশ ক্লাসে সশরীরে উপস্থিতি ও অনলাইন শিক্ষার্থীদের ভিসা সংক্রান্ত ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশনার বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। প্রশাসনের নির্দেশনাটি বাস্তবায়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে ১৮টি অঙ্গরাজ্য ও ডিসট্রিক্ট অব কলম্বিয়া।

অনলাইন ক্লাস হলে শিক্ষার্থীদের আমেরিকায় থাকার ভিসা দেওয়া হবে না বলে ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি এক নির্দেশনা জারি করে। এর ফলে প্রায় ১০ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থীকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

করোনাভাইরাস ছড়াতে শুরু করার পর মধ্য মার্চ থেকে আমেরিকায় লকডাউন শুরু হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে পড়ালেখা চালিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করে। অধিকাংশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘমেয়াদে অনলাইনে ক্লাস চালু করার প্রস্তুতি নেয়। হার্ভার্ডের মতো বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, ক্যাম্পাসে ৪০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী ফিরতে পারেন, কিন্তু ক্লাস অনলাইনেই হবে।

ট্রাম্প প্রশাসনের এমন নির্দেশ জারির পর হার্ভার্ডের পক্ষ থেকে প্রথমেই একটি মামলা দায়ের করা হয়। এর সঙ্গে এখন যোগ দিচ্ছে রাজ্যের সরকারগুলো। ফেডারেল আদালতে ১৩ জুলাই সোমবার দায়ের করা মামলায় ম্যাসাচুসেটস রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল ম্যুরা হেলি বলেন, ইমিগ্রেশন বিভাগের এমন সিদ্ধান্ত কেবল ফ্যাকাল্টি মেম্বার বা শিক্ষার্থীদেরই স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে না, পরিবারের লোকজনকেও ঝুঁকিতে ফেলবে।

নিউজার্সির অ্যাটর্নি জেনারেল গারবির গ্রোয়াল বলেন, প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন, অনৈতিক ও বেআইনি। এতে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে পড়াসহ তাদের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে। পাশাপাশি উচ্চশিক্ষার প্রয়াস ব্যহত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। কলোরাডো, কানেকটিকাট, ওয়াশিংটন ডিসি, ইলিনয়, ম্যারিল্যান্ড, মিশিগান, ম্যাসাচুসেটস, মিনেসোটা, নেভাদা, নিউ মেক্সিকোসহ ১৮টি অঙ্গরাজ্য এই মামলায় যোগ দিয়েছে।

নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিসিয়া জেমস ১৪ জুলাই এ নিয়ে আদালতে পৃথক একটি মামলা করেন। মামলায় বলা হয়েছে, পর্যাপ্ত সময় না নিয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের প্রতি যে নির্দেশ জারি করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নযোগ্য নয়। শিক্ষার্থীদের হয়রানি থেকে রক্ষার জন্য আদেশটির স্থগিতাদেশ চেয়ে আর্জি জানানো হয়েছে।

ইমিগ্রেশন বিভাগ প্রশাসনের এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে গেলে শুধু শিক্ষার্থীরাই বিপাকে পড়বে এমন নয়, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও নানামুখী সংকটে পড়বে। নিউজার্সির স্টেট ইউনিভার্সিটি রাটগার্টস থেকে জানানো হয়েছে, এ সিদ্ধান্তের ফলে ইউনিভার্সিটি ২০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।