‘মেয়েটাকে দরকার।’
আচমকা রেহনুমার এই কথায় অবাক হয়ে তাকায় শায়লা। নিজের সংসারের অশান্তির কথা বলছিল সে, আর নেওয়া যাচ্ছে না। ছেলেমেয়ে বড় হয়েছে, নিজেদেরও বয়স হয়েছে। এই বয়সে এসে হেলালের চারিত্রিক অধঃপতন শায়লাকে এলোমেলো করে দিয়েছে। লজ্জার মাথা খেয়ে সেই কষ্টের কথাগুলো বলছিল তার ইমিডিয়েট বস, বন্ধু-রেহনুমাকে। রেহনুমা এতক্ষণ যেন কিছুই শুনছিল না। হঠাৎ তার কথায় শায়লা বিব্রত, ‘আপা, ও রাস্তার মেয়ে। পয়সার বিনিময়ে—’
‘আমি দেখা করতে চাই।’
সন্ধ্যার পর রাস্তাটা বেশ ফাঁকা, কোনো জ্যাম নেই। এর আগেও সে রাতের রাস্তায় বের হয়েছে, ব্যাকুল চোখে ওদের খুঁজেছে, পায়নি। সেসব রাতে দ্রুত বাসায় ফিরে যেতে মন চাইত, ভয় হতো যদি কেউ বুঝে ফেলে। আজ গাড়িটা খুব দ্রুত চলছে। রেহনুমার মনে হচ্ছে, আরেকটু আস্তে চললেই ভালো হতো। এত তাড়াতাড়ি সে বাসায় পৌঁছাতে চায় না। পাশের সিটে বসে আছে মেয়েটা।
‘এক ঘণ্টার মধ্যে কাম সারতে হবে। দেরি হইলে আমার রেট কিন্তু—’
‘তুমি সময় নিয়ে চিন্তা করো না। শুধু একটু আদর করে—’
ড্রাইভার হর্ন দেয়, রেহনুমা থেমে যায়।
অর্ণবের দরজাটা একটু ঠেলে দিতেই ভেতর থেকে অর্ণব এসে মাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে থাকে। অর্ণব অস্থির। রেহনুমা পাশের মেয়েটাকে দেখিয়ে বলে, ‘আজ ও তোমাকে আদর করবে, বাবু।’
অর্ণব মেয়েটার দিকে তাকিয়ে হাসে।
‘বিউটিফুল লেডি, থ্যাংক ইউ মামা।’
অর্ণব খুশিতে লাফাতে লাফাতে নিজের বিছানায় চলে যায়। মেয়েটা রেহনুমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, ‘আপনার ছেলে!’
‘শরীরটা বড় হয়েছে, মনটা শিশুর মতো। তুমি যদি...’
মেয়েটা হালকা হেসে, ঘরের ভেতরে ঢুকে দরজা আটকে দেয়।
রেহনুমা দেয়ালে হেলান দেয়। তার শরীর ছেড়ে দেয়। ক্লান্ত চোখে তাকায় ফ্রেমে ঝুলে থাকা স্বামীর দিকে।
বসন্ত এসে গেছে, নিষিদ্ধ ফুলও আজ ফুটবে।