খুব আতঙ্ক নিয়ে বাসার কলবেল বাজালাম আমি। ‘কে?’ ভেতর থেকে চেঁচাল আমার স্ত্রী ইমা। ভয়ে ভয়ে বললাম, ‘আমি।’
‘তুই একা যে? ছাগল কোথায়?’ দরজা খুলে বলল ইমা।
‘ছাগল পেলাম না।’
‘মানে? দেশে এখন পর্যাপ্ত ছাগল রয়েছে। তুই পেলি না?’
‘না।’
‘ছাগল নাকি! তোকে বললাম, পাশের বাসার রিয়াদ ভাইকে জিজ্ঞেস করে যা।’
‘আরে, উনি হুট করে রেগে গেল। বললাম, ছাগল কোত্থেকে কিনেছেন? আপনার মতো একটা ছাগল কিনতে চাচ্ছি, সঙ্গে সঙ্গে গেল খেপে।’
হতাশ হয়ে বসে পড়ল ইমা। ডান হাত দিয়ে কপাল চাপড়ে বলল, ‘হায় রে কপাল’। বুঝলাম না, আমার ভুলটা কোথায়?
ইমার সঙ্গে গিয়ে একটা ছাগল কিনে ফেললাম। মানে, ইমাই কিনল। বাসার এত কাছে ছাগল পাওয়া যায় জানতামই না। ছাগলটাকে রিকশায় ওঠালাম। আমি যেই উঠতে যাব, অমনি ছাগলটা লাফ দিয়ে নেমে দিল দৌড়। ‘এই ধর, ধর!’ চিৎকার করে উঠল ইমা। সঙ্গে সঙ্গে খপ করে ওকে ধরে ফেললাম। ‘আরে, আমাকে না, ছাগলটাকে ধর!’ ধমক দিল ইমা।
‘কী করে ধরব? দৌড়ে চলে গেল তো।’ বলেই দেখি ইমা নেই। সে-ও ছুটেছে ছাগলের পেছনে। লোকজন দু ভাগ হয়ে গেছে—একদল তাকিয়ে আছে ছাগলের পেছনে ছুটতে থাকা ইমার দিকে, আরেক দল দেখছে আমাকে। আমি কোন দিকে তাকাব বুঝতে পারলাম না।
একটু পর ছাগলের দড়ি হাতে হাঁপাতে হাঁপাতে ফিরল ইমা। আশপাশ থেকে লোকজন বলল, ‘ম্যাডাম, আপনে তো সেই খেল দেখাইলেন। এত দ্রুত ছাগল ধরলেন কেমনে?’
ইমা আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘একটাকে আগে ধরেছিলাম তো, অভ্যাস আছে।’
বুঝলাম না, লোকজন আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে কেন?