আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আশির দশকের শুরুতে রসায়নে সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করি। যে ঘটনা আমার পেশাজীবনের বাঁক বদল করে দিয়েছে, তা হলো আমার এমবিএ ডিগ্রি অর্জন।
১৯৮২ সালের ঘটনা। তখন আমার বড় ভাই আমাকে পরামর্শ দিয়ে বললেন, ‘রসায়নে পড়ে ভালো করেছ। এবার ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর (এমবিএ) করো, তাহলে পেশাজীবনে আরও ভালো করতে পারবে।’ এরপর আমার স্বামী আবদুল হক (ছদ্মনাম সিদ্ধার্থ হক) আমাকে বললেন, ‘তুমি যদি এমবিএ না পড়, তাহলে আমি পড়ব না।’
মূলত স্বামীর উৎসাহেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করি আমি। পরবর্তীকালে এই ডিগ্রি আমার পেশাজীবনে বেশ কাজে লেগেছে।
আমার বাবা প্রিয় দর্শন চৌধুরী ছিলেন চিকিৎসক। তিনি সব সময় উৎসাহ দিয়ে আমাকে বলতেন, ‘পেশাজীবনে তুমি বলার মতো কিছু হও।’
আমাদের দেশে মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েদের খুব অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে যায়। ফলে মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও আটকে যায় তারা। কিন্তু আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হলেও মা–বাবা চাইতেন, আমি যেন ভালোভাবে পড়াশোনা করি, ভালো ক্যারিয়ার গড়ে তুলি। এ বিষয়ে মা-বাবা দুজনেই উৎসাহ দিতেন।
বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে যখন আমি হলে থেকে পড়াশোনা করেছি, সে সময় মেয়েদের সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে হলে ফিরতে হতো। এসব দেখে আমার মনে হতো, এটি ছেলে-মেয়েদের মধ্যে বৈষম্যের নামান্তর। তখন থেকেই বদ্ধপরিকর ছিলাম, নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমার অর্থনৈতিক স্বাধীনতা থাকতে হবে। সব মিলিয়ে পরিবারের উৎসাহেই আমি আজ এত দূর।