প্রচারশিবিরের ম্যানেজারকে কৌশলে সরিয়ে দিলেন ট্রাম্প

ব্র্যাড পার্সকেল এখন প্রচার শিবিরে জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে থাকবেন। ছবি: রয়টার্স
ব্র্যাড পার্সকেল এখন প্রচার শিবিরে জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে থাকবেন। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের মাত্র সাড়ে তিন মাস আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সব জনমত জরিপেই পিছিয়ে পড়েছেন। অনেকটা আচমকাই তাঁর নির্বাচনী প্রচার ব্যবস্থাপক ব্র্যাড পার্সকেলকে সরিয়ে দিয়েছেন। নতুন প্রচার ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগ দিচ্ছেন খ্যাতিমান রিপাবলিকান কৌশলবিদ বিল স্টিফেন।

১৫ জুলাই সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রচারশিবির থেকে এ পরিবর্তনের কথা জানানো হয়েছে। সম্প্রতি ওয়াশিংটন পোস্ট–এ ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের নানা অব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনের প্রচার নিয়ে পার্সকেলের নানা উদ্যোগের সমালোচনা করা হয়।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিল স্টিফেনকে প্রচার ব্যবস্থাপক পদে পদোন্নতির কথা জানিয়েছেন। আগের প্রচার ব্যবস্থাপক ব্র্যাড পার্সকেলের প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, ব্র্যাড পার্সকেলও প্রচারশিবিরে জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে থাকবেন। ব্র্যাড ও স্টিফেন দুজনই ২০১৬ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে কাজ করেছেন উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, এবারের নির্বাচন অনেক সহজ হবে। জনমত জরিপ দ্রুত তাঁর পক্ষে বাড়ছে। দেশের অর্থনীতির দ্রুত উন্নতি হচ্ছে। করোনার ভ্যাকসিন চলে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের লোকজন নিরাপদ সড়ক ও কমিউনিটি চায় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
২০১৬ সালের নির্বাচনে ডিজিটাল প্রচারে ব্যাপক সাফল্যের জন্য ব্র্যাড পার্সকেলকে ব্যাপকভাবে কৃতিত্ব দেওয়া হয়। স্টিফেন নিউজার্সির গভর্নরের সঙ্গে কাজ করেছেন এবং ট্রাম্পের জাতীয় মাঠ পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর জামাতা ও উপদেষ্টা জেরাড কুশনারের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের পর ক্যাম্পেইন ম্যানেজারের এ পরিবর্তনের কথা সংশ্লিষ্টদের জানান।

জরিপ প্রধান যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমের এখনকার প্রতিদিনের জরিপে দেখা যাচ্ছে, জাতীয়ভাবে সম্ভাব্য ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেনের চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে আছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর সামনে রিপাবলিকান কনভেনশনসহ বড় বড় নির্বাচনী প্রচার রয়েছে। মঞ্চে নিজের মতো বাজিমাত করতে স্বছন্দ বোধ করেন ট্রাম্প। করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রিত না হওয়ায় এখনই বলা যাচ্ছে না, মাত্র তিন মাসের প্রচারে কতটা ঘুরে দাঁড়াবেন তিনি। যদিও তাঁর গোড়া শ্বেতাঙ্গ সমর্থকদের ঐক্যে রাখার জন্য অভিবাসনের কড়াকড়ি, দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্য নিজের কড়া অবস্থান, অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে—এসব ইস্যুকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। এর মধ্যে শীতের আগাম দিনগুলোতে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রিত হওয়ার আগে আবারও মাথা চাড়া দেওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, তা কেউ বলতে পারছে না। করোনা বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ অবস্থা এখন নাজুকই মনে করা হচ্ছে। অর্থনৈতিক মন্দা ও লোকজনের সমস্যা সামনের মাসগুলোতে আরও প্রকট হয়ে উঠবে, এমন আশঙ্কা বিরাজ করছে। দেশের অর্থনীতি পুরোদমে চালু হচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাচনের জন্য যেসব অঙ্গরাজ্যের ইলেকটোরাল ভোট অবশ্যই পেতে হবে, সেসব এলাকায়ও তাঁর জনমত এখন নিম্নগামী। দ্রুততার সঙ্গে প্রচার ম্যাজিকে নতুন ব্যবস্থাপক বিল স্টিফেন কী দেখাতে পারেন, তা এখন দেখার অপেক্ষায় ট্রাম্প সমর্থকেরা।