আনোয়ার পাশাকে নিয়ে আরও কিছু তথ্য

নদী নিঃশেষিত হলে নিয়ে পূর্বলেখ পত্রিকায় হুমায়ুন আজাদের লেখা
নদী নিঃশেষিত হলে নিয়ে পূর্বলেখ পত্রিকায় হুমায়ুন আজাদের লেখা

২ মার্চ প্রথম আলোর ‘শিল্পসাহিত্য’ পাতায় আমার শিক্ষক এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ঔপন্যাসিক আনোয়ার পাশা ও তাঁর উপন্যাস রাইফেল রোটি আওরাত নিয়ে সময়োপযোগী আয়োজন করা হয়েছে। সে জন্য পত্রিকা কর্তৃপক্ষ অবশ্যই ধন্যবাদের দাবিদার। এই আয়োজনের অন্যতম লেখা হিসেবে ছাপা হয় শঙ্খ ঘোষের ‘নদী নিঃশেষিত হলে’ শিরোনামের রচনার নির্বাচিত অংশ।

এই রচনার দু-একটি পরিপূরক তথ্য পেশের জন্য প্রতিক্রিয়ামূলক এই চিঠি।

পাস করার পর ১৯৫৩ সালের ৮ ডিসেম্বর আনোয়ার পাশা মানিকচক হাই মাদ্রাসায় যোগ দেন। ওখানে তাঁর শিক্ষকতার মেয়াদ সোয়া তিন মাস। ১৯৫৪ সালের ১৫ মার্চ শিক্ষকতা শুরু করেন ভাবতা হাই মাদ্রাসায়। তিন বছর পর ১৯৫৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সাদি খান দিয়ার স্কুলে যোগ দেন। এখানে ছিলেন এক বছর।

১৯৫৩ সালে এমএ পাসের পর কলেজে চাকরির ব্যর্থ চেষ্টা করেন আনোয়ার পাশা। ১৯৫৮ সালে ২ মার্চ পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে এবং ১৯৬৬-এর ২২ এপ্রিল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হন।

সে বছর আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। আমাদের ছাত্রজীবনে আমাকে একবার তিনি বলেছিলেন, কলকাতা থেকে ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করে আসা-যাওয়ার দূরত্বে কোনো স্কুলে শিক্ষকতার পদ পেলেও তিনি অভিবাসী হতেন না।

যাহোক, শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন, নদী নিঃশেষিত হলে কাব্যটি ঢাকা থেকে ছাপা। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বইটি ১৩৭০ বঙ্গাব্দে কলকাতার স্টুডেন্টস লাইব্রেরি থেকে প্রকাশিত। আমার অনুরোধে আনোয়ার পাশার অন্যতম প্রিয় ছাত্র হুমায়ুন আজাদ ‘হৃদয়ের আঙিনা’ শীর্ষক একটি আলোচনা লেখেন আমারই সম্পাদিত সাহিত্যপত্র পূর্বলেখর (মাঘ ১৩৭৩) তৃতীয় সংখ্যায়।

বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তফা কামালের অনুরোধে আমি আনোয়ার পাশার যে ক্ষুদ্র জীবনী লিখেছিলাম (১৯৮৮), তাতে তাঁর ডায়েরি থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে দেখানো হয়েছে, তিনি কেন দেশ ত্যাগ করেন।

এমন আয়োজনের জন্য প্রথম আলোকে আবারও ধন্যবাদ।

ভূঁইয়া ইকবাল
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর, চট্টগ্রাম।